সময় পালটে গেলে
ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কেটেছে সময়
ঘুমের ভেতর কয়েকটি মশা আর কিছু উৎপাত
হারমোনিয়ামের ডেবে যাওয়া রীড— সাপলুডু-মই
যে সূর্যটি উদিত হয়েছিলো ভারি প্রত্যয়ে
তোলপাড় করেছিলো মধ্যদুপুরের রোদ
সে সূর্যটি এখন অস্তায়মান— খুব নীচু হয়ে যাওয়া মস্তিষ্কে
বেঁধে রাখা যায়নি সময়ের একটিও পা
শিশু চলে গেছে— চলে গেছে বাউল যুবক
এখন লাঠিতে ভর করে চলছে জীবন— লীন ধুলোট জীবন
কৌটাবন্দি সেই মার্বেলগুলো টুংটাং করছে জনান্তিকে
চৈত্রের ঝড়বৃষ্টিতে চৌচির হয়ে আছে কদলীপাতা
পাটকাঠির ছিপবড়শি দিয়ে টপাটপা আর নেই পুঁটিমাছ
প্রবাহিত জলের সমুদ্রই শেষ ঠিকানা
কোনোদিন পুনরায় মেঘ হবে হবে জল
একঝাক সুঁই ফোটানো মশার মতো
রোদের দাঁত কামড়ে দিলো দুপুর-বিকেল
অজ্ঞান-বিশারদের মতো এ বৈশাখ
কতোটুকু নির্ভরযোগ্য একদম জানি না
সময় পালটে গেলে ফিরে আসে ঠিকঠিক
একেবারে অন্যরকম সানগ্লাস পোশাকে
চুরি
বীজপত্রের ভেতর জেগে ওঠলো হিন্দোল
এ চৈত্রে কোথাও কি বিড়ালে-কুকুরে বৃষ্টি নেমেছে
অনাসৃষ্টির আবেগ জানালার গ্রীলপথে ছুটোছুটি করে
কলির ভেতর থেকে বেড়িয়ে আসতে পারে অর্কিডের ফুল
পাঁজরের ভেতর থেকে তরতাজা লালগোলাপ
লেপটা লেপটি করে চ্যাপটা হয়ে যাবে কি ক্রোধ
অসীমশূন্য আকাশে জলভর্তি মেঘকিশোরীরা
কোমড়নৃত্যে কোথায় কখন ছড়াবে যুঁইজ্যুস
পান্তা-ভর্তার মেলা ফুরিয়ে আসে চিটচিটে গোধূলিতে
ঝোপের আড়ালে নেকাবে মোড়ানো সন্ধ্যা যায় অভিসারে
বিলম্বীর মতো হয়ে থাকা প্রতীক্ষার পিরামিড থেকে
কে তবে চুরি করে নিয়েছে টনটন পাথর
ইনজেকশন দেয়া তরমুজের লাল টুকটুকে পিসগুলো
মেডিসিন খাওয়া মোটাতাজা গরুর মতো হাঁসফাঁস করে
প্রতিটি আইটেম দিনদিন পিচ্ছিল হয়ে
করতল থেকে পিছলে পড়ছে অদ্ভুত গন্তব্যে
আর্তনাদের কয়েকটি টুকরো সাজিয়ে পিরিচে
ঐক্ষিক রাজকুমারী চলে যায় অন্তঃপুরে
তারপর একযোগে বেহালা বেজে ওঠে করুণসুরে
প্রকৃতির তুল্যযন্ত্রে প্রতিটি মিলিগ্র্যামই হয়ে ওঠে সক্রিয়
লণ্ডভণ্ড অতীত
স্বয়ংক্রিয় মেশিনের পরিবহনকারী ফিতা থেকে
ঝাঁপিয়ে পড়ে যায় বিসদৃশ্য বাদামগুলো
কম্বল থেকে একটি একটি করে পশম উড়ে যায়
অবশিষ্ট কি থাকবে আর সেটাই হলো ঘটনা
রূপবান টিনের তোরঙ্গে ন্যাপথালিনকে পরাজিত করে
ঘুণপোকা মেতে ওঠে বিজয় মিছিলে
মধ্যরাতে চিলেকোঠায় পায়চারি করে লণ্ডভণ্ড অতীত
জলবায়ু পরিবর্তনের পর এবার অম্লবৃষ্টি হবে
কবির ফেসবুক— Ashraful Musaddeq