হাওর বার্তা ডেস্কঃ অন্তহীনে অন্নদান, /বস্ত্র বস্ত্রহীনে /তৃষ্ণাতুরে জল দান, ধর্ম ধর্মহীনে, /মূর্খজনে বিদ্যাদান, বিপন্নে আশ্রয় /রোগীরে ঔষধ দান, ভয়ার্তে অভয় /গৃহহীনে গৃহ দান, অন্ধরে নয়ন, /পীড়াতে আরোগ্য দান, শোকার্তে সান্ত্বনা, /স্বার্থশূন্য হয় যদি এ দ্বাদশ দান; /স্বর্গের দেবতা নহে দাতার সমান।’
রজনীকান্ত সেনের এই দ্বাদশ দানের মধ্যেই প্রকৃত মানবসেবার পরিচয় ও পদ্ধতি ফুটে উঠেছে, যা মানবসত্তার ক্ষেত্রে চারিত্রিক দৃঢ়তায় ব্যক্তিত্ব দেশবরণ্য শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ আসাদুল হক।
এসব সদ্গুণের অধিকারী অধ্যক্ষ আসাদুল হক মা মাটি ও মানুষকে ভালোবাসার মধ্য দিয়ে সারাবাংলা বিশেষ করে তার সংসদীয় এলাকার জনমনে বিপুল সমাদৃত সত্যনিষ্ঠ, যোগ্য, বলিষ্ঠ নেতৃত্বদানকারী দক্ষ সংগঠক, বিশিষ্ট সমাজসেবক, পরোপকারী, জনদরদী ও সাদা মনের মানুষ হিসেবে।
বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী মানুষ গড়ার এই আদর্শ কারিগর আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পুণ্যক মনোনয়নে দেশ গড়ার পুণ্যতোয়া সুযোগ লাভের জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন তিনি।
অধ্যক্ষ আসাদুল হকের বাড়ি কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর ইউনিয়নের মুড়িকান্দি গ্রামে। যার সংসদীয় আসনের নাম কিশোরগঞ্জ-৩, গঠিত হয়েছে করিমগঞ্জ ও তাড়াইল উপজেলা নিয়ে।
প্রসঙ্গত, জনমতের ভিত্তিতে এ আসন থেকে ১৯৮৮ ও ১৯৯১ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। এতে চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠাই টার্গেটে পড়ে ১৯৮৮ সালে নির্বাচনের মাত্র একদিন আগে সামরিক জান্তা জেনারেল এরশাদ কারারুদ্ধ করে রাখেন তাকে। তাছাড়া ভোটাররা এলাকার উন্নয়নে এবং জনগণের সমস্যার সমাধানে সরকারি কিংবা সরকার জোটের প্রার্থীকে অধিক বিবেচনায় রাখলেও ১৯৯১ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে হাড্ডাহাড্ডি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তার অনুকূলে বিপুল জনপ্রিয়তা জানান দেন তিনি।
তখন থেকেই অধ্যক্ষ আসাদুল হক জনতার কাতারে। কালক্রমে জনপ্রিয়তা আজ তুঙ্গে। এলাকায় অর্ধশতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার এই কারিগর রাস্তাঘাটসহ উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড, জনসেবায় সর্বদা পাশে থাকা এবং গণসংযোগে জনতার তরে নিজেকে সপে দেওয়ায় পরিগণিত হয়েছেন নয়নমণিতে।
সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য শক্তিশালী রাজনৈতিক দলের কার্যকরী সফল নেতৃত্ব আবশ্যকীয়। সাধারণভাবে নেতৃত্ব বলতে বুঝায় কোনো রাজনৈতিক দলের নেতার গুণাবলিকে। সঠিক নেতৃত্ব একটি রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় সফলতার চাবিকাঠি। রাষ্ট্রীয় সমাজ ব্যবস্থায় সাধারণত তিন শ্রেণির নেতৃত্ব দেখা যায় — ১. ব্যবস্থাপকের নেতৃত্ব বা প্রশাসনিক নেতৃত্ব। ২. সম্মোহনী নেতৃত্ব বা রাজনৈতিক নেতৃত্ব। এবং ৩. বিশেষজ্ঞসুলভ নেতৃত্ব, যা অধ্যক্ষ আসাদুল হকের অস্থিমজ্জায় মিশে আছে।
সমাজ জীবনের প্রতিটি স্তরে, রাষ্ট্রে, সমাজে, পরিবারে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, কল-কারখানায়, অফিস-আদালতে, খেলার মাঠে — সর্বক্ষেত্রে নেতৃত্বের অবদান অনস্বীকার্য। একমাত্র সঠিক নেতৃত্বই পারে সমাজ ও রাষ্ট্রের বিশাল কর্মকান্ডকে সুষ্ঠু ও সুচারুরূপে সুসম্পন্ন করে সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিতে।
সে লক্ষ্যে অধ্যক্ষ আসাদুল হক ১৯৬৮ সালে ছাত্র জীবনেই জনসেবাকে পাথেয় করে রাজনীতিতে জড়ান ছাত্রলীগের সক্রিয় রাজনীতিতে। যুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে গণ-মানুষের সুখে-দুঃখে, আপদে-বিপদে পাশে থাকা ছাড়াও দেশমাতৃকার টানে মুজিব বাহিনীর সদস্য হিসেবে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে নাম লেখান এক গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসেও। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন উপলক্ষে গঠিত কমিটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ডেপুটি লিডারেরও নেতৃত্ব দিয়েছেন অধ্যক্ষ আসাদুল হক।
তিনি শিক্ষাপাঠ চুকিয়ে শিক্ষকতার মহান পেশায় ব্রত হয়ে শিক্ষার্থীদের হৃদয়ে আদর্শের প্রতীক হয়ে উঠেন যেমন, তেমনি চার দশক ধরে শিক্ষকদের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষা এবং শিক্ষার মানোন্নয়নে আন্দোলন ছাড়াও বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির (বাকশিস) সভাপতির পাশাপাশি জাতীয় শিক্ষক-কর্মচারী ফ্রন্টের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে সফল নেতৃত্বের স্বাক্ষর রাখেন। কর্ণধার ছিলেন বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের জাতীয় বেতন স্কেলসহ যাবতীয় অর্জনে অকুতোভয় নেতৃত্বে। জোট সরকারের আমলে আন্দোলন-সংগ্রামে দুঃসাহসিক প্রত্যক্ষ নেতৃত্বের দরুন পেশাজীবী সমন্বয় ও শিক্ষক সংগঠনের ব্যানারে ছাত্র ও পেশাগত জীবনে পেশাজীবী ও সাধারণ মানুষের অন্তরে আসন গেড়ে সক্ষম হন আস্থার জায়গাটিতে বসতে।
অধ্যক্ষ আসাদুল হক ২০১৯ সালে রাজধানী ঢাকার তেজগাঁও মহিলা কলেজের অধ্যক্ষের পদ থেকে অবসরে গিয়ে ঘরকুনো না থেকে মানবকল্যাণে নিজেকে ব্যাপৃত রাখেন অধিক সক্রিয় রাজনীতি ও জনসেবামূলক কর্মকান্ডকে ঘিরে। দায়িত্ব পালন করেন দু’মেয়াদে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের সদস্য সচিব হিসেবে। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্বুদ্ধ বঙ্গবন্ধুর আর্দশের পরীক্ষিত লড়াকু এই সৈনিকের সভাপতির নেতৃত্বে বর্তমানে বঙ্গমাতা পরিষদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্র ও বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর সংগঠন আজ গতিশীল।
আদর্শের জায়গা থেকে অগাধ শ্রদ্ধা ও অন্তহীন ভালোবাসায় একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে স্বদেশের রাজপথ কাঁপানো শুধু নয়, জনমত গঠনে গণমাধ্যমে ঝড় তুলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন দেশের সীমানা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলেও। করেন লবিস্টের কাজও। তারই নেতৃত্বে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সহায়তায় এগিয়ে আসতে আবেদন জানানো হয় আইএলও, ইউনেস্কো ও ইআইসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোকে। যে পথ ধরে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে দেশ আজ অনেকটা কলঙ্কমুক্ত।
তিনি নিজেকে খুঁজে পান বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দর্শনের মাঝেও। বিশ্বস্বীকৃত মানবতার মাতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমি এমন রাজনীতি চাই যেন গরিব মানুষ উত্তরণের পথ পায়, তাঁদের জীবনমানের পরিবর্তন আসে।’
সমাজের উন্নতির মূলে যেসব বিষয় গুরুত্বপূর্ণ সেগুলোর মধ্যে শিক্ষা, সময়োপযোগী চেতনা, অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং সাংস্কৃতিক বিকাশ অন্যতম। এসব বিষয়ে পরার্থে জীবন উৎসর্গ করার মাধ্যমে অধ্যক্ষ আসাদুল হকের স্থান জনমনে হয়ে উঠেছে ধ্রুবতারার মতোই উজ্জ্বল।
জনসেবায় রাজনৈতিক দলের ভূমিকা অনস্বীকার্য। রাজনৈতিক একটি সংঘবদ্ধ শক্তি। এঁরা দুর্গতদের সাহায্যে প্রয়োজনীয় ভূমিকা গ্রহণ করে থাকেন। তবে এঁদের মধ্যে অনেকের ধারণা জনসেবার মাধ্যমে মানুষের কল্যাণ কোনো চিরস্থায়ী সমাধান নয়। সমাজের বুকে দীর্ঘদিনের যে হৃদয়হীন অন্যায়-অত্যাচারের যে পাহাড় সঞ্চিত হয়েছে, তার সামাজিক-অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সর্বাত্মক সমাধানের জন্য তাঁরা দেখেন বিপ্লবের স্বপ্ন। কতক রাজনৈতিক দল ও রাজনৈতিক নেতা জনসেবাকেই জীবনের একমাত্র মহৎ সেবাব্রত মনে করেন না। ক্ষমতা দখল এবং অধিকৃত ক্ষমতা বজায় রাখার দিকেই তাঁদের প্রাণান্ত প্রয়াস। ফলে দুর্গত, বিপন্নের সেবাতেও দেখা যায় সংকীর্ণতার মনোভাব। অনেক সময় জনসেবা হয়ে ওঠে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সিদ্ধ করার ছদ্মবেশ মাত্র।
কিন্তু এক্ষেত্রে অধ্যক্ষ আসাদুল হক ভিন্নত পোষণ করেন। তার মতে যতদিন সমাজে দারিদ্র্য, শোষণ, বৈষম্য থাকবে ততদিন জনসেবার প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। যে মানুষ আপনার আত্মার মধ্যে অন্যের আত্মাকে ও অন্যের আত্মার মাঝে আপনার আত্মাকে জানে, সে-ই জানে সত্যকে। নিঃস্বার্থ জনসেবা মানুষের এক দুর্লভ গুণ। মানুষের জীবনে যদি মহৎ সেবাব্রতের পূর্ণ দীক্ষা থাকে, যদি দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ে সেই মহাপ্রাণতার অঙ্গীকার; তবেই এই ধূলার ধরণীতে একদিন প্রেমের দেবতার হবে অভিষেক। যেখানে কপটতা-ভন্ডামির ছদ্মবেশ, যেখানে আত্মসর্বস্ব ধ্যান-ধারণার মানুষ কুণ্ঠিত, যেখানে হিংসার উম্মত পৃথিবী, সেই হিংস্র প্রলাপের মধ্যে এই সহায়সম্বলহীন আর্ত, দুর্গতদের সেবাই যেন হয় আমার শেষ পূণ্যবাণী।
তিনি জানান, যে জাতিতে খাঁটি জনসেবকের সংখ্যা যত বেশি সে জাতির ঐক্য, জাতীয়তাবোধ এবং উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়েছে তত বেশি — এ রকম বিশ্বাসেই সততা ও নিষ্ঠার সাথে নিরলসভাবে নিজ এলাকায় জনকল্যাণমূলক কাজ এবং গণসংযোগ করে যাচ্ছেন। সেসঙ্গে নিচ্ছেন সমৃদ্ধির প্রচেষ্টা।
উড়বে পাল নৌকার
হাওয়াযুগ’ পেরিয়ে ‘স্বর্ণযুগে’ প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দিয়ে গেছেন একটি স্বাধীন দেশ — বাংলাদেশ তার নাম। বিশ্বের জঘন্যতম পঁচাত্তরের আগস্ট ট্রাজেডির ২১ বছর দেশটি ছিল বেনিফিয়ারিদের করতলে। ত্যাগের অপার মহিমায় ১৯৯৬ সাল হতে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার ক্যারিশমাটিক নেতৃত্বে চার বার রাষ্ট্র ক্ষমতার মধ্যে বর্তমানে টানা তৃতীয় বার ক্ষমতায় রয়েছে আওয়ামী লীগ। চার দশকে বহুবার প্রাণনাশের বন্ধুর পথ ডিঙিয়ে একুশ বছরের স্বল্পোন্নত দেশটিকে উন্নীত করেছেন উন্নয়নশীল দেশে। মানবতার মাতা কেবল নয়, শেখ হাসিনা ত্রাতায় বিশ্বে স্বীকৃত হয়েছেন গভীর অনুপ্রেরণাকারী রাষ্ট্রনায়ক হিসেবেও।
মুজিববর্ষ পেরোলেই বেজে উঠবে জাতীয় সংসদীয় নির্বাচনী সানাই। অলরেডি তা বেজেও উঠেছে শূন্য হওয়া সংসদীয় আসনগুলোতে, মনোনয়নের প্রার্থীতার মধ্য দিয়ে। আর প্রার্থী মনোনয়নে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার চমকও লক্ষণীয়। বাঘাবাঘাদের বদলে বেছ বেছে পরীক্ষিত নেতাদের করেছেন নৌকার প্রার্থী, যা সামনের সংসদীয় নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে ঘটেছে দলটির দৃষ্টিভঙ্গিরই বহির্প্রকাশ। এমনই অভিমত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
জনসেবায় যারা দলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন তাদের চেয়ে অনুপ্রবেশকারীরা অনেক ক্ষমতাধর হয়ে উঠেছেন। অরাজনৈতিক গোষ্ঠীর কেউ কেউ প্রেশার গ্রুপ হিসেবে কাজ করে দলকে কব্জায় এনে নিজেরাই দলে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন। তাদের অনেকে এমন সব কান্ড করছেন যে, দলের গোটা ভাবমূর্তিটাই পড়েছে প্রশ্নের মুখে।
ফলশ্রুতিতে হালে এ দেশের রাজনীতির অন্তহীন দুর্নীতি আর ক্রমবর্ধমান অন্যায়প্রবণতার সঙ্গেই মানুষ পরিচিত হয়ে উঠেছে। রাজনীতিতে ঢুকছে অজ্ঞাত-অবৈধ অর্থ, তৈরি হচ্ছে প্রভাবশালী গোষ্ঠী; তাতে গণতান্ত্রিক রাজনীতির কাঠামোটির প্রচন্ড আঘাত শুধু নয়, জনমতের ওপর বিরাট ধাক্কা এবং বড় দাগের ক্ষতিরও সম্মুখীন হচ্ছে।
রাজনীতি একটা আলাদা শিক্ষা দাবি রাখে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কেবল নয়, দরকার যথার্থ রাজনৈতিক শিক্ষা। জনসম্পৃক্ত বহুবিধ কর্মকান্ডের সঙ্গে রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমেই সেই শিক্ষা অর্জিত হয়। তা থেকে প্রতিনিয়ত যাচাই করতে হয় কোথায় ভুল হচ্ছে, কোথায় দলের নাম ভাঙিয়ে কে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, সন্ত্রাস ও সহিংসতা করছে, মানুষের ওপর অবিচার-জুলুম করছে, অনিয়ম-দুর্নীতি করছে। ভুলে গেলে চলবে না, রাজনীতি নিজেই একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। রাজনীতিকরাও ভুলের ঊর্ধ্বে নয়, করেন অন্যায়-অপরাধ। কিন্তু সেই ভুল, অন্যায়-অপরাধের প্রতিকার থাকা চায় দলের ভেতরকার প্রাতিষ্ঠানিকতায়।
আধুনিক গণতন্ত্রে প্রতিটি স্বীকৃত রাজনৈতিক দলের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হলো নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে রাজনৈতিক ক্ষমতা অর্জন করা। এই লক্ষ্যে নির্বাচনের সময় তার প্রার্থী মনোনয়ন করে এবং সেসব প্রার্থীর সমর্থনে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালায়।
বাংলাদেশের নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে প্রার্থীদের সাত ধরনের তথ্য দিতে হয় — যাতে মামলা, পেশা, প্রার্থী ও তার ওপর নির্ভরশীলদের আয়ের উৎস, সম্পদ এবং দায়দেনার বিবরণী, ঋণ ইত্যাদি বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়। এসব তথ্য জনসমক্ষে প্রচারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো যাতে নির্বাচনে সৎ, যোগ্য ও দক্ষ প্রার্থী মনোনয়ন দেয় এবং ভোটাররা যাতে প্রার্থী সম্পর্কে জেনে-শুনে-বুঝে ভোট দিতে পারেন।
রাজনৈতিক দলগুলো অনেক জরিপ এবং যাচাই-বাছাই করে জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন দেয়। দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে নির্বাচনে জিততেই হবে — এ মনমানসিকতা কাজ করে বলে প্রার্থী মনোনয়নে ধনাঢ্য ব্যবসায়ী, প্রভাবপ্রত্তিশালী, চলচ্চিত্র ও ক্রিড়া তারকারাই প্রধান্য পেয়ে থাকেন — শিক্ষাবিদ নয়; এমনটাই প্রত্যক্ষ করা গেছে।
সংবিধান অনুযায়ী সংসদ সদস্যদের ভূমিকা আইন প্রণয়ন ও আইনের দেখভাল করা হলেও আমাদের দেশে সংসদ সদস্যরা উন্নয়ন কর্মকান্ডেই মূলত যুক্ত ও ব্যস্ত থাকেন। আইন প্রণয়নে ঘুরেফিরে আইন প্রণয়নে দক্ষ ও অভিজ্ঞ মাত্র কয়েকজনই জড়িত এবং সক্রিয় থাকেন। স্থানীয় ভোটাররাও সব পর্যায়ের প্রতিনিধির কাছে স্থানীয় উন্নয়ন প্রত্যাশা করেন। জনগণের চাহিদা ও প্রয়োজনের কারণে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংসদ সদস্য সবারই অগ্রাধিকার থাকে স্থানীয় উন্নয়ন কর্মকান্ডে। স্থানীয় জনগণও এমন প্রার্থী খুঁজেন, যারা প্রভাবশালী ও সরকারি-বেসরকারি সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগিয়ে তাদের এলাকার এবং জনগণের সমস্যার সমাধান করতে পারেন। সেক্ষেত্রে ভোটারেরা সরকারি বা বেসরকারি জোটের প্রার্থীকেই বিবেচনায় নেয়। রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা দল কর্তৃক মনোনীত ব্যক্তিকেই ভোট দিয়ে থাকেন। যোগ্য প্রার্থী কিংবা রাজনীতিকে কলুষমুক্ত করার বিষয়টি তাদের ততটা বিবেচ্য নয়। আবার রাজনীতি নিরপেক্ষ সচেতন যে জনগোষ্ঠী আছে, তাদের একটা বড় অংশ জেনে-শুনে-বুঝে ভোট ক্ষমতা প্রয়োগ করেন। তাই দল যাতে জেনে-শুনে-বুঝে প্রার্থী মনোনয়ন দেয় শুভার্থীরা এ আশা করতেই পারেন।
মনোনয়ন পক্রিয়ায় শেখ হাসিনার ‘রূপকল্প ২০৪১’ লক্ষ্য পূরণে প্রয়োজন যোগ্যপ্রার্থীর, যাতে জাতীয় সংসদও হবে আলোকিত। সততায়,শিক্ষা-দীক্ষায়, মেধায়, মন-মননে, জনসম্পৃক্তায় সেবাব্রতে ক্লিন ইমেজের প্রিয়মুখ শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ আসাদুল হক কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলে পাল উড়বে নৌকায় এবং মাঝি হয়ে রূপকল্পের কূলে ভিড়াতেও নৌকার নোঙরে সক্ষম হবে — এমনই আত্মপ্রত্যয়ী নৌকাযাত্রীদের।
এ সংসদীয় আসনটি দীর্ঘদিন ধরে জোটের তকমায় নির্বাচিত জাতীয় পার্টির একচেটিয়া আধিপত্যে হৃতরাজ্যে পরিণত হয়েছে। জাতীয় পার্টির বেশুমার বিরাগভাজনে পড়ে অস্তিত্বে সংকটে পড়েছে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনগুলো। হৃতরাজ্য পুনরুদ্ধারে নেতা-কর্মী-সমর্থক ও সাধারণ ভোটার তথা আপামরসাধারণ আশার আলো দেখছে অধ্যক্ষ আসাদুল হককে ঘিরে। #