হাওর বার্তা ডেস্কঃ কাগজ সঙ্কট, কালির মূল্যবৃদ্ধি ও বিলম্বিত দরপত্রে ব্যাহত হচ্ছে পাঠ্যবই ছাপার কাজ। নতুন শিক্ষাবর্ষ ঘনিয়ে এলেও প্রাথমিকের বই ছাপার কাজ এখনো ৯৯ ভাগ বাকি। প্রায় একই পরিস্থিতি মাধ্যমিকের কয়েকটি শ্রেণির ক্ষেত্রেও। এমন বাস্তবতায় ‘বই উৎসবে’ ৩৫ শতাংশ বইয়ের জোগান দেয়া সম্ভব বলে জানিয়েছে মুদ্রণ শিল্প সমিতি। সঙ্কটের কথা স্বীকার করছে মন্ত্রণালয়ও।
এক যুগ ধরে বছরের প্রথম দিনেই বিনামূল্যে নতুন পাঠ্যবই পায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা। দেশজুড়ে উদযাপন করা হয় ‘বই উৎসব’।
কিন্তু এবারের চিত্র ভিন্ন। বৈশ্বিক বাজারে কাগজ-কালির মূল্য বৃদ্ধি এবং ডলারের দাম বাড়ায় যথাসময়ে কাঁচামাল আমদানির এলসি খুলতে পারেননি কাগজ উৎপাদনকারীরা। সঙ্গে যোগ হয়েছে লোডশেডিং।
এমন বাস্তবতা সসত্ত্বেও নতুন বছরের জন্য জাতীয় শিক্ষাক্রম পাঠ্যপুস্তুক বোর্ডকে প্রস্তুত করতে হবে ৩৪ কোটির বেশি পাঠ্যবই। এরমধ্যে প্রাক-প্রাথমিকের প্রায় ৬৪ লাখ, প্রাথমিকের ১০ কোটি, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠির মাতৃভাষায় রচিত প্রায় ২ লাখ। মাধ্যমিক স্তরের বই ছাপতে হবে আরো প্রায় ২৪ কোটি।
গেলো বছরগুলোতে এ সময়ে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ বই ছাপা হয়ে পৌঁছে যেতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি ঠিক উল্টো। আগামী শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিকের পাঠ্যবই ছাপার কাজ কেবল শুরু হয়েছে। ছাপার কাজ শেষে জেলা হয়ে ইউনিয়ন পর্যায়ে এই বই কবে পৌঁছাবে, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চিয়তা।
মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম বলেন, যে গতিতে ছাপার কাজ চলছে তাতে শিক্ষার্থীদের কাছে নতুন বছরের শুরুতে সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশ বই পৌঁছানো সম্ভব হবে। মার্চ-এপ্রিলের আগে সব বই পাবে না শিক্ষার্থীরা।
সঙ্কটের কথা স্বীকার করছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তুক বোর্ডও। তবে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ-সংখ্যক বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছানোর চেষ্টা থাকবে বলে জানিয়েছেন বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম।
আর শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলছেন, কাগজ জোগাড় করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। এছাড়া দরপত্র আহ্বানে দেরি হওয়ার কথাও স্বীকার করলেন তিনি।
সেইসঙ্গে বছরের প্রথম দিনে বই উৎসবের মাধ্যমে এবারও শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন পাঠ্যবই পৌঁছে দেয়া সম্ভব হবে বলে আশা শিক্ষামন্ত্রীর।