হাওর বার্তা ডেস্কঃ সাংবাদিকেরা সংবাদের সোর্স (তথ্যের উৎস) কাহারো সাথে প্রকাশ করতে বাধ্য নয় বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। স্বপ্রণোদিত হয়ে জারি হওয়া এক রুল নিষ্পত্তি করে দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপিতে এমন অভিমত দিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি ।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইজারুল হক আকন্দ দুইজনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের এ রায় রোববার (২৩ অক্টোবর) প্রকাশিত হয়েছে।
এর আগে চলতি বছরের ২১ জুন বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল নিষ্পত্তি করে এ রায় দিয়েছিলেন।
আদালতের রায়ে বলেন, এটা বলতে দ্বিধা নেই যে, সাংবাদিকদের তথ্যের উৎস (সোর্স) প্রকাশ না করার ক্ষেত্রে আইন সুরক্ষা দিয়েছে।
২০২১ সালের ২ মার্চ ‘২০ কোটিতে প্রকৌশলী আশরাফুলের দায়মুক্তি! দুর্নীতি দমনে দুদক স্টাইল’ শিরোনামে দৈনিক ইনকিলাবে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়ে ছিলো ।
সেই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনা হলে স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করে দুদকের নথিপত্র তলব করেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি প্রতিবেদককে তার তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করতে নির্দেশ দেন আদালত।
আদালতে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ইনকিলাবের প্রতিবেদনকে ‘মাফিয়া জার্নালিজম’ বলে প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আবেদন করেন। অন্যদিকে ইনকিলাবের প্রতিবেদকের পক্ষের আইনজীবী সংবিধানে থাকা সাংবাদিকতার স্বাধীনতা ও বাকস্বাধীনতার বিষয় এবং অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় সোর্স প্রকাশ না করার নীতির কথা আদালতে তুলে ধরেন।
শুনানির এক পর্যায়ে হাইকোর্ট বলেন, এটি আদালত অবমাননার মামলা নয়। আর সাংবাদিকের কোনো সংবাদের বিষয়ে অভিযোগ থাকলে আগে প্রেস কাউন্সিলের শরণাপন্ন হতে পারেন। সাংবাদিকের সংবাদের সোর্স আমরা জানতে চাইনি।
পরে রুল নিষ্পত্তি করে রায় দেন হাইকোর্ট।
ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি আজ (২৩ অক্টোবর) প্রকাশিত হয়েছে।
রায়ে আদালত বলেন, সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলে দেওয়া আছে। গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। এটা গণতন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আদালত বলেন, আধুনিক বিশ্বে জানার অধিকার সবারই আছে।
রায়ে আদালত আরও বলেন, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন রক্ষায় সাংবাদিকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তবে হলুদ সাংবাদিকতা গ্রহণযোগ্য ও সমর্থনযোগ্য নয় বলেও উল্লেখ করে হাইকোর্ট।