ঢাকা ০২:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
সৌদির কনসার্টে গাইবেন পড়শী আসছে নতুন গান আ.লীগের রাজনীতি করা নিয়ে যা বললেন মান্না দোসরদের গ্রেফতার করা না গেলে মুক্তি পাবে না পুরান ঢাকার সাধারণ মানুষ সেলিমের চেয়েও ভয়ঙ্কর দুই পুত্র সোলায়মান ও ইরফান বাতাসে ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকি, ঢাকার অবস্থা কি শাকিবের ‘দরদ’ নিয়ে যা বললেন অপু বিশ্বাস ‘ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সফল হলেই ভারতের স্বার্থ রক্ষিত’ ভারতীয় ব্যবসায়ীর সাক্ষাৎকার আইপিএল নিলামের চূড়ান্ত তালিকায় ১২ বাংলাদেশি ফিলিপাইনের দিকে ধেয়ে আসছে সুপার টাইফুন আগামীর বাংলাদেশ হবে ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও বাক-স্বাধীনতার: প্রধান উপদেষ্টা আজিমপুরে ডাকাতির সময় অপহৃত সেই শিশু উদ্ধার

দেশ ছাড়তে চাইছে চীনের মধ্যবিত্তরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৩০:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জুন ২০২২
  • ১৫০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কঠোর কোভিড নীতিগুলো ধ্বংস করে দিয়েছে চীনের মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে। ব্যাহত হয়েছে শিশুদের শিক্ষাকার্যক্রমও। বর্তমানে কোভিড-নীতিতে কিছুটা শিথিলতা এলেও ততদিনে পায়ের তলা থেকে সরে গেছে মাটি। সংসারের হালটাকে শক্ত করে ধরে রাখার ক্ষমতাও হারিয়েছেন অনেকে। সে কারণে চীন থেকে পালিয়ে যেতে চান পার্শ্ববর্তী কিংবা দূরবর্তী কোনো দেশে। কিন্তু দেশটির শক্তিশালী ভ্রমণ-নীতির কারণে সেটিও করতে পারছেন না অনেক নাগরিক। এএফপি।

সাংহাইয়ের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী অ্যালান লি (ছদ্মনাম)। কঠোর কোভিড নিয়মগুলো তার ব্যবসাকে ধ্বংস করেছে বলে তার অভিযোগ। ব্যাহত হয়েছে ছেলের উচ্চশিক্ষাও। ব্যবসা আবার লকডাউনের আগের অবস্থানে ফিরে আসবে-কিনা এমন আশাও ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। ফার্ম বন্ধ করে এখন হাঙ্গেরিতে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। তিনি বলেন, ‘আমার নিজস্ব নগদ সঞ্চয় জলে ডুবেছে। লকডাউনের মধ্যে ৪০০ কর্মীকে বেতন দিয়ে আমি এখন প্রায় পথের ভিখারি। শুধু তাই নয়, লকডাউন আমাদের শিশুদের সময়কে অপচয় করতে বাধ্য করেছে।’ এরই মধ্যে একটি ইউরোপীয় বিনিয়োগ প্রকল্পের সুবিধা হাত করেছেন লি। যে লক্ষ্যে পরিবার নিয়ে হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে বসবাসের অনুমতিও পেয়েছেন তিনি। লি বলেন, ‘আমার মতো অনেকেই চান এখান থেকে সব সম্পদ বিক্রি করে অন্য কোনো দেশে চলে যেতে। কোনো মতে পেটেভাতে থাকতে পারলেও চলবে।’

বেইজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ বছর বয়সি ছাত্রী লুসি বলেন, ‘আমি শুধু এমন একটি দেশে বাস করতে চাই-যেখানে সরকার আমার ব্যক্তিগত জীবনে অশোভন হস্তক্ষেপ করবে না। কারণ, এখানে ভাইরাস নীতিগুলো সরকারকে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ ও নিরীক্ষণ করার অনুমতি দিয়েছে। এই দমবন্ধ অবস্থা মেনে নেওয়া সম্ভব নয় বলেই আমাদের অন্য কোথাও চলে যেতে হবে, নতুন করে জীবন শুরু করতে হবে।’ অনেকে আবার পালানোর উপায় খুঁজছেন বিদেশিদের কাছেই। জার্মানিতে অভিবাসিত এক চীনা মহিলা এএফপিকে জানিয়েছেন, ‘কয়েকডজন নাগরিক তার কাছে দেশ থেকে পালানোর টিপস চেয়েছেন।’ একই কথা বলেছেন বেইজিংভিত্তিক অভিবাসন পরামর্শদাতা গুও শিজে। জানিয়েছেন, মার্চ মাস থেকেই তার ক্লায়েন্টের সংখ্যা তিনগুণ বেড়েছে। লকডাউন শিথিল হওয়ার পর স্বাভাবিকের চেয়ে দিগুণ হয়ে ক্লায়েন্ট আসছে বানের জলের মতো। কেন দেশ ছাড়তে চাইছে এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আসলে একবার মানুষের মনে অনীহা ঢুকে গেলে, তা সহজে যায় না।’

অবস্থা বেগতিক দেখে বিদেশ-ভ্রমণের নীতি আরও কঠোর করেছে চীনা কর্তৃপক্ষ। কোভিডের দোহাই দিয়ে দেশের বাইরে সব ‘অপ্রয়োজনীয়’ ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাসপোর্ট নবায়ন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত আবেদনকারীদের মধ্য থেকে মাত্র ২ শতাংশকে পাসপোর্ট ইস্যু করেছে অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। এমিলি (ছদ্মনাম) তার এক আত্মীয়কে ইউরোপে পাঠাতে নতুন পাসপোর্ট আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়ে। একজন চীনা ফ্রিল্যান্সার এএফপিকে বলেছেন, ইতোমধ্যে চেক ইন করা সত্ত্বেও অক্টোবরে কাজের জন্য তুরস্কে যাওয়ার চেষ্টা করা হলে অভিবাসন কর্মকর্তারা তাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

সৌদির কনসার্টে গাইবেন পড়শী আসছে নতুন গান

দেশ ছাড়তে চাইছে চীনের মধ্যবিত্তরা

আপডেট টাইম : ১০:৩০:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জুন ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কঠোর কোভিড নীতিগুলো ধ্বংস করে দিয়েছে চীনের মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে। ব্যাহত হয়েছে শিশুদের শিক্ষাকার্যক্রমও। বর্তমানে কোভিড-নীতিতে কিছুটা শিথিলতা এলেও ততদিনে পায়ের তলা থেকে সরে গেছে মাটি। সংসারের হালটাকে শক্ত করে ধরে রাখার ক্ষমতাও হারিয়েছেন অনেকে। সে কারণে চীন থেকে পালিয়ে যেতে চান পার্শ্ববর্তী কিংবা দূরবর্তী কোনো দেশে। কিন্তু দেশটির শক্তিশালী ভ্রমণ-নীতির কারণে সেটিও করতে পারছেন না অনেক নাগরিক। এএফপি।

সাংহাইয়ের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী অ্যালান লি (ছদ্মনাম)। কঠোর কোভিড নিয়মগুলো তার ব্যবসাকে ধ্বংস করেছে বলে তার অভিযোগ। ব্যাহত হয়েছে ছেলের উচ্চশিক্ষাও। ব্যবসা আবার লকডাউনের আগের অবস্থানে ফিরে আসবে-কিনা এমন আশাও ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। ফার্ম বন্ধ করে এখন হাঙ্গেরিতে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। তিনি বলেন, ‘আমার নিজস্ব নগদ সঞ্চয় জলে ডুবেছে। লকডাউনের মধ্যে ৪০০ কর্মীকে বেতন দিয়ে আমি এখন প্রায় পথের ভিখারি। শুধু তাই নয়, লকডাউন আমাদের শিশুদের সময়কে অপচয় করতে বাধ্য করেছে।’ এরই মধ্যে একটি ইউরোপীয় বিনিয়োগ প্রকল্পের সুবিধা হাত করেছেন লি। যে লক্ষ্যে পরিবার নিয়ে হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে বসবাসের অনুমতিও পেয়েছেন তিনি। লি বলেন, ‘আমার মতো অনেকেই চান এখান থেকে সব সম্পদ বিক্রি করে অন্য কোনো দেশে চলে যেতে। কোনো মতে পেটেভাতে থাকতে পারলেও চলবে।’

বেইজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ বছর বয়সি ছাত্রী লুসি বলেন, ‘আমি শুধু এমন একটি দেশে বাস করতে চাই-যেখানে সরকার আমার ব্যক্তিগত জীবনে অশোভন হস্তক্ষেপ করবে না। কারণ, এখানে ভাইরাস নীতিগুলো সরকারকে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ ও নিরীক্ষণ করার অনুমতি দিয়েছে। এই দমবন্ধ অবস্থা মেনে নেওয়া সম্ভব নয় বলেই আমাদের অন্য কোথাও চলে যেতে হবে, নতুন করে জীবন শুরু করতে হবে।’ অনেকে আবার পালানোর উপায় খুঁজছেন বিদেশিদের কাছেই। জার্মানিতে অভিবাসিত এক চীনা মহিলা এএফপিকে জানিয়েছেন, ‘কয়েকডজন নাগরিক তার কাছে দেশ থেকে পালানোর টিপস চেয়েছেন।’ একই কথা বলেছেন বেইজিংভিত্তিক অভিবাসন পরামর্শদাতা গুও শিজে। জানিয়েছেন, মার্চ মাস থেকেই তার ক্লায়েন্টের সংখ্যা তিনগুণ বেড়েছে। লকডাউন শিথিল হওয়ার পর স্বাভাবিকের চেয়ে দিগুণ হয়ে ক্লায়েন্ট আসছে বানের জলের মতো। কেন দেশ ছাড়তে চাইছে এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আসলে একবার মানুষের মনে অনীহা ঢুকে গেলে, তা সহজে যায় না।’

অবস্থা বেগতিক দেখে বিদেশ-ভ্রমণের নীতি আরও কঠোর করেছে চীনা কর্তৃপক্ষ। কোভিডের দোহাই দিয়ে দেশের বাইরে সব ‘অপ্রয়োজনীয়’ ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাসপোর্ট নবায়ন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত আবেদনকারীদের মধ্য থেকে মাত্র ২ শতাংশকে পাসপোর্ট ইস্যু করেছে অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। এমিলি (ছদ্মনাম) তার এক আত্মীয়কে ইউরোপে পাঠাতে নতুন পাসপোর্ট আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়ে। একজন চীনা ফ্রিল্যান্সার এএফপিকে বলেছেন, ইতোমধ্যে চেক ইন করা সত্ত্বেও অক্টোবরে কাজের জন্য তুরস্কে যাওয়ার চেষ্টা করা হলে অভিবাসন কর্মকর্তারা তাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।