মদন (নেত্রকোণা) প্রতিনিধিঃ নেত্রকোণা মদন উপজেলায় কদমশ্রী দাখিল মাদ্রাসা’র সুপার এ.টি.এম. সাইফুল ইসলাম নিয়োগ কমিটির সদস্য হয়ে সুকৌশলে তার মেয়ে তানিয়া আক্তারকে নিজের প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়।
সভাপতি ও সুপারের যৌথ উদ্যোগে সহকারী শিক্ষক ওবাদুল হক জাহাঙ্গীরের সার্বিক সহযোগিতায় সুচতুর ভাবে নিরাপত্তা কর্মী মোঃ আনোয়ার হোসেনের কাছ থেকে ৫ লক্ষ এবং আয়া হাওয়া আক্তারের কাছ থেকে আরো ৫ লক্ষ টাকা গ্রহণের মাধ্যমে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে, মোঃ আনোয়ার হোসেনের ও হাওয়া আক্তারকে খুঁজ করেও সাক্ষাৎকার নেয়া সম্ভব হয়নি।
এছাড়াও সুপার ও সভাপতি এলাকার বিভিন্ন জনের কাজ থেকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ১৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার আভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা টাকার দাবিতে ১ ফেব্রুয়ারি মাদ্রাসায় উপস্থিত হলে, ম্যানেজিং কমিটির বাকি সদস্যগণ ও প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে ভুক্তভোগীদের আশ্বস্ত করে বলেন, সুপার সাহেব যদি এ ধরনের জঘন্য কাজে জড়িত থেকে থাকেন, সুপারের বিরুদ্ধে যা যা করনীয় কমিটি করবে। নিয়ম বহির্ভূত নিয়োগ বাতিলের দাবিতে কমিটি ও শিক্ষকদের উদ্যোগে গণস্বাক্ষর গ্রহণ করা হয়।
সরজমিনে গেলে জানা যায়, কদমশ্রী দাখিল মাদ্রাসা’র সুপার ২৭ জানুয়ারী নিয়োগ পরীক্ষার পর থেকে আর মাদ্রাসায় আসেনি। গা ঢাকা দিয়েছেন সভাপতিও। মোবাইল ফোনে কল দিয়েও তাদের পাওয়া যাচ্ছে না।
নিয়োগ কমিটির সদস্য শাহালম ইসলাম কাচন বলেন, সুপারের মেয়ে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে তা আমরা কেহই জানি না। সুপার আমাকে বলেছিল ডিজি’র লোকেরা চলে যাবে তাই স্বাক্ষর দিতে হবে। এটা যে নিয়োগ পরীক্ষার স্বাক্ষর তা আমি জানতাম না।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শফিকুল বারী বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। আবেদন পত্র যাচাই-বাচাইয়ের ক্ষেত্রে সুপার আমার সহযোগিতা নেয়নি। কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে যাকে নিয়োগ দেয়ার জন্য সুপারিশ করার হয়, তিনি যে সুপারের মেয়ে তা সুপার আমাদের কাছে গোপন করছে। আমি তার মেয়ের এমপিও সুপারিশ পত্রে স্বাক্ষর করবো না। এই অনিয়মের দায়-ভার সুপারকে নিতে হবে।
ডিজি’র প্রতিনিধি মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নাদিয়া মাহমুদ জানান, নিয়োগ কমিটির কোন সদস্যের নিকট আত্মীয়কে নির্বাচিত করা নিয়ম বহির্ভূত। কদমশ্রী দাখিল মাদ্রাসায় কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে যাকে নির্বাচিত করা হয়েছে, তিনি যে সুপারের মেয়ে তা সুপার আমাদের কাছে গোপন করেছেন। সুপারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কিনা জানতে চাইলে, তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং মোবাইল ফোন কেটে দেন।
মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহনূর রহমান(ভারপ্রাপ্ত) বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।