ঢাকা ১০:৩০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চরলক্ষ্মীপুর গ্রাম অবৈধ বালু উত্তোলনের খেসারত দিচ্ছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২৮:২২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ জুন ২০২২
  • ১২৬ বার

 হাওর বার্তা ডেস্কঃ অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের খেসারত দিচ্ছে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের চরলক্ষ্মীপুর গ্রামটি। উপজেলার কালাপাহাড়িয়া এলাকায় অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের ফলে বিলীন হতে চলেছে চরলক্ষ্মীপুর গ্রামটি।

 ইতোমধ্যেই নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে ৬ বসতঘর ও একটি স্কুলের একাংশ। আগামী ২ দিনের মধ্যে পুরো স্কুলটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসী।

তাদের অভিযোগ, মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে বালু তোলার ফলে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে তাদের গ্রাম।

সরেজমিনে দেখো গেছে, চরলক্ষ্মীপুর গ্রামটি কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত। চারিদিকে মেঘনার অথৈ পানির মাঝে অবস্থিত গ্রামটিতে ছিল একটি মসজিদ, আছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও। মসজিদটি মেঘনা বক্ষে বিলীন হয়ে গেলে সেটি আবারো নির্মাণ করা হয় গ্রামের অন্যত্র। গত ১৯ জুন হতে এ যাবত ৬টি বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভেঙ্গে নদীতে পড়ে যায় গ্রামের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১১৮নং চরলক্ষ্মীপুর নজরুল ইসলাম বাবু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টয়লেট এবং একটি কক্ষ।

ওই ওয়ার্ডের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সদাসদী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালেক জানান, গ্রামে প্রায় ২শ পরিবারের লোক সংখ্যা হাজারের উপরে। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই মৎস্যজীবী এবং কৃষক। তারা অনেকেই দরিদ্র শ্রেণির লোক। গত কয়েক দিনের ভাঙ্গনে স্কুলটির একটি কক্ষ ও একটি টয়লেট নদী গর্ভে চলে গেছে।

ওই গ্রামের বাসিন্দা নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়া এক বাড়ির মালিক মো. এরশাদ আলী বলেন, নদীতে বাড়ি ঘর বিলীন হয়ে যাওয়ায় আমাদের এখন গাছতলায় বসবাস করতে হবে। কোথাও বসতি গড়ার জায়গা নাই। একইভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন ঘর হারা অনেকে।

এ যাবত বাড়ী ঘর বিলীন হয়ে গেছে ওই গ্রামের হকসাব, রশিদ, রুস্তম আলী, স্বপন, রহমআলী এবং এরশাদ আলীর। তারা এখন বাস্তুহারা। সমাজকর্মী, এলাকার বিত্তশালী, রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিদের এখানকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়েছেন তারা।

জানা গেছে, বিগত সময়ে চরলক্ষ্মীপুর গ্রাম ঘেঁষে মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে এর আগেও নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়েছিল গ্রামটি। এখন বালু উত্তোলনের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়ছে এখানকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের ওপর।

এ ব্যাপারে আড়াইহাজারের সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহাদাৎ হোসেন বলেন, আমি ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি ঘর এবং স্কুলটি পরিদর্শন করেছি। গ্রামের এবং স্কুলের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। স্কুলটি জরুরি ভিত্তিতে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

চরলক্ষ্মীপুর গ্রাম অবৈধ বালু উত্তোলনের খেসারত দিচ্ছে

আপডেট টাইম : ১১:২৮:২২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ জুন ২০২২

 হাওর বার্তা ডেস্কঃ অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের খেসারত দিচ্ছে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের চরলক্ষ্মীপুর গ্রামটি। উপজেলার কালাপাহাড়িয়া এলাকায় অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের ফলে বিলীন হতে চলেছে চরলক্ষ্মীপুর গ্রামটি।

 ইতোমধ্যেই নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে ৬ বসতঘর ও একটি স্কুলের একাংশ। আগামী ২ দিনের মধ্যে পুরো স্কুলটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসী।

তাদের অভিযোগ, মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে বালু তোলার ফলে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে তাদের গ্রাম।

সরেজমিনে দেখো গেছে, চরলক্ষ্মীপুর গ্রামটি কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত। চারিদিকে মেঘনার অথৈ পানির মাঝে অবস্থিত গ্রামটিতে ছিল একটি মসজিদ, আছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও। মসজিদটি মেঘনা বক্ষে বিলীন হয়ে গেলে সেটি আবারো নির্মাণ করা হয় গ্রামের অন্যত্র। গত ১৯ জুন হতে এ যাবত ৬টি বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভেঙ্গে নদীতে পড়ে যায় গ্রামের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১১৮নং চরলক্ষ্মীপুর নজরুল ইসলাম বাবু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টয়লেট এবং একটি কক্ষ।

ওই ওয়ার্ডের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সদাসদী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালেক জানান, গ্রামে প্রায় ২শ পরিবারের লোক সংখ্যা হাজারের উপরে। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই মৎস্যজীবী এবং কৃষক। তারা অনেকেই দরিদ্র শ্রেণির লোক। গত কয়েক দিনের ভাঙ্গনে স্কুলটির একটি কক্ষ ও একটি টয়লেট নদী গর্ভে চলে গেছে।

ওই গ্রামের বাসিন্দা নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়া এক বাড়ির মালিক মো. এরশাদ আলী বলেন, নদীতে বাড়ি ঘর বিলীন হয়ে যাওয়ায় আমাদের এখন গাছতলায় বসবাস করতে হবে। কোথাও বসতি গড়ার জায়গা নাই। একইভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন ঘর হারা অনেকে।

এ যাবত বাড়ী ঘর বিলীন হয়ে গেছে ওই গ্রামের হকসাব, রশিদ, রুস্তম আলী, স্বপন, রহমআলী এবং এরশাদ আলীর। তারা এখন বাস্তুহারা। সমাজকর্মী, এলাকার বিত্তশালী, রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিদের এখানকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়েছেন তারা।

জানা গেছে, বিগত সময়ে চরলক্ষ্মীপুর গ্রাম ঘেঁষে মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে এর আগেও নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়েছিল গ্রামটি। এখন বালু উত্তোলনের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়ছে এখানকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের ওপর।

এ ব্যাপারে আড়াইহাজারের সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহাদাৎ হোসেন বলেন, আমি ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি ঘর এবং স্কুলটি পরিদর্শন করেছি। গ্রামের এবং স্কুলের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। স্কুলটি জরুরি ভিত্তিতে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।