ঢাকা ০৭:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশে কৃষিতে নষ্ট হচ্ছে ১৫ হাজার মিলিয়ন ঘণ্টা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:৫২:৪৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২২
  • ১৩১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জলবায়ু পরিবর্তন বাংলাদেশের জন্য হুমকিস্বরূপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে বাড়ছে তাপমাত্রা। এই তাপমাত্রা বৃদ্ধি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চল থেকে বাংলাদেশে বেশি। যার বড় প্রভাব পড়ছে দেশের কৃষিখাতে। তাপমাত্রা বাড়ায় কৃষিখাতে ১৫ হাজার ৯৭০ মিলিয়ন ঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। সেই সঙ্গে বছরে প্রায় দুই মাস খরা যাচ্ছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্যাহত হচ্ছে খাদ্য উৎপাদন।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক জনস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেটের ‘কাউন্টডাউন-২০২২’ এর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য। মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন পরিবেশ অর্থনীতিবিদ ড. সৌরো দাশগুপ্ত। বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর শ্যামলীতে এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।

বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্য ও চিকিৎসায় নীতিনির্ধারণ এবং কর্মসূচি তৈরির ক্ষেত্রে প্রভাব রয়েছে ল্যানসেটের। তারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রতিষ্ঠানকে গবেষণা ও নীতি সহায়তা দিয়ে থাকে।

ল্যানসেটের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের দুটি বিষয় বড় করে উঠে এসেছে। যার একটি শ্রমিকদের নিয়ে আরেকটি খাদ্য নিরাপত্তা। এতে বলা হচ্ছে, তাপমাত্রা বাড়ায় বাংলাদেশের কৃষিখাতে ১৫ হাজার ৯৭০ মিলিয়ন ঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। যার প্রভাব বেশি পড়ছে শ্রমিকদের ওপর।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এই তাপমাত্রা বৃদ্ধি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় বাংলাদেশে অনেক বেশি। যা ভয়ানক। ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ যদি প্যারিস চুক্তি মেনে নিতে না পারে তাহলে ৭ শতাংশ নিরাপত্তাহীনতা বাড়

পরিবেশ অর্থনীতিবিদ ড. সৌরো দাশগুপ্ত বলেন, ১৯৮৬ থেকে ২০০৫- এই সময়ের তুলনায় ২০২১ সালে বাংলাদেশে গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রা বেড়েছে শূন্য দশমিক ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অথচ ২০০০ সালে এই বৃদ্ধির হার ছিল শূন্য দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ড. সৌরো দাশগুপ্ত আরও বলেন, ১৯৮৬ থেকে ২০০৫ বেজলাইনের তুলনায় ২০২১ সালে এসে দৈনিক ১২ জন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি মারাত্মক তাপমাত্রার শিকার হচ্ছেন। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশে ২০১২ থেকে ২০২১ সালে গড়ে প্রায় দুই মাস খরা হয়েছে, যা ১৯৫১ থেকে ১৯৬০ সালে গড়ে ৯ দিনের চেয়ে কিছুটা বেশি।

তাপজনিত মৃত্যুর বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০০ সাল থেকে ২০০৪ এবং ২০১৭ থেকে ২০২১- এ সময়ে বাংলাদেশে ৬৫ বছর বয়সীদের মধ্যে তাপজনিত মৃত্যুর হার বেড়েছে ১৪৮ শতাংশ।

এছাড়া তাপমাত্রা বাড়ার কারণে বাংলাদেশের কৃষি খাত ১৫ হাজার ৯৭০ মিলিয়ন সম্ভাব্য ঘণ্টা হারিয়েছে বলে প্রতিবেদনে উঠে আসে। এছাড়া নির্মাণশিল্পে তিন হাজার ৩০০ মিলিয়ন সম্ভাব্য ঘণ্টা ও উৎপাদনে দুই হাজার ৪০০ মিলিয়ন সম্ভাব্য ঘণ্টা হারিয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তাপমাত্রার কারণে ১৯৮১ থেকে ২০১০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে ভুট্টা ফলনের সম্ভাবনা ৩ দশমিক ১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। আর ধানের ফলনের সম্ভাবনা কমেছে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ।

এছাড়া উষ্ণতম দিনের সংখ্যা বাড়ার ফলে ১৯৮১ থেকে ২০১০ সালের তুলনায় বাংলাদেশে ২০২০ সালে মাঝারি বা গুরুতর খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা বেড়েছে। যা প্রায় ৬ শতাংশ। তবে বগুড়া এবং টাঙ্গাইলের মতো ছোট শহরে সবুজ স্থান বেশি হয়েছে। অন্যদিকে ঢাকা এবং খুলনার মতো বড় শহরগুলিতে কমেছে সবুজায়ন।

বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের মূলে দুটি বিষয়। একটি সমস্যা সৃষ্টি, আরেকটি সমাধান। আমরা সমস্যা সমাধানের চেয়ে সৃষ্টিটা অনেক বেশি করছি। এভাবে চলতে থাকলে বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা সম্ভব হবে না।

বিশুদ্ধ পানির বিষয়ে সতর্ক করে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের উত্তরে হিমালয় পর্বত, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। হিমালয়ের বরফ গলে পানি অন্যত্র যাচ্ছে, এতে দেশে সাময়িক বন্যা এবং দীর্ঘমেয়াদি বিশুদ্ধ পানির সংকট তৈরি হবে। এটি হলে হুমকির মুখে পরবে জীববৈচিত্র।

তিনি আরও বলেন, জনঘনত্বের কারণে বাংলাদেশে ২০ শতাংশ জমি কমে যাচ্ছে। শহরমুখী হচ্ছে মানুষ। ফলে চাপের মুখে পড়ছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। এজন্য কার্বন নিঃসরণ কমানো বেশি জরুরি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক জলবায়ু পরিবর্তন এবং উন্নয়নের (আইসিসিসিএডি) পরিচালক অধ্যাপক সেলিমুল হক। মূল বক্তা হিসেবে আরও ছিলেন লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের গ্রান্থাম রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক এবং কাউন্টডাউনে প্রধান প্রদায়ক অধ্যাপক এলিজাবেথ রবিনসন।

অনুষ্ঠানে প্যানেলিস্টদের মধ্যে ছিলেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ডক্টর আইনুন নিশাত, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জনস্বাস্থ্য ও তথ্যবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. তাজউদ্দিন সিকদার।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন শিশু স্বাস্থ্য গবেষণা ফাউন্ডেশনের পরিচালক ও বিজ্ঞানী ডা. সেঁজুতি সাহা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বাংলাদেশে কৃষিতে নষ্ট হচ্ছে ১৫ হাজার মিলিয়ন ঘণ্টা

আপডেট টাইম : ০১:৫২:৪৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জলবায়ু পরিবর্তন বাংলাদেশের জন্য হুমকিস্বরূপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে বাড়ছে তাপমাত্রা। এই তাপমাত্রা বৃদ্ধি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চল থেকে বাংলাদেশে বেশি। যার বড় প্রভাব পড়ছে দেশের কৃষিখাতে। তাপমাত্রা বাড়ায় কৃষিখাতে ১৫ হাজার ৯৭০ মিলিয়ন ঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। সেই সঙ্গে বছরে প্রায় দুই মাস খরা যাচ্ছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্যাহত হচ্ছে খাদ্য উৎপাদন।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক জনস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেটের ‘কাউন্টডাউন-২০২২’ এর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য। মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন পরিবেশ অর্থনীতিবিদ ড. সৌরো দাশগুপ্ত। বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর শ্যামলীতে এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।

বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্য ও চিকিৎসায় নীতিনির্ধারণ এবং কর্মসূচি তৈরির ক্ষেত্রে প্রভাব রয়েছে ল্যানসেটের। তারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রতিষ্ঠানকে গবেষণা ও নীতি সহায়তা দিয়ে থাকে।

ল্যানসেটের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের দুটি বিষয় বড় করে উঠে এসেছে। যার একটি শ্রমিকদের নিয়ে আরেকটি খাদ্য নিরাপত্তা। এতে বলা হচ্ছে, তাপমাত্রা বাড়ায় বাংলাদেশের কৃষিখাতে ১৫ হাজার ৯৭০ মিলিয়ন ঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। যার প্রভাব বেশি পড়ছে শ্রমিকদের ওপর।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এই তাপমাত্রা বৃদ্ধি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় বাংলাদেশে অনেক বেশি। যা ভয়ানক। ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ যদি প্যারিস চুক্তি মেনে নিতে না পারে তাহলে ৭ শতাংশ নিরাপত্তাহীনতা বাড়

পরিবেশ অর্থনীতিবিদ ড. সৌরো দাশগুপ্ত বলেন, ১৯৮৬ থেকে ২০০৫- এই সময়ের তুলনায় ২০২১ সালে বাংলাদেশে গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রা বেড়েছে শূন্য দশমিক ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অথচ ২০০০ সালে এই বৃদ্ধির হার ছিল শূন্য দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ড. সৌরো দাশগুপ্ত আরও বলেন, ১৯৮৬ থেকে ২০০৫ বেজলাইনের তুলনায় ২০২১ সালে এসে দৈনিক ১২ জন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি মারাত্মক তাপমাত্রার শিকার হচ্ছেন। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশে ২০১২ থেকে ২০২১ সালে গড়ে প্রায় দুই মাস খরা হয়েছে, যা ১৯৫১ থেকে ১৯৬০ সালে গড়ে ৯ দিনের চেয়ে কিছুটা বেশি।

তাপজনিত মৃত্যুর বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০০ সাল থেকে ২০০৪ এবং ২০১৭ থেকে ২০২১- এ সময়ে বাংলাদেশে ৬৫ বছর বয়সীদের মধ্যে তাপজনিত মৃত্যুর হার বেড়েছে ১৪৮ শতাংশ।

এছাড়া তাপমাত্রা বাড়ার কারণে বাংলাদেশের কৃষি খাত ১৫ হাজার ৯৭০ মিলিয়ন সম্ভাব্য ঘণ্টা হারিয়েছে বলে প্রতিবেদনে উঠে আসে। এছাড়া নির্মাণশিল্পে তিন হাজার ৩০০ মিলিয়ন সম্ভাব্য ঘণ্টা ও উৎপাদনে দুই হাজার ৪০০ মিলিয়ন সম্ভাব্য ঘণ্টা হারিয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তাপমাত্রার কারণে ১৯৮১ থেকে ২০১০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে ভুট্টা ফলনের সম্ভাবনা ৩ দশমিক ১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। আর ধানের ফলনের সম্ভাবনা কমেছে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ।

এছাড়া উষ্ণতম দিনের সংখ্যা বাড়ার ফলে ১৯৮১ থেকে ২০১০ সালের তুলনায় বাংলাদেশে ২০২০ সালে মাঝারি বা গুরুতর খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা বেড়েছে। যা প্রায় ৬ শতাংশ। তবে বগুড়া এবং টাঙ্গাইলের মতো ছোট শহরে সবুজ স্থান বেশি হয়েছে। অন্যদিকে ঢাকা এবং খুলনার মতো বড় শহরগুলিতে কমেছে সবুজায়ন।

বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের মূলে দুটি বিষয়। একটি সমস্যা সৃষ্টি, আরেকটি সমাধান। আমরা সমস্যা সমাধানের চেয়ে সৃষ্টিটা অনেক বেশি করছি। এভাবে চলতে থাকলে বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা সম্ভব হবে না।

বিশুদ্ধ পানির বিষয়ে সতর্ক করে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের উত্তরে হিমালয় পর্বত, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। হিমালয়ের বরফ গলে পানি অন্যত্র যাচ্ছে, এতে দেশে সাময়িক বন্যা এবং দীর্ঘমেয়াদি বিশুদ্ধ পানির সংকট তৈরি হবে। এটি হলে হুমকির মুখে পরবে জীববৈচিত্র।

তিনি আরও বলেন, জনঘনত্বের কারণে বাংলাদেশে ২০ শতাংশ জমি কমে যাচ্ছে। শহরমুখী হচ্ছে মানুষ। ফলে চাপের মুখে পড়ছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। এজন্য কার্বন নিঃসরণ কমানো বেশি জরুরি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক জলবায়ু পরিবর্তন এবং উন্নয়নের (আইসিসিসিএডি) পরিচালক অধ্যাপক সেলিমুল হক। মূল বক্তা হিসেবে আরও ছিলেন লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের গ্রান্থাম রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক এবং কাউন্টডাউনে প্রধান প্রদায়ক অধ্যাপক এলিজাবেথ রবিনসন।

অনুষ্ঠানে প্যানেলিস্টদের মধ্যে ছিলেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ডক্টর আইনুন নিশাত, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জনস্বাস্থ্য ও তথ্যবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. তাজউদ্দিন সিকদার।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন শিশু স্বাস্থ্য গবেষণা ফাউন্ডেশনের পরিচালক ও বিজ্ঞানী ডা. সেঁজুতি সাহা।