ঢাকা ০৬:৪৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এ বছর আমনের ফলন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে: কৃষি মন্ত্রণালয়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৩৭:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৩
  • ১০১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চলতি মৌসুমে প্রায় ৫০ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। চাল উৎপাদনের লক্ষামাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ কোটি ১০ লাখ টন।

বোরো আবাদের লক্ষ্যে দুই লাখ ৪১ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে দেশের হাওরাঞ্চলে বোরো আবাদ শুরু হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, সরকার খাদ্যশস্যের উৎপাদন নিশ্চিত করতে এবং আমদানি নির্ভরতা কমাতে কৃষিখাতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। সে লক্ষ্যে চলতি মৌসুমে বোরো আবাদে জমির আওতাও বাড়িয়েছে।

চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর হাইব্রিড, উফশী ও স্থানীয় জাতের ধান উৎপাদনের জন্য দুই লাখ ৪১ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের বীজতলার জন্য শূন্য দশমিক ৫৭৮ লাখ হেক্টর, উফশী জাতের জন্য এক লাখ ৮৩ হাজার এবং স্থানীয় জাতের ধানের বীজতলা তৈরির জন্য শূন্য দশমিক ০১১ লাখ হেক্টর জমি নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে দুই লাখ হেক্টর জমিতে তিন জাতের ধানের বীজতলা তৈরি করা হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে সারা দেশে মোট ৪৯ লাখ ৭৭ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের জন্য ধান আবাদ করা হবে ১৩ লাখ হেক্টরের বেশি, উফশী জাতের ধান ৩৬ লাখ হেক্টরের বেশি এবং স্থানীয় জাতের ধান আবাদ করা হবে শূন্য দশমিক ১৭৬ লাখ হেক্টর জমিতে।

গত ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৮ লাখ ৭২ হেক্টর জমিতে। আবাদ হয়েছে ৪৯ লাখ ৫১ হাজার হেক্টর জমিতে। গত বছর চালের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল দুই কোটি নয় লাখ টন। উৎপাদন হয়েছে দুই কোটি ১০ লাখ টন।

গত বছরের তুলনায় এ বছর বোরো আবাদে জমির পরিমাণ বেড়েছে পাঁচ হাজার ৬০০ হেক্টর। আর চালের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে দুই কোটি ১০ লাখ টন। যা গত বছরের তুলনায় এক লাখ টন বেশি।

হাওরাঞ্চলে পৃথক লক্ষ্যমাত্রা

চলতি  মওসুমে হাওরাঞ্চলের সাত জেলায় বোরোর পৃথক লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, সিলেট, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ লাখ ৬১ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে।

এর মধ্যে হাওরে রয়েছে চার লাখ ৩০ হাজার এবং নন-হাওর এলাকায় হচ্ছে দুই লাখ ৩১ হাজার হেক্টরের বেশি জমি। এবার হাওরে হাব্রিড জাতের ধান চাষ হবে এক লাখ ৯২ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে। উফশী জাতের ধান রোপণ হচ্ছে চার লাখ ৬৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। বাকি শূন্য দশমিক ০৩৮ লাখ হেক্টর জমিতে চাষ করা হচ্ছে স্থানীয় জাতের ধান। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, ইতিমধ্যে হাওরাঞ্চলে দ্রুতগতিতে বোরো আবাদ চলছে।

বোরো আবাদের বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, এবার আমরা জমি আবাদের পরিমাণ বাড়াতে চেষ্টা করেছি। একইসঙ্গে উচ্চ ফলনশীল জাত, হাইব্রিড এবং আগাম আসে এমন জাতের উপর গুরুত্ত্ব দিয়েছি। বিশেষ করে হাওরাঞ্চলের কৃষকদেরকে আগাম জাতের ধান চাষে উদ্বুদ্ধ করেছি।

তিনি বলেন, ইতিমধ্যে কৃষকদেরকে প্রণোদনা হিসেবে বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। বীজতলা তৈরিতে সহযোগিতা করা হয়েছে। কৃষকদেরকে আগাম জাতের বীজ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি হাওরাঞ্চলের কৃষকদেরকে নানাভাবে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে জাতে তারা অল্প পানি থাকতেই চারা রোপণ করে ফেলে। তাতে বর্ষার আগে আগে ফসল ঘরে তোলা যাবে।

ডিএই মহাপরিচালক আরও জানান, দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে লবণ সহিষ্ণু জাতের ধান। বিশেষ করে ৬৭ ও ৯৭ এবং হাইব্রিড জাতের ধান চাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।

চলতি মৌসুমে গত বছরের চেয়ে বেশি জমিতে বোরো আবাদ হচ্ছে জানিয়ে এই কর্মকর্তা আরও বলেন, আবাদের লক্ষ্যমাত্রাও বাড়ানো হয়েছে। কোনোরকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন হবে বলে আশা করেন তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

এ বছর আমনের ফলন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে: কৃষি মন্ত্রণালয়

আপডেট টাইম : ১২:৩৭:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৩

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চলতি মৌসুমে প্রায় ৫০ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। চাল উৎপাদনের লক্ষামাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ কোটি ১০ লাখ টন।

বোরো আবাদের লক্ষ্যে দুই লাখ ৪১ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে দেশের হাওরাঞ্চলে বোরো আবাদ শুরু হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, সরকার খাদ্যশস্যের উৎপাদন নিশ্চিত করতে এবং আমদানি নির্ভরতা কমাতে কৃষিখাতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। সে লক্ষ্যে চলতি মৌসুমে বোরো আবাদে জমির আওতাও বাড়িয়েছে।

চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর হাইব্রিড, উফশী ও স্থানীয় জাতের ধান উৎপাদনের জন্য দুই লাখ ৪১ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের বীজতলার জন্য শূন্য দশমিক ৫৭৮ লাখ হেক্টর, উফশী জাতের জন্য এক লাখ ৮৩ হাজার এবং স্থানীয় জাতের ধানের বীজতলা তৈরির জন্য শূন্য দশমিক ০১১ লাখ হেক্টর জমি নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে দুই লাখ হেক্টর জমিতে তিন জাতের ধানের বীজতলা তৈরি করা হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে সারা দেশে মোট ৪৯ লাখ ৭৭ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের জন্য ধান আবাদ করা হবে ১৩ লাখ হেক্টরের বেশি, উফশী জাতের ধান ৩৬ লাখ হেক্টরের বেশি এবং স্থানীয় জাতের ধান আবাদ করা হবে শূন্য দশমিক ১৭৬ লাখ হেক্টর জমিতে।

গত ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৮ লাখ ৭২ হেক্টর জমিতে। আবাদ হয়েছে ৪৯ লাখ ৫১ হাজার হেক্টর জমিতে। গত বছর চালের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল দুই কোটি নয় লাখ টন। উৎপাদন হয়েছে দুই কোটি ১০ লাখ টন।

গত বছরের তুলনায় এ বছর বোরো আবাদে জমির পরিমাণ বেড়েছে পাঁচ হাজার ৬০০ হেক্টর। আর চালের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে দুই কোটি ১০ লাখ টন। যা গত বছরের তুলনায় এক লাখ টন বেশি।

হাওরাঞ্চলে পৃথক লক্ষ্যমাত্রা

চলতি  মওসুমে হাওরাঞ্চলের সাত জেলায় বোরোর পৃথক লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, সিলেট, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ লাখ ৬১ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে।

এর মধ্যে হাওরে রয়েছে চার লাখ ৩০ হাজার এবং নন-হাওর এলাকায় হচ্ছে দুই লাখ ৩১ হাজার হেক্টরের বেশি জমি। এবার হাওরে হাব্রিড জাতের ধান চাষ হবে এক লাখ ৯২ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে। উফশী জাতের ধান রোপণ হচ্ছে চার লাখ ৬৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। বাকি শূন্য দশমিক ০৩৮ লাখ হেক্টর জমিতে চাষ করা হচ্ছে স্থানীয় জাতের ধান। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, ইতিমধ্যে হাওরাঞ্চলে দ্রুতগতিতে বোরো আবাদ চলছে।

বোরো আবাদের বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, এবার আমরা জমি আবাদের পরিমাণ বাড়াতে চেষ্টা করেছি। একইসঙ্গে উচ্চ ফলনশীল জাত, হাইব্রিড এবং আগাম আসে এমন জাতের উপর গুরুত্ত্ব দিয়েছি। বিশেষ করে হাওরাঞ্চলের কৃষকদেরকে আগাম জাতের ধান চাষে উদ্বুদ্ধ করেছি।

তিনি বলেন, ইতিমধ্যে কৃষকদেরকে প্রণোদনা হিসেবে বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। বীজতলা তৈরিতে সহযোগিতা করা হয়েছে। কৃষকদেরকে আগাম জাতের বীজ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি হাওরাঞ্চলের কৃষকদেরকে নানাভাবে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে জাতে তারা অল্প পানি থাকতেই চারা রোপণ করে ফেলে। তাতে বর্ষার আগে আগে ফসল ঘরে তোলা যাবে।

ডিএই মহাপরিচালক আরও জানান, দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে লবণ সহিষ্ণু জাতের ধান। বিশেষ করে ৬৭ ও ৯৭ এবং হাইব্রিড জাতের ধান চাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।

চলতি মৌসুমে গত বছরের চেয়ে বেশি জমিতে বোরো আবাদ হচ্ছে জানিয়ে এই কর্মকর্তা আরও বলেন, আবাদের লক্ষ্যমাত্রাও বাড়ানো হয়েছে। কোনোরকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন হবে বলে আশা করেন তিনি।