হাওর বার্তা ডেস্কঃ জার্মানির বন শহরে জলবায়ু পরিবর্তন আলোচনা চূড়ান্ত দিনে প্রবেশ করেছে। এমন প্রেক্ষাপটে উন্নয়নশীল বিশ্বের সঙ্গে ধনী দেশগুলোর বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ উঠেছে।
দরিদ্র দেশগুলোর ভাষ্য, গ্লাসগোতে গত কপ ২৬ এ তাদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল যে ক্ষতি এবং ক্ষতিপূরণ বিষয়ে তাদের মূল দাবিগুলো এ বছর মানা হবে। তাদের বিশ্বাস ছিল, জলবায়ু পরিবর্তনের যে প্রভাবগুলো তারা মানিয়ে নিতে পারে না সেগুলোর জন্য অর্থ প্রদানের একটি নতুন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে।
কিন্তু জার্মানির বন আলোচনায় বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপ পাশ কাটিয়ে গেছে।
এ বৈঠকে অংশগ্রহণকারী অনেকের জন্য বৈশ্বিক জলবায়ু আলোচনায় ক্ষতিপূরণই মূল বিষয় হয়ে উঠেছে।
উন্নয়নশীল দেশের অংশগ্রহণকারীরা বলছেন, তাদের দেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ধনী দেশগুলোর তুলনায় বেশি গুরুতর এবং তাদের এসব মোকাবেলার আর্থিক সক্ষমতা কম।
কোস্টারিকার পরিবেশবাদী গ্রুপ অ্যাসোসিয়েশন লা রুটা ডেল ক্লিমা-র অ্যাড্রিয়ানা ভাসকুয়েজ রদ্রিকেজ বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যেই গত ২৫ বছর ধরে ক্ষয়ক্ষতির সঙ্গে বাস করছি। অনেক পরিবার বাড়িঘর, ফসল বা জীবনহানির শিকার হয়েছে। কেউ এর জন্য অর্থ প্রদান করছে না, আমাদের সম্পদ ফুরিয়ে যাচ্ছে। একই সময়ে আমরা ঋণের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি। ’
উন্নয়নশীল দেশগুলোর যুক্তি হচ্ছে, তারা যে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের সম্মুখীন হচ্ছে তা অতীতের কার্বন নিঃসরণের কারণে হয়েছে যার জন্য দায়ী ধনী দেশগুলো। উন্নয়নশীল দেশগুলো বলে, এখন এই ক্ষয়ক্ষতির জন্য ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রকে দায়িত্ব নিতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ এ দাবির সঙ্গে একমত নয়। তারা ভয় পাচ্ছে যে, অতীতের নিঃসরণে র জন্য অর্থ প্রদান করলে তারা কয়েক দশক এমনকি কয়েক শতাব্দীর জন্য শত শত কোটি ডলার দিয়ে যাওয়ার ফাঁদে আটকা পড়তে পারে।
কপ ২৬ সম্মেলনে সমস্যাটি সবার সামে প্রকটভাবে উঠে আসে। সেখানে একটি ‘সূক্ষ্ম সমঝোতা’ হয়েছিল। দ্বীপ রাষ্ট্র এবং উন্নয়নশীল দেশগুলো গ্লাসগোতে বলেছিল, ধনী দেশগুলো ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলার জন্য অর্থায়ন করবে এই শর্তে তারা কার্বন হ্রাসের ওপর বড় মনোযোগ দিয়ে জলবায়ু চুক্তিতে সম্মত হবে।
পরিবেশ বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইথ্রিজি-র অ্যালেক্স স্কট বলেন, ‘কপ-২৬ এই বোঝাপড়ার ওপর ভিত্তি করে আপোস হয়েছিল যে, রাষ্ট্রগুলো ক্ষতিপূরণের অর্থের সংস্থানের বিষয়ে কথা বলা এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী হবে। আমরা এটি এখানে ফলপ্রসূ হতে দেখিনি। পরিবর্তে, কীভাবে কিছু সমস্যার সমাধান করতে পারি সে সম্পর্কে কথা বলার জন্য একটি ওয়ার্কশপ দেখেছি। ’ সূত্র: বিবিসি