ঢাকা ০৫:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেল ভারতে দেখানো সম্ভব হবে : জয়শংকর

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:৩৫:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুন ২০১৫
  • ৩০৪ বার
বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে ভারত বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্ঠান প্রচার করা সম্ভব হবে।
আজ এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ভারতের বিদেশে সচিব এস জয়শংকর বলেন, ভারত বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্ঠান প্রচার করতে আগ্রহী। কিভাবে দেখানো যায় সে বিষয় একটি সমাঝোতায় পৌঁছার জন্যে কাজ চলছে। তিনি বলেন, এটি ঠিক বাংলাদেশের টেলিভিশনের দর্শক রয়েছে।
ভারতের পার্লামেন্টে স্থলসীমা চুক্তি অনুমোদনের পরপরই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে ঐতিহাসিক সফর বলে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, এ সফর ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় করবে।
তিনি বাংলাদেশে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ব্যস্ততম কর্মসূচি তুলে ধরে বলেন, সকালে ঢাকা পৌঁছেই জাতীয় স্মৃতিসৌধ এবং বঙ্গবন্ধু ভবনে যাবেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন, রাতে তাঁর সম্মানে দেয়া নৈশভোজে যোগ দেবেন পরদিন রাষ্ট্রপতি সাথে সাক্ষাৎ করবেন। বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দর সাথে সাক্ষাৎ করবেন। তিনি রামকৃষ্ণ মিশন ও ঢাকেশ্বরী মন্দীরেও যাবেন। দুই প্রধানমন্ত্রী যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলন করবেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যতিক্রমধর্মী প্রতিবেশী। সে দেশে গণতন্ত্র শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছে। আমরা বাংলাদেশের সাথে সুদৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।
জয়শংকর বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবারের সফরের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে ল্যান্ড বাউন্ডারি এগ্রিমেন্ট। তিনি বলেন, এই চুক্তি বাস্তবায়ন হলে সীমান্ত সমস্যাসহ অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তিনি বলেন, সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের জন্যে মডালিটি তৈরি করা হবে। এরপর চুক্তি বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে। সীমান্ত চুক্তি অনুমোদনে এবং সমুদ্রসীমা সমস্যার সমাধানের মধ্যদিয়ে দীর্ঘদিনের সম্যসার সমাধান হয়ে গেছে বলে তিনি জানান। এর ফলে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন, চোরাচালান ও মানবপাচার রোধ করে নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে।
জয়শংকর বলেন, এ সফরকালে যোগযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন নিয়ে বিস্তারিত অলোচনা হবে। সড়ক, রেল, কোস্টাল শিপিংসহ যোগাযোগের বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী কলকাতা-ঢাকা- আগরতলা-ঢাকা-আগরতলা বাস সার্ভিসের উদ্বোধন করবেন। টেলিকমিউনিকেশন ইন্টারনেট সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা হবে।
তিনি বাংলাদেশকে দেয়া লাইন ক্রেডিট-এর কথা উল্লেখ করে বলেন, ১৫টি প্রকল্পে ৮৬০ মিলিয়ন ডলার দেয়া হয়েছিলো যার মধ্যে সাতটি প্রকল্প বাস্তবাযন হয়েছে এবং ৭টি বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এ সফরে এসব প্রকল্প আরো বাড়ানো হবে। গত প্রকল্পের বেশির ভাগ ছিল রেল যোগাযোগ বিষয়ক। এবার আরো ব্যাপকভাবে প্রসারিত করে রেল, রোড, কোস্টাল, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য-প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন প্রকল্পে ভারতের ঋণ প্রদান নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। তবে এবারের লাইন অব ক্রেডিট কত হবে তা তিনি বলেননি।
জয়শংকর বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ সহযোগিতা প্রদানের কথা উল্লেখ করে বলেন, ইতোমধ্যেই বাংলাদেশকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দেয়া হয়েছে। এই সফরের মধ্যদিয়ে তা আরো বাড়ানো হবে। বিশেষ করে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে বিদ্যুৎ দেয়া হবে। এ ছাড়া পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশে ডিজেল সরবরাহ করা হবে। তিনি বলেন, দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য সংস্কৃতি ও পর্যটনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে এই সফরে।
বাংলাদেশের সাথে অর্থিৈনতিক সম্পর্ক বাড়ানোর বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে ভারতীয় বিনিয়োগ বাড়বে। ভারতের সঙ্গে বিশেষ অর্থনৈতিক জোন খোলা হবে। ভারতের বিনিয়োগ বাড়লে ভারত-বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস পাবে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ায় ভারতের বেসরকারি খাত সে দেশে বিনিয়োগ করার জন্যে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, নদ-নদীর পানি, নদী ব্যবস্থাপনা নিয়েও আলোচনা হবে।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশের পণ্য কিভাবে ভারতে প্রবেশ করতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা চলেছে। তিনি বলেন, অনেক বাধা রয়েছে যা দূর করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেল ভারতে দেখানো সম্ভব হবে : জয়শংকর

আপডেট টাইম : ০৫:৩৫:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুন ২০১৫
বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে ভারত বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্ঠান প্রচার করা সম্ভব হবে।
আজ এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ভারতের বিদেশে সচিব এস জয়শংকর বলেন, ভারত বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্ঠান প্রচার করতে আগ্রহী। কিভাবে দেখানো যায় সে বিষয় একটি সমাঝোতায় পৌঁছার জন্যে কাজ চলছে। তিনি বলেন, এটি ঠিক বাংলাদেশের টেলিভিশনের দর্শক রয়েছে।
ভারতের পার্লামেন্টে স্থলসীমা চুক্তি অনুমোদনের পরপরই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে ঐতিহাসিক সফর বলে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, এ সফর ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় করবে।
তিনি বাংলাদেশে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ব্যস্ততম কর্মসূচি তুলে ধরে বলেন, সকালে ঢাকা পৌঁছেই জাতীয় স্মৃতিসৌধ এবং বঙ্গবন্ধু ভবনে যাবেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন, রাতে তাঁর সম্মানে দেয়া নৈশভোজে যোগ দেবেন পরদিন রাষ্ট্রপতি সাথে সাক্ষাৎ করবেন। বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দর সাথে সাক্ষাৎ করবেন। তিনি রামকৃষ্ণ মিশন ও ঢাকেশ্বরী মন্দীরেও যাবেন। দুই প্রধানমন্ত্রী যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলন করবেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যতিক্রমধর্মী প্রতিবেশী। সে দেশে গণতন্ত্র শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছে। আমরা বাংলাদেশের সাথে সুদৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।
জয়শংকর বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবারের সফরের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে ল্যান্ড বাউন্ডারি এগ্রিমেন্ট। তিনি বলেন, এই চুক্তি বাস্তবায়ন হলে সীমান্ত সমস্যাসহ অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তিনি বলেন, সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের জন্যে মডালিটি তৈরি করা হবে। এরপর চুক্তি বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে। সীমান্ত চুক্তি অনুমোদনে এবং সমুদ্রসীমা সমস্যার সমাধানের মধ্যদিয়ে দীর্ঘদিনের সম্যসার সমাধান হয়ে গেছে বলে তিনি জানান। এর ফলে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন, চোরাচালান ও মানবপাচার রোধ করে নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে।
জয়শংকর বলেন, এ সফরকালে যোগযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন নিয়ে বিস্তারিত অলোচনা হবে। সড়ক, রেল, কোস্টাল শিপিংসহ যোগাযোগের বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী কলকাতা-ঢাকা- আগরতলা-ঢাকা-আগরতলা বাস সার্ভিসের উদ্বোধন করবেন। টেলিকমিউনিকেশন ইন্টারনেট সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা হবে।
তিনি বাংলাদেশকে দেয়া লাইন ক্রেডিট-এর কথা উল্লেখ করে বলেন, ১৫টি প্রকল্পে ৮৬০ মিলিয়ন ডলার দেয়া হয়েছিলো যার মধ্যে সাতটি প্রকল্প বাস্তবাযন হয়েছে এবং ৭টি বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এ সফরে এসব প্রকল্প আরো বাড়ানো হবে। গত প্রকল্পের বেশির ভাগ ছিল রেল যোগাযোগ বিষয়ক। এবার আরো ব্যাপকভাবে প্রসারিত করে রেল, রোড, কোস্টাল, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য-প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন প্রকল্পে ভারতের ঋণ প্রদান নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। তবে এবারের লাইন অব ক্রেডিট কত হবে তা তিনি বলেননি।
জয়শংকর বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ সহযোগিতা প্রদানের কথা উল্লেখ করে বলেন, ইতোমধ্যেই বাংলাদেশকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দেয়া হয়েছে। এই সফরের মধ্যদিয়ে তা আরো বাড়ানো হবে। বিশেষ করে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে বিদ্যুৎ দেয়া হবে। এ ছাড়া পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশে ডিজেল সরবরাহ করা হবে। তিনি বলেন, দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য সংস্কৃতি ও পর্যটনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে এই সফরে।
বাংলাদেশের সাথে অর্থিৈনতিক সম্পর্ক বাড়ানোর বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে ভারতীয় বিনিয়োগ বাড়বে। ভারতের সঙ্গে বিশেষ অর্থনৈতিক জোন খোলা হবে। ভারতের বিনিয়োগ বাড়লে ভারত-বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস পাবে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ায় ভারতের বেসরকারি খাত সে দেশে বিনিয়োগ করার জন্যে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, নদ-নদীর পানি, নদী ব্যবস্থাপনা নিয়েও আলোচনা হবে।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশের পণ্য কিভাবে ভারতে প্রবেশ করতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা চলেছে। তিনি বলেন, অনেক বাধা রয়েছে যা দূর করার চেষ্টা করা হচ্ছে।