হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণ ও লাভবান হওয়ায় সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে তৈল জাতীয় ফসল তিলের আবাদ বাড়ছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর তিলের আবাদ বেড়েছে। পজেলায় উচ্চ ফলনশীল জাতের তিলের আবাদের দিকে ঝুকেছে কৃষকরা। অথচ এক সময় এই এলাকায় তিলের আবাদও কমতে কমতে চলে গিয়েছিল প্রায় শূন্যের কোঠায়।
সম্প্রতি দেশে তিলের উচ্চ ফলনশীল নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন ও সেইসঙ্গে কৃষি বিভাগ মাঠ পর্যায়ে তিল চাষের প্রতি কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণের ফলে তিল চাষের ব্যাপারে আবারও কৃষকদের মাঝে আগ্রহ বাড়ছে। তারই ফলশ্রুতিতে কয়েক বছর ধরে তিলের আবাদ বাড়তে শুরু করেছে।
কাজিপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় তিল চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল মাত্র ৪০০ হেক্টর। সেক্ষেত্রে আবাদ হয়েছে ৪৯০ হেক্টর জমি। নতুন করে তিল চাষ বাড়ার কারণ হিসেবে কৃষকরা জানায়, এক সময় দেশি জাতের তিলের চাষ করে অন্যান্য ফসলের তুলনায় তেমন একটা লাভ হতো না।
তাই এলাকার মানুষ তিলের আবাদ প্রায় ছেড়েই দিয়েছিল। বর্তমানে দেশে উচ্চ ফলনশীল তিলের জাত উদ্ভাবন হওয়ায় ও কৃষি বিভাগের তদারকিতে আবারও মানুষ তিল চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছে।
জানা যায়, খরিপ-১/২০২১-২০২২ চলতি মৌসুমে এলাকায় টি-৬ ও বারী তিল-৪ জাতের তিলের আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সব জাতের তিলেরই বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
কাজিপুরের সোনামুখী বাজারের ভুষিমাল ব্যবসায়ী আ. রহমান জানান, বর্তমান বাজারে প্রতিমণ তিল ১ হাজার ৫শত টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাজিপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রেজাউল করিম বলেন, একজন কৃষক জমিতে তিল চাষ করে একাধারে নানারকম উপকার পেয়ে থাকেন।
যেমন- তিল গাছের যেসব পাতা জমিতে পড়ে তা পচে মাটির সাথে মিশে সবুজ সারের কাজ করে তাতে জমির উর্বরাশক্তি বৃদ্ধি পায়। একই জমিতে কয়েক বছর তিলের আবাদ করলে অন্যান্য ফসলের আবাদ করতে রাসায়নিক সারের প্রয়োজন হয় না।
তিনি আরও জানান, এ গাছের কাণ্ড অর্থাৎ ডাঁটা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। তিল থেকে ভোজ্য তেল ও খৈল পাওয়া যায়। এ ফসলে তেমন কোন রোগ-বালাই নেই বলে খুব কম খরচে ও সহজ পদ্ধতিতে আবাদ করা যায়।
পানি জমে না, একদিকে ঢালু, দো-আঁশ মাটি ও একটু উঁচু জমিতে তিল ভালো জন্মে। তিল আবাদ করে একটু যত্ন নিলেই প্রতি হেক্টর জমি থেকে দেড় মেট্রিক টনেরও বেশি ফলন পাওয়া সম্ভব।