হাওর বার্তা ডেস্কঃ কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। গত ৩ দিন ধরে এই উপজেলার চার ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পনিবন্দি রয়েছেন।
এদিকে শাক-সবজি, মরিচ, কাউন, তিল, পাটসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। এছাড়া কাঁচা-পাকা সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থাও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের যাদুরচর গ্রামের বন্যা কবলিত আমেনা বেগম বলেন, ‘তিনদিন ধরে ঘরের ভেতরে পানি। রান্না করতে পারছি না। শুকনা খাবার যা ছিলো তা শেষের দিকে। পানির কারণে পুরো পরিবার সমস্যায় রয়েছে। পালিত গরু ছাগল নিয়েও বিপাকে পড়েছি আমরা।’
উপজেলার সদর ইউনিয়নের কৃষক সুজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমরা চরাঞ্চলে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করি। কিন্তু বন্যার পানিতে ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় সব শেষ হয়ে গেছে।’
এছাড়া এই উপজেলার ২১টি বিদ্যালয়ে পানি ঢুকে পড়ায় বন্ধ রয়েছে শিক্ষা কার্যক্রম। এ অবস্থায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন বন্যা কবলিত এলাকার শিক্ষার্থীরাও।
উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল্ল্যা জানান, ‘রৌমারী উপজেলার সব গুলো ইউনিয়নই বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এসব ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছেন। উপজেলা প্রশাসন থেকে বন্যা কবলিতদের সাহায্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন প্লাবিত হওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, ‘জরুরী ভিত্তিতে বন্যা কবলিতদের জন্য ৩ লাখ টাকার শুকনো খাবার সরবরাহের কাজ চলছে। আরো বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।’
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, উজানের পাহাড়ি ঢল ও অব্যাহত বৃষ্টির কারণে জিঞ্জিরাম, ধরনী ও কালজানি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে রৌমারী উপজেলায় প্রবেশ করেছে। ফলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ধরলা, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের পনি কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও এখনও বিপদসীমার নিচ রয়েছে।’