হাওর বার্তা ডেস্কঃ কৃষক সবিনয় চন্দ্র (৫৫)। কৃষি কাজই নেশা ও পেশা। শুধু ফসল উৎপাদন নয়, লালন-পালন করে চলেছে গরু-বাছুরও। এসব পশুর খাদ্য পূরণের পাশাপাশি আর্থিক আয়ের স্বপ্ন দেখেন। এমনি এক স্বপ্নের বাস্তব রূপ দিতে পথের ধারে রোপণ করেছেন নেপিয়ার ঘাস। এ থেকে এখন লাভবান হচ্ছেন তিনি।
গতকাল বিকালে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর-নলডাঙ্গা সড়কের জামুডাঙ্গা (সরকারপাড়া) নামক স্থানে দেখা যায়, সবুজ রঙের নেপিয়ার ঘাসের সমাহার। পথের ধারে লাগানো এই ঘাসগুলো কাটতে ব্যস্ত ছিলেন কৃষক সবিনয় চন্দ্র। জানা যায়, জামুডাঙ্গা (সরকারপাড়া) গ্রামের কৃষক পরিবারের মৃত ললিত চন্দ্র সরকারের ছেলে সবিনয় চন্দ্র সরকার। বাবার মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরতে হয়েছে তাকে।
যুবক বয়স থেকেই কৃষি ফসলের ওপর নির্ভশীল। ধান, পাট ও ভুট্টাসহ নানা ফসল উৎপাদন করে ভালোভাবে জীবিকা নির্বাহ হচ্ছে তার। এর পাশাপাশি গোয়াল ঘরে পালন করছে একঝাঁক গরু-বাছুর। বাজারে পশুখাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় দুশ্চিন্তায় ভুগছিলেন। এরই মধ্যে দুই বছর আগে পরিকল্পনা নেয় উন্নত জাতের ঘাস আবাদের। এ থেকে নিজের গরু-বাছুরের খাদ্য চাহিদা পূরণ করেও আর্থিক লাভের স্বপ্ন দেখেন। তাই দৃঢ় মনোবল নিয়ে নিজের জমির ওপরে সড়কের ধারে রোপণ করেন নেপিয়ার জাতের ঘাস। প্রথমে এ ঘাস রোপণের ৩ মাস পর থেকে প্রত্যেক মাসে একবার করে ঘাস কাটা হচ্ছে। প্রথম বছরে কম উৎপাদন হলেও দ্বিতীয় বছর থেকে তা বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে গরুগুলোর খাদ্য মিটিয়েও মাসে প্রায় ১০-১২ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘাস বিক্রি করা হচ্ছে। এতে করে একদিকে যেমন গরুতে বাড়ছে লাভ, অন্যদিকে ঘাস বিক্রি করে আর্থিক সচ্ছলতা ফিরছে ওই কৃষকের।
কৃষক সবিনয় চন্দ্র সরকার জানান, ঘাস চাষের উপযোগী জায়গা ছিল না তার। তাই নিজের জমির পাশের রাস্তার ধারে পরিকিল্পতভাবে ঘাস লাগিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, এক সময় গৃহপালিত গরুর খাদ্য যোগান দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছিল। এখন আর সেই চিন্তা নেই। নিজের চাহিদা পুরণ করার পরও ঘাস বিক্রি করে বেশ লাভবান হচ্ছি।
সাদুল্লাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মতিউল আলম বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী উন্নত জাতের ঘাস আবাদ খুবই লাভজনক। যেকোনো কৃষক এটি চাষ করে সহজে লাভবান হতে পারবেন।