ঢাকা ০৭:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাত্র একশ টাকায় অ্যাম্বুলেন্স সেবা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৫৬:১০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ মে ২০১৬
  • ৩২৪ বার

স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সরকার দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করেছে। আর এসব কমিউনিটি ক্লিনিকে মা ও শিশুসহ প্রায় সব ধরনের রোগীর চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়ে থাকে।

মা ও শিশুদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সম্প্রতি নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায় মাতৃছায়া নামে একটি ভ্রাম্যমাণ অ্যাম্বুলেন্স চালু করা হয়েছে। উপজেলার ভীমপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে অ্যাম্বুলেন্সটির যাত্রা শুরু হয়। গত ২৮ জানুয়ারি উপজেলার ‘কাইযেন’ সেবা মেলায় অ্যাম্বুলেন্সটি চালু করা হয়।

নতুন উদ্যোগে একটি ইজিবাইককে (ব্যাটারি চালিত চার্জার) অ্যাম্বুলেন্স রূপ দেওয়া হয়েছে। সবুজ রঙের ইজিবাইককে নাম দেয়া হয়েছে মাতৃছায়া। ছাদে ঘূর্ণয়মান লাল আলোর বিচ্ছুরণ ঘটিয়ে সাইরেন বাজিয়ে গ্রামের কাঁচা-পাকা মেঠো পথে ছুটে চলে সেই অ্যাম্বুলেন্স।

এছাড়া জরুরি সেবা নিতে অ্যাম্বুলেন্সের গায়ে লেখা রয়েছে মোবাইল নম্বর। আর ভেতরে রয়েছে গদি আঁটা আসনে সাহায্যকারী ও প্রসূতি শুয়ে-বসে যাওয়ার সু-ব্যবস্থা। রাত-বিরাতে মোবাইল ফোন থেকে কল করে ঠিকানা জানিয়ে দিলেই বাড়ির দোরগোড়ায় হাজির হবে এই অ্যাম্বুলেন্স।

Naogaon-Ambulance

অ্যাম্বুল্যান্সের সেবাগ্রহণকারী এলাকাবাসী রহমান আলী, হারুন, সৈকত, মনোয়ারা বেগম জানান, এলাকায় অ্যাম্বুলেন্সটি পেয়ে আমরা খুবই উপকৃত হয়েছি। আমাদের কল্পনার বাহিরে ছিল। কখনো ভাবিনি যে এলাকায় অ্যাম্বুলেন্স পাবো। বিপদ-আপদ যেকোনো সময় আমরা ফোন করলেই অ্যাম্বুলেন্স চলে আসে। এছাড়া ভাড়াও সাধ্যের মধ্যে।

চালক আল-আমিন হোসেন জানান, গত তিন মাসে ৪০/৪৫ জন ডেলিভারি রোগীকে নিরাপদে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। এলাকার প্রায় সবার কাছে মোবাইল নাম্বার দেয়া আছে। যেকোনো সময় ফোন করলে রোগীদের বাড়িতে চলে যায়। রোগীদের সেবা ছাড়াও বাকি সময় যাত্রীদের ভাড়া মারা হয়।

ভীমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শ্রী রাম প্রসাদ ভদ্র জানান, বেশির ভাগই মানুষ গ্রামে বসবাস করে। যারা গরীব প্রকৃতির মানুষ তাদের দ্বারা বেশি টাকা খরচ করে অ্যাম্বুলেন্সে করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া সম্ভব হয়না। কম খরচে সবসময় সেবা দেয়া যায় এজন্য অ্যাম্বুলেন্সটি তৈরি করা হয়েছে। আপাতত এটি শুধু ভীমপুর ইউনিয়নবাসীর জন্য চালু করা হয়েছে।

অ্যাম্বুলেন্সটি ইউনিয়নের বাগাচারা কমিউনিটি ক্লিনিকে (সিসি) এককালীন দিয়ে দেয়া হয়েছে। বাকি যে দুটি সিসি আছে আগামী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আমি নির্বাচিত হতে পারলে সেখানেও দুটি অ্যাম্বুলেন্স দেয়া হবে। অ্যাম্বুলেন্সটিতে একজন চালক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। দিনের যে কোনো সময় ভীমপুর থেকে মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং নওগাঁ সদর হাসপাতালের নেয়ার জন্য একশ টাকা। এবং সন্ধার পর থেকে ভোর পর্যন্ত দেড়শ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়াও প্রতিদিন একশ টাকা করে সিসি’র একাউন্টে জমা দিতে হবে। যাতে অ্যাম্বলেন্সটি মেরামতের জন্য সে একাউন্ট থেকে খরচ করা যায়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মাত্র একশ টাকায় অ্যাম্বুলেন্স সেবা

আপডেট টাইম : ১২:৫৬:১০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ মে ২০১৬

স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সরকার দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করেছে। আর এসব কমিউনিটি ক্লিনিকে মা ও শিশুসহ প্রায় সব ধরনের রোগীর চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়ে থাকে।

মা ও শিশুদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সম্প্রতি নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায় মাতৃছায়া নামে একটি ভ্রাম্যমাণ অ্যাম্বুলেন্স চালু করা হয়েছে। উপজেলার ভীমপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে অ্যাম্বুলেন্সটির যাত্রা শুরু হয়। গত ২৮ জানুয়ারি উপজেলার ‘কাইযেন’ সেবা মেলায় অ্যাম্বুলেন্সটি চালু করা হয়।

নতুন উদ্যোগে একটি ইজিবাইককে (ব্যাটারি চালিত চার্জার) অ্যাম্বুলেন্স রূপ দেওয়া হয়েছে। সবুজ রঙের ইজিবাইককে নাম দেয়া হয়েছে মাতৃছায়া। ছাদে ঘূর্ণয়মান লাল আলোর বিচ্ছুরণ ঘটিয়ে সাইরেন বাজিয়ে গ্রামের কাঁচা-পাকা মেঠো পথে ছুটে চলে সেই অ্যাম্বুলেন্স।

এছাড়া জরুরি সেবা নিতে অ্যাম্বুলেন্সের গায়ে লেখা রয়েছে মোবাইল নম্বর। আর ভেতরে রয়েছে গদি আঁটা আসনে সাহায্যকারী ও প্রসূতি শুয়ে-বসে যাওয়ার সু-ব্যবস্থা। রাত-বিরাতে মোবাইল ফোন থেকে কল করে ঠিকানা জানিয়ে দিলেই বাড়ির দোরগোড়ায় হাজির হবে এই অ্যাম্বুলেন্স।

Naogaon-Ambulance

অ্যাম্বুল্যান্সের সেবাগ্রহণকারী এলাকাবাসী রহমান আলী, হারুন, সৈকত, মনোয়ারা বেগম জানান, এলাকায় অ্যাম্বুলেন্সটি পেয়ে আমরা খুবই উপকৃত হয়েছি। আমাদের কল্পনার বাহিরে ছিল। কখনো ভাবিনি যে এলাকায় অ্যাম্বুলেন্স পাবো। বিপদ-আপদ যেকোনো সময় আমরা ফোন করলেই অ্যাম্বুলেন্স চলে আসে। এছাড়া ভাড়াও সাধ্যের মধ্যে।

চালক আল-আমিন হোসেন জানান, গত তিন মাসে ৪০/৪৫ জন ডেলিভারি রোগীকে নিরাপদে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। এলাকার প্রায় সবার কাছে মোবাইল নাম্বার দেয়া আছে। যেকোনো সময় ফোন করলে রোগীদের বাড়িতে চলে যায়। রোগীদের সেবা ছাড়াও বাকি সময় যাত্রীদের ভাড়া মারা হয়।

ভীমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শ্রী রাম প্রসাদ ভদ্র জানান, বেশির ভাগই মানুষ গ্রামে বসবাস করে। যারা গরীব প্রকৃতির মানুষ তাদের দ্বারা বেশি টাকা খরচ করে অ্যাম্বুলেন্সে করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া সম্ভব হয়না। কম খরচে সবসময় সেবা দেয়া যায় এজন্য অ্যাম্বুলেন্সটি তৈরি করা হয়েছে। আপাতত এটি শুধু ভীমপুর ইউনিয়নবাসীর জন্য চালু করা হয়েছে।

অ্যাম্বুলেন্সটি ইউনিয়নের বাগাচারা কমিউনিটি ক্লিনিকে (সিসি) এককালীন দিয়ে দেয়া হয়েছে। বাকি যে দুটি সিসি আছে আগামী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আমি নির্বাচিত হতে পারলে সেখানেও দুটি অ্যাম্বুলেন্স দেয়া হবে। অ্যাম্বুলেন্সটিতে একজন চালক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। দিনের যে কোনো সময় ভীমপুর থেকে মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং নওগাঁ সদর হাসপাতালের নেয়ার জন্য একশ টাকা। এবং সন্ধার পর থেকে ভোর পর্যন্ত দেড়শ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়াও প্রতিদিন একশ টাকা করে সিসি’র একাউন্টে জমা দিতে হবে। যাতে অ্যাম্বলেন্সটি মেরামতের জন্য সে একাউন্ট থেকে খরচ করা যায়।