বিএনপির কোনো নেতা কথা বললে হয় রাষ্ট্রদ্রোহ, আর প্রধানমন্ত্রীর ছেলে কথা বললে হয় দেশপ্রেমিক-রিজভী

রোববার সকালে রিজভী এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, “সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা বলেছেন মেন্দি সাফাদি নিজেই। একজন ব্যক্তির সঙ্গে বিএনপির কোনো নেতা কথা বললে হয় রাষ্ট্রদ্রোহ, আর প্রধানমন্ত্রীর ছেলে কথা বললে হয় দেশপ্রেমিক। এই হচ্ছে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি, এই হচ্ছে ভোটারবিহীন সরকারের বিচার।”

ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির সদস্য মেন্দি সাফাদির সঙ্গে বৈঠকের একাধিক ছবি গণমাধ্যমে আসার পর বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করেছে পুলিশ।

এরইমধ্যে গত শুক্রবার সাফাদির একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে বিবিসি বাংলা অনলাইন। সেখানে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ছেলে জয়ের সঙ্গে ওয়াশিংটন ডিসিতে সাক্ষাৎ হয়েছে বলে সাফাদি দাবি করেছেন।

তার ওই দাবি নাকচ করে জয় রোববার সকালে ফেইসবুকে লিখেছেন, সাফাদির সঙ্গে কোথাও তার বৈঠক হয়নি।

আগেরদিন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ দাবি করেন, সাফাদি-জয়ের বৈঠকের খবর বিএনপির সাজানো নাটক।

তার ওই বক্তব্য নাকচ করে রিজভী বলেন, “জয়-সাফাদির বৈঠকের বিষয়টি গত তিন দিন ধরে গণমাধ্যম ও সামাজিক গণমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে। তখন আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এই বৈঠকের খবরকে নাটক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলছেন। তার বেলা হয় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, আর বিএনপির একজন নেতার ভারতে একজন নেতার দেখা হয়েছে, কুশলাদি বিনিময় হয়েছে- সেটি হয়ে যায় রাষ্ট্রদ্রোহ।

“একটি সরকার কত হীন হতে পারে, একটি সরকার কত ধরনের ষড়যন্ত্রকারী ও চক্রান্তকারী হতে পারে, সেটির দৃষ্টান্ত এই ঘটনা।”

সাফাদির সঙ্গে বৈঠকের জন্য আসলামকে গ্রেপ্তারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “একজন নিরীহ মানুষকে মিথ্যা ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। আর যখন এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে থলের বিড়াল বের হয়ে গেল তখন নাটক বলে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে- এটা গ্রহণযোগ্য হবে না। জনগণ তা বিশ্বাস করে না।”

সাফাদি-জয় ‘বৈঠক’ নিয়ে সরকার কী ব্যবস্থা নেয় বিএনপি তা দেখার অপেক্ষায় জানিয়ে তিনি বলেন, “সাফাদি মিথ্যা বলবেন আর জয় সাহেব সত্য কথা বলবেন, তা জনগণ বিশ্বাস করে না।”

সংবাদ সম্মেলনে কারাবন্দি রাজশাহীর মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে নিয়ে কথা বলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রিজভী।

তিনি বলেন, বুলবুল উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেলেও অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের ‘অ্যাডভোকেটস অন রেকর্ড’ কারা কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠিয়ে তার মুক্তির পথ রুদ্ধ করে রেখেছে।

“অনেক দিন ধরে বুলবুল সাহেব কারাগারে। উচ্চ আদালতে জামিন পেলেও মুক্তি পাচ্ছেন না। আমরা মনে করি, ওই চিঠি আইনের বরখেলাপ। এটি আদালত অবমাননার শামিল। বিচার বিভাগের যে স্বাধীনতা তার ওপর হস্তক্ষেপ করছেন সরকার।”

নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, আবদুল আউয়াল খান উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর