হাওর বার্তা ডেস্কঃ সিলেট-সুনামগঞ্জে নদনদীর পানি ওঠা-নামার কারণে বন্যা পরিস্থিতি প্রলম্বিত হচ্ছে। সুরমা, কুশিয়ারার বেশ কয়েকটি স্থানে এখনো পানি বিপত্সীমার ওপরে। এতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। এদিকে বন্যার পানিতে রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভেঙে পড়েছে। তবে কত জানমাল, মাছের খামার, প্রাণিসম্পদ ভেসে গেছে বা মারা গেছে তার সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি।
প্রাথমিক তথ্যে জানা যায়. সিলেট ও সুনামগঞ্জে সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং এলজিইডির ৪ হাজার ৩৬০ কিলোমিটার সড়কের ক্ষতি হয়েছে। এতে জেলা সদরের সঙ্গে উপজেলা সদরের অনেক সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর থেকে জেলা সদরে আসতে ৩০ মিনিটের পথ। কিন্তু ভুক্তভোগী একজন বলেন, ‘সড়ক তো নয়, এটা গর্তময় পথ। সিএনজি অটোরিকশায় তারা চার ঘণ্টায় ঐ পথ পাড়ি দিয়েছেন।’
ভয়াবহ বন্যায় ভেঙে পড়া সড়ক যোগাযোগ পুনর্গঠন সর্বাগ্রে জরুরি বলে মনে করছে প্রশাসনসহ সাধারণ মানুষ। কারণ অনেক স্থানে নিত্যপ্রয়োজীয় জিনিসপত্র সঠিকভাবে পৌঁছাতে না পারায় পণ্যের মূল্যও বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে বানভাসিদের দুর্ভোগ বেড়েই চলছে। সূত্রমতে, সড়ক ও জনপথের সিলেটের ১৭টি ও সুনামগঞ্জের আটটি সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে এগুলো মেরামতের জন্য আপাতত ২০ কোটি টাকা প্রয়োজন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
তবে কোনো কোনো স্থানে সড়ক চলাচল উপযোগী করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ তৎপর হয়েছে। স্বেচ্ছা শ্রমেও সড়ক মেরামত কাজ শুরু হয়েছে। গোয়াইনঘাটে ক্ষতিগ্রস্ত ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার রাস্তা সেনাবাহিনী, পুলিশ বাহিনী ও প্রশাসনের সহযোগিতায় সংস্কার করা হয়েছে।
অভাবনীয় ত্রাণ তৎপরতা: এবার ভয়াবহ বন্যায় সরকারি ত্রাণ তৎপরতার পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগ অভাবনীয়। যে যা পারছেন তাই নিয়ে নেমে পড়েছেন বন্যার্তদের পাশে। শুকনো খাদ্য, রান্না করা খাদ্য, তেল চাল ডালের সঙ্গে লবণ মরিচ আলু, সবজি ভরা ট্রাক নিয়ে মানুষ ছুটছে হাওরে হাওরে। খেয়ে না খেয়ে তারা দিনের পর দিন বানভাসি মানুষের পাশে রয়েছেন। আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়দুল হক সুমন মঙ্গলবার ৬০টি ট্রাকে করে ৬০ লাখ টাকার ত্রাণ নিয়ে সুনামঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিতরণ করেছেন বলে জানা গেছে।