ঢাকা ১২:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কিরগিজস্তান-তাজিকিস্তান সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৯৪

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৫৩:০৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ১৯৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দিনে দিনে বেড়েই চলেছে কিরগিজস্তান-তাজিকিস্তানের মধ্যে সীমান্তে সংঘর্ষ। এই সংঘর্ষে এখন পযর্ন্ত মৃত্যের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৪ জনে, যা আগের চেয়ে অনেকটাই বেশি। এতে কিরগিজস্তান বাটকেনের দক্ষিণ সীমান্ত অঞ্চলে ৫৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে এবং তাজিকিস্তান বলছে ৩৫ জন নিহত হয়েছে।

বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) এই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। তবে গত শুক্রবার যুদ্ধবিরতি হলেও রোববার রাতে প্রাণহানি বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় একশ’ জনে। সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে কিরগিজস্তান-তাজিকিস্তানের মধ্যে এটিই সবচেয়ে মারাত্মক সংঘর্ষ।

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশ দুটি প্রায়ই সীমান্ত সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে থাকে। গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ইউএসএসআর-এর (সোভিয়েত ইউনিয়নের) পতনের পর থেকে উভয় দেশের মধ্যে সীমানা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দুই দেশের প্রতি তাদের মতপার্থক্য শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন। মধ্য এশিয়ার এই দুই দেশের মধ্যে ১ হাজার কিমি (৬০০ মাইল) সীমান্ত রয়েছে। এই সীমান্তের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি বিতর্কিত। অবশ্য উভয় দেশের সাথেই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে রাশিয়ার। আর তাই মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেওয়ার পাশাপাশি সহিংসতা বন্ধ করার জন্য ‘জরুরি’ ব্যবস্থা নিতে আগেই আহ্বান জানায় মস্কো।

এর আগে ২০২১ সালে উভয় দেশের মধ্যে নজিরবিহীন লড়াইয়ে প্রায় ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। গত বুধবার তিনটি পৃথক ঘটনায় কমপক্ষে দুইজন নিহত হওয়ার পর এই দুই দেশের মধ্যে বিরোধ ছড়িয়ে পড়ে। আর এই সর্বশেষ সংঘর্ষে প্রায় ১০০ জনের প্রাণহানি হয়েছে। যা আগের লড়াইয়ের প্রাণহানির প্রায় দ্বিগুণ।

তাজিকিস্তান রোববার বলেছে যে, তার ৩৫ জন নাগরিক নিহত হয়েছে, বুধবার সশস্ত্র সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর এটি প্রথম সরকারী মৃত্যুর সংখ্যা। ফেসবুক পোস্টে তাজিক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ২৫ জন আহত হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বেসামরিক নাগরিকও রয়েছে।

এদিকে, কিরগিজস্তান রোববার বলেছে যে, বাটকেনের দক্ষিণ সীমান্ত অঞ্চলে ৫৯ জন মারা গেছে এবং ১৪৪ জন আহত হয়েছেন। দেশটির জরুরি অবস্থা বিষয়ক মন্ত্রী আরও জানান, চার কিরগিজ সেনা নিখোঁজ রয়েছেন।

জানা গেছে, কিরগিজস্তান ১৯ সেপ্টেম্বরকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করেছে।

গণমাধ্যম জানাচ্ছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রোববার তাজিকের প্রেসিডেন্ট ইমোমালি রাখমন এবং কিরগিজ প্রেসিডেন্ট সাদির জাপারভের সঙ্গে ফোনালাপ করে উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

ক্রেমলিনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পুতিন দুই নেতাকে ‘একচেটিয়াভাবে শান্তিপূর্ণ, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক উপায়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পরিস্থিতির সমাধান করার আহ্বান জানিয়েছেন।’

সহিংসতার শুরুর জন্য উভয় পক্ষই একে অপরকে দায়ী করছে। কিরগিজস্তান সংঘর্ষে নিহতদের জন্য সোমবার দেশটিতে জাতীয় শোক ঘোষণা করেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

কিরগিজস্তান-তাজিকিস্তান সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৯৪

আপডেট টাইম : ১১:৫৩:০৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দিনে দিনে বেড়েই চলেছে কিরগিজস্তান-তাজিকিস্তানের মধ্যে সীমান্তে সংঘর্ষ। এই সংঘর্ষে এখন পযর্ন্ত মৃত্যের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৪ জনে, যা আগের চেয়ে অনেকটাই বেশি। এতে কিরগিজস্তান বাটকেনের দক্ষিণ সীমান্ত অঞ্চলে ৫৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে এবং তাজিকিস্তান বলছে ৩৫ জন নিহত হয়েছে।

বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) এই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। তবে গত শুক্রবার যুদ্ধবিরতি হলেও রোববার রাতে প্রাণহানি বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় একশ’ জনে। সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে কিরগিজস্তান-তাজিকিস্তানের মধ্যে এটিই সবচেয়ে মারাত্মক সংঘর্ষ।

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশ দুটি প্রায়ই সীমান্ত সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে থাকে। গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ইউএসএসআর-এর (সোভিয়েত ইউনিয়নের) পতনের পর থেকে উভয় দেশের মধ্যে সীমানা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দুই দেশের প্রতি তাদের মতপার্থক্য শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন। মধ্য এশিয়ার এই দুই দেশের মধ্যে ১ হাজার কিমি (৬০০ মাইল) সীমান্ত রয়েছে। এই সীমান্তের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি বিতর্কিত। অবশ্য উভয় দেশের সাথেই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে রাশিয়ার। আর তাই মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেওয়ার পাশাপাশি সহিংসতা বন্ধ করার জন্য ‘জরুরি’ ব্যবস্থা নিতে আগেই আহ্বান জানায় মস্কো।

এর আগে ২০২১ সালে উভয় দেশের মধ্যে নজিরবিহীন লড়াইয়ে প্রায় ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। গত বুধবার তিনটি পৃথক ঘটনায় কমপক্ষে দুইজন নিহত হওয়ার পর এই দুই দেশের মধ্যে বিরোধ ছড়িয়ে পড়ে। আর এই সর্বশেষ সংঘর্ষে প্রায় ১০০ জনের প্রাণহানি হয়েছে। যা আগের লড়াইয়ের প্রাণহানির প্রায় দ্বিগুণ।

তাজিকিস্তান রোববার বলেছে যে, তার ৩৫ জন নাগরিক নিহত হয়েছে, বুধবার সশস্ত্র সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর এটি প্রথম সরকারী মৃত্যুর সংখ্যা। ফেসবুক পোস্টে তাজিক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ২৫ জন আহত হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বেসামরিক নাগরিকও রয়েছে।

এদিকে, কিরগিজস্তান রোববার বলেছে যে, বাটকেনের দক্ষিণ সীমান্ত অঞ্চলে ৫৯ জন মারা গেছে এবং ১৪৪ জন আহত হয়েছেন। দেশটির জরুরি অবস্থা বিষয়ক মন্ত্রী আরও জানান, চার কিরগিজ সেনা নিখোঁজ রয়েছেন।

জানা গেছে, কিরগিজস্তান ১৯ সেপ্টেম্বরকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করেছে।

গণমাধ্যম জানাচ্ছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রোববার তাজিকের প্রেসিডেন্ট ইমোমালি রাখমন এবং কিরগিজ প্রেসিডেন্ট সাদির জাপারভের সঙ্গে ফোনালাপ করে উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

ক্রেমলিনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পুতিন দুই নেতাকে ‘একচেটিয়াভাবে শান্তিপূর্ণ, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক উপায়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পরিস্থিতির সমাধান করার আহ্বান জানিয়েছেন।’

সহিংসতার শুরুর জন্য উভয় পক্ষই একে অপরকে দায়ী করছে। কিরগিজস্তান সংঘর্ষে নিহতদের জন্য সোমবার দেশটিতে জাতীয় শোক ঘোষণা করেছে।