হাওর বার্তা ডেস্কঃ করিমগঞ্জে জঙ্গলবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করা এবং এর প্রতিবাদ করায় ৪ শিক্ষিকাকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় মূলহোতা ভিআইপি রানাসহ চার জনকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১৪)।
মঙ্গলবার (১৪ জুন) রাতে রাজধানীর গুলিস্তান ও কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
বুধবার (১৫ জুন) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
আটক বাকিরা হলেন- সৌরভ মিয়া ওরফে বাবু (১৭), সোহান ওরফে হিরা (১৭) ও সীমান্ত (১৭)।
জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ থানা এলাকায় উঠতি বয়সী কিশোরদের নিয়ে একটি সংঘবদ্ধ চক্র গড়ে তোলে আল আমিন ওরফে সোহেল ওরফে ভিআইপি রানা ওরফে প্রিন্স রানা (২২)। এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীদের বেশ কিছুদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছিল সেই চক্রটি। এক্ষেত্রে কোনো ছাত্রী প্রতিবাদ করতে চাইলে এসিড নিক্ষেপের হুমকিও দিতো ভিআইপি রানা।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক আল মঈন বলেন, গত ১২ জুন করিমগঞ্জের জঙ্গলবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রাক নির্বাচনী ও দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা চলাকালীন বহিরাগত কিছু বখাটে ছেলে বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় উঠে ছবি তোলার চেষ্টা করে। এ সময় স্কুলের কয়েকজন শিক্ষিকা বখাটে ছেলেদের স্কুল থেকে চলে যেতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বখাটেরা শিক্ষিকাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।
ওই দিন বিকেলে স্কুল শেষে কয়েকজন শিক্ষিকা অটোরিকশায় বাড়ি ফেরার পথে করিমগঞ্জ তালিয়াপাড়া এলাকায় বখাটেরা তাদের অটোরিকশার গতিরোধ করে। এ সময় তারা শিক্ষিকাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত, শ্লীলতাহানী ও অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে।
এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে স্কুলের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা বন্ধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক বাদি হয়ে করিমগঞ্জ থানায় একটি মামলাও দায়ের করেন। এ প্রেক্ষিতে গোয়েন্দা নজরদারীর ধারাবাহিকতায় ঘটনার মূলহোতাসহ চার জনকে আটক করা হয়।
মূলহোতা ভিআইপি রানাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, সে এলাকায় উঠতি বয়সী কিশোরদের নিয়ে একটি সংঘবদ্ধ চক্র গড়ে তোলে নেতৃত্ব প্রদান করে আসছিল। চক্রটি এলাকায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করত এবং এলাকায় বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়াত। কোনো ছাত্রী প্রতিবাদ করতে চাইলে ভিআইপি রানা তাদের এসিড নিক্ষেপের হুমকিও দিতো। স্থানীয় কেউ বাধা দিলে চক্রটি ভয়ভীতি প্রদর্শন করে রাস্তাঘাটে হেনস্থা করত।
সর্বশেষ ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করলে গ্রেফতার এড়াতে তারা আত্মগোপনে চলে যায়। পরে তাদের ধরা হয়। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।