বিশ্বকাপ শুরুর আগে যদি কেউ বলতো মরক্কো বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলবে সেটি হয়তো সবাই তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিতেন। কিন্তু সেটি করিয়ে দেখিয়েছে মরক্কো। সেমিফাইনালে ফ্রান্সের কাছে হেরেছিল। এবার ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে ২-১ ব্যবধানে হেরে চতুর্থ হয়েই বিশ্বকাপ স্বপ্নযাত্রা শেষ করলো আফ্রিকান লায়ন্সরা।
মরক্কোর বিশ্বকাপ যাত্রাটা অতো সহজ ছিল না। বিশ্বকাপে গ্রুপ ‘এফ’-এ শক্তিশালী বেলজিয়াম, ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে একই গ্রুপে পড়েছিল তারা। সঙ্গে ছিল দীর্ঘদিন পর বিশ্বকাপ খেলতে আসা পরাক্রমশালী কানাডা। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে এই গ্রুপ থেকে শীর্ষ স্থান অর্জন করে মরক্কো।
প্রথম ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছিল তারা। পরের ম্যাচেই ফিফা র্যাং কিংয়ের দ্বিতীয় দল বেলজিয়ামকে ২-০ ব্যবধানে হারায় তারা। শেষ ম্যাচেও তারা কানাডাকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে শীর্ষ স্থান অর্জন করে।
দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেই মূলত মরক্কোর স্বপ্নযাত্রা শুরু হয়। কেননা এখানে তারা আরো শক্তিশালী দলগুলোকে নাকানিচুবানি খাইয়ে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় করে দেয়। প্রথমেই তারা দ্বিতীয় রাউন্ডে স্পেনকে টাইব্রেকারে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নেয়।
এরপর আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। যেখানে বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নে বিভোড় রোনালদোর পর্তুগালকে তারা অবিশ্বাস্যভাবে হারিয়ে দিয়ে প্রথম আফ্রিকান দল হিসেবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয়।
সেমিফাইনালেও তারা লড়াই করেছে চোখে চোখ রেখে। ফ্রান্সের মনে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিল আফ্রিকান সিংহরা। যদিও তারা ম্যাচে ২-০ ব্যবধানে হেরে যায় কিন্তু ভাগ্যের সহায়তা না থাকায় ম্যাচে তারা সেদিন গোল বঞ্চিত ছিল।
তৃতীয় নির্ধারণী শেষ ম্যাচটিতেও তারা দুর্দান্ত খেলে। কিন্তু ক্রোয়েশিয়ার কাছে ২-১ ব্যবধানে হেরে চতুর্থ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়। মরক্কো যা করে দেখিয়েছে তা আফ্রিকার সকল দেশের জন্য আজীবন অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। তাদের দেখেই এবার আফ্রিকানরা হয়তো বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন বুনবে। একদিন হয়তো সেটাও সত্যি হবে।