খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যা বললেন ফখরুল

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যে ‘রাজনৈতিক শিষ্টাচারবিবর্জিত’ বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিচে যুবদলের উদ্যোগে এক কোরআন খতম এবং দোয়া মাহফিলে এ মন্তব্য করেন তিনি।
‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্নার রোগ মুক্তি কামনায়’ এ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি প্রসঙ্গে গতকাল এক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যে (খালেদা জিয়া) আমাকে খুন করতে চেয়েছে। আমার বাবা-মা-ভাইদের হত্যার সঙ্গে জড়িত। তার জন্য যথেষ্ট দয়া দেখানো হয়েছে। যে আমার হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে, নির্যাতন করেছে, তার জন্য এর বেশি দয়া দেখানো আমাদের পক্ষে সম্ভব না।’

এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি (প্রধানমন্ত্রী) গতকাল খালেদা জিয়ার সম্পর্কে যে সব উক্তি করেছেন, আমরা ভাবতেও পারি না এবং কল্পনাও করতে পারি না যে, প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে অবৈধভাবে বসে থাকলেও এ ধরণের কেউ উক্তি করতে পারেন। এটা সব রাজনৈতিক শিষ্টাচারবিবর্জিত। এটার একটাই কারণ, সেটা হচ্ছে- রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। প্রতি মুহুর্তেই তিনি খালেদা জিয়াকে হিংসা করেন এবং তাকে সহ্য করতে পারেন না।

‘যে কারণে বেগম জিয়াকে সম্পর্কে আজকে এই সব অনৈতিক, অবৈধ ও শিষ্টাচার বিবর্জিত সব কথা বলেন, যা এদেশের মানুষ কখনই ভালো চোখে দেখে না।’

খালেদা জিয়া ন্যূনতম চিকিৎসা চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তার (খালেদা জিয়া) চিকিৎসকরা আছেন, তারা খুব পরিস্কার করে বলেছেন যে, তার বিদেশে একটা বিশেষায়িত হাসপাতাল কেন্দ্রে চিকিৎসা হওয়া দরকার। কিন্তু দুর্ভাগ্য এদেশ ও জাতির, এমন একজন ‘অবৈধ এবং অনির্বাচিত’ প্রধানমন্ত্রী বসে আছেন যার মধ্যে ন্যূনতম রাজনৈতিক শিষ্টাচার পর্যন্ত নেই।

তিনি বলেন, সরকার কত বড় মিথ্যাবাদী। দেশের সম্মানকে তারা ভূলন্ঠিত করছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার মিশেল ব্যাশেল এখানে (বাংলাদেশ) এসেছিলেন। এসে তিনি এখানে মানবাধিকার লংঘন সম্পর্কে সরকার, মন্ত্রীদের, সুশীল সমাজকে বলেছেন এবং সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন যে, এদেশে মানবাধিকার লংঘন হচ্ছে। এদেশে গুম হয়েছে। এগুলোকে বন্ধ করা প্রয়োজন। এমনকি এটাও বলেছেন যে, এর একটা সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। যার জন্য জাতিসংঘ সাহায্য করতে প্রস্তুত আছে। আর তারা এটাও বলেছিলেন যে, সেনাবাহিনীর উচিত হবে মানবাধিকার লংঘনের সঙ্গে তারা যাতে কোনো মতে জড়িত না থাকেন।

এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, হাইকমিশনার ফিরে যাওয়ার পরে আমাদের এখানে যারা মন্ত্রী আছেন তারা বলেছেন, হাই কমিশনার নাকি মানবাধিকার সম্পর্কে কোনো কথা বলেননি। আর এখানে মানবাধিকার নাকি খুব ভালো, তিনি নাকি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেননি। সেই হাই কমিশনার অফিস থেকে বিবৃতি দিয়ে বলেছেন যে, সরকারের মন্ত্রীরা সব মিথ্যা কথা বলছেন। আমরা অবশ্যই উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। বাংলাদেশে মানবাধিকার লংঘন হচ্ছে। বিষয়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এতে করে বাংলাদেশের যে ভাবমূর্তি সেটা সম্পূর্ণভাবে বিনষ্ট হয়েছে।

যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে দোয়া মাহফিলে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর