ঢাকা ০১:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফের বন্যার আশঙ্কা সুনামগঞ্জে, পানিতে ডুবেছে সড়ক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৫৮:১৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জুন ২০২২
  • ১২২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গত কয়েকদিন দেশে ও ভারতের মেঘালয় চেরাপুঞ্জিতে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানিতে সুনামগঞ্জে নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলার সুরমা, কুশিয়ারা, যাদুকাটা, বৌলাই, রক্তি নদীসহ জেলার সব নদ-নদীর পানি বেড়েছে।

নদীর দু’কুল ছাপিয়ে পানি প্রবেশ করছে নদী তীরবর্তী বাড়ি ঘরে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার নিম্নাঞ্চলে আবারও বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পানিতে সড়ক ডুবে থাকায় জেলা সদরের সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে এছাড়াও নিন্মাঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে পানি উঠায় পাঠ্যদান বন্ধ রয়েছে। চরম দুর্ভোগে পরেছে দিনমজুর ও অসহায় গরীব মানুষ। সুরমা নদীর সুনামগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় কূল উপচে নিম্নাঞ্চলে ঢুকছে পানি। এতে নদী তীরের বাসিন্দারা দ্বিতীয় দফায় বন্যার আশঙ্কা করছেন।

এদিকে সোমবার সুনামগঞ্জ পৌর শহরের উত্তর আরপিন নগর, বড়পাড়া, সাহেববাড়ি ঘাট, পুরানপাড়া সড়কে পানি উঠে গেছে। এছাড়াও জানা যায়, জেলার তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, র্ধমপাশা, দিরাই, শাল্লা, জগন্নাথপুর উপজেলার নিন্মাঞ্চল ও সীমান্ত এলাকায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ও বৃষ্টির কারনে নিন্ম আয়ের মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। এছাড়াও জেলার প্রতিটি নদী দিয়ে পানি নিন্মাঞ্চলে প্রবল বেগে প্রবাহিত হওয়ায় ও সড়কে পানি উঠায় জেলা সদরের সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে উপজেলা গুলোর। এতে করে জেলা ও উপজেলা সদরে আসতে গিয়ে নৌকা দিয়ে পাড়া পাড় হতে হচ্ছে মানুষজনকে। নিন্মাঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ করতে হচ্ছে, বাজার গুলোতেও পানি উঠেছে। এদিকে পানি বৃদ্ধি পাওয়া জেলার ১৫টি কমিউনিটি ক্লিনিক পানিতে তলিয়ে গেছে।

তাহিরপুর উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের নয়াহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক এনামুল হক জানান, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলের পানির বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যালয়ের ভিতরে পানি প্রবেশ করায় পাঠ্যদান বন্ধ রয়েছে। ফলে বর্ষা ও পাহাড়ি ঢলের কারনে চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয় আমাদের।

তাহিরপুর উপজেলা থেকে জেলা সদর আসা শেফালী বেগম জানান, পানিতে সড়ক ডুবে যাওয়া দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সর্ব স্থরের মানুষকে। এক ঘন্টার যায়গায় তিন ঘন্টা সময় লাগছে জেলা শহরে আসতে গিয়ে। সড়ক পানিতে ডুবে যাওয়ার নৌকা দিয়ে পাড়ি দিতে হয়েছে।

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল জানান, টানা বৃষ্টি ও নেমে আসা পাহাড় ঢলের পানিতে উপজেলার আনোয়ারপুর এলাকা, তাহিরপুর বাদাঘাট সড়ক ও পাশ্ববর্তী উপজেলার শক্তিয়ারখলা বাজারে সামনে একশত মিটার (দূর্গাপুর) ও বাঘ মারা এলাকার সড়ক পানিতে ডুবে যাওয়ার যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে মানুষজন নৌকা দিয়ে চলাচল করছে।

কয়েকদিন ধরে সুনামগঞ্জ ও ভারতের মেঘালয়ে মাঝারি ও ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে সুনামগঞ্জের নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান, সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহুরুল ইসলাম। তিনি আর জানান, বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

ফের বন্যার আশঙ্কা সুনামগঞ্জে, পানিতে ডুবেছে সড়ক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

আপডেট টাইম : ১১:৫৮:১৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জুন ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গত কয়েকদিন দেশে ও ভারতের মেঘালয় চেরাপুঞ্জিতে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানিতে সুনামগঞ্জে নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলার সুরমা, কুশিয়ারা, যাদুকাটা, বৌলাই, রক্তি নদীসহ জেলার সব নদ-নদীর পানি বেড়েছে।

নদীর দু’কুল ছাপিয়ে পানি প্রবেশ করছে নদী তীরবর্তী বাড়ি ঘরে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার নিম্নাঞ্চলে আবারও বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পানিতে সড়ক ডুবে থাকায় জেলা সদরের সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে এছাড়াও নিন্মাঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে পানি উঠায় পাঠ্যদান বন্ধ রয়েছে। চরম দুর্ভোগে পরেছে দিনমজুর ও অসহায় গরীব মানুষ। সুরমা নদীর সুনামগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় কূল উপচে নিম্নাঞ্চলে ঢুকছে পানি। এতে নদী তীরের বাসিন্দারা দ্বিতীয় দফায় বন্যার আশঙ্কা করছেন।

এদিকে সোমবার সুনামগঞ্জ পৌর শহরের উত্তর আরপিন নগর, বড়পাড়া, সাহেববাড়ি ঘাট, পুরানপাড়া সড়কে পানি উঠে গেছে। এছাড়াও জানা যায়, জেলার তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, র্ধমপাশা, দিরাই, শাল্লা, জগন্নাথপুর উপজেলার নিন্মাঞ্চল ও সীমান্ত এলাকায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ও বৃষ্টির কারনে নিন্ম আয়ের মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। এছাড়াও জেলার প্রতিটি নদী দিয়ে পানি নিন্মাঞ্চলে প্রবল বেগে প্রবাহিত হওয়ায় ও সড়কে পানি উঠায় জেলা সদরের সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে উপজেলা গুলোর। এতে করে জেলা ও উপজেলা সদরে আসতে গিয়ে নৌকা দিয়ে পাড়া পাড় হতে হচ্ছে মানুষজনকে। নিন্মাঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ করতে হচ্ছে, বাজার গুলোতেও পানি উঠেছে। এদিকে পানি বৃদ্ধি পাওয়া জেলার ১৫টি কমিউনিটি ক্লিনিক পানিতে তলিয়ে গেছে।

তাহিরপুর উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের নয়াহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক এনামুল হক জানান, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলের পানির বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যালয়ের ভিতরে পানি প্রবেশ করায় পাঠ্যদান বন্ধ রয়েছে। ফলে বর্ষা ও পাহাড়ি ঢলের কারনে চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয় আমাদের।

তাহিরপুর উপজেলা থেকে জেলা সদর আসা শেফালী বেগম জানান, পানিতে সড়ক ডুবে যাওয়া দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সর্ব স্থরের মানুষকে। এক ঘন্টার যায়গায় তিন ঘন্টা সময় লাগছে জেলা শহরে আসতে গিয়ে। সড়ক পানিতে ডুবে যাওয়ার নৌকা দিয়ে পাড়ি দিতে হয়েছে।

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল জানান, টানা বৃষ্টি ও নেমে আসা পাহাড় ঢলের পানিতে উপজেলার আনোয়ারপুর এলাকা, তাহিরপুর বাদাঘাট সড়ক ও পাশ্ববর্তী উপজেলার শক্তিয়ারখলা বাজারে সামনে একশত মিটার (দূর্গাপুর) ও বাঘ মারা এলাকার সড়ক পানিতে ডুবে যাওয়ার যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে মানুষজন নৌকা দিয়ে চলাচল করছে।

কয়েকদিন ধরে সুনামগঞ্জ ও ভারতের মেঘালয়ে মাঝারি ও ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে সুনামগঞ্জের নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান, সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহুরুল ইসলাম। তিনি আর জানান, বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।