হাওর বার্তা ডেস্কঃ গাছ থেকে পেরে সরাসরি আনা হয়েছে বাজারে। সবুজ পাতায় ঢেকে রাখা হয়েছে উজ্জ্বল গোলাপি রঙের লিচু। চায়না থ্রি জাতের লিচুটি খেতেও বেশ রসাল।
জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে দিনাজপুরের বাজারে লিচুটির বিক্রি শুরু হয়। এখন চলছে শেষ সময়ের বেচাকেনা। দেখতে অনেকটা আপেল আকৃতির। গায়ে কাঁঠালের মতো আবরণ, তবে মসৃণ। বিচি একেবারেই ছোট।
দিনাজপুরে খুচরাতে প্রতি এক হাজার চায়না থ্রি আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ১৬ থেকে ১৮ হাজার টাকায়। সে হিসাবে প্রতি পিসের দাম পড়ে ১৬-১৮ টাকা। আর পাইকারিতে দাম পড়ছে ১২-১৪ হাজার টাকা।
আজ বুধবার দিনাজপুর শহরের গোর-এ-শহীদ ময়দানে লিচুর বাজার ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকে চলছে পাইকারদের হাঁকডাক। কৃষক লিচু আনছেন আড়তে। সেখান থেকে কিনছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।
গোর-এ-শহীদ ময়দান ছাড়াও বাহাদুর বাজার ও কালিতলা বাজারে খুচরায় লিচু বিক্রি হচ্ছে। নিজের খাওয়ার জন্য কিনছেন কেউ কেউ। কেউ ৫০০ থেকে ১ হাজার পিস পর্যন্ত কিনে বাক্সে ভরে ঢাকাসহ নানা জায়গায় স্বজনদের কাছে পাঠাচ্ছেন।
চায়না থ্রি ছাড়াও বুধবার বাজারে বোম্বাই লিচু বিক্রি হয়েছে প্রতি হাজার ২ হাজার ৬০০ থেকে ৩ হাজার টাকা। দেশি বেদানা প্রতি হাজার ৮ থেকে ১১ হাজার, হাঁড়িয়া বেদানা ৬ থেকে ৮ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। লিচুচাষিরা বলছেন, এক সপ্তাহের মধ্যে বাজারে আসবে মোজাফফরি লিচু।
বিরল উপজেলার লিচুচাষি শিশির শাহ বলেন, এবারে দাম ভালো পাওয়া গেল। কিন্তু ফলন কম হয়েছে। শুরুতে মুকুল বেশি ছিল। কিন্তু আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় মুকুল ঝরে যায়। আর চায়না থ্রি তো সোনার হরিণ হয়েছে। যাঁর গাছে আটকেছে, তিনি ভালো পয়সা পাবেন।
দিনাজপুর আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রাজিউর রহমান বলেন, এবার লিচুর চাহিদা বেশি। কয়েক দিন আগে আমদানি কিছুটা কম ছিল। হাঁড়িয়া বেদানা ও চায়না থ্রি বাজারে আসায় আমদানি কিছুটা বেড়েছে। বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা এসে লিচু নিয়ে যাচ্ছেন। বাজারের এই রমরমা অবস্থা সর্বোচ্চ আর দুই সপ্তাহ চলবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী দিনাজপুরে ৫ হাজার ৪৮১ হেক্টর জমিতে লিচুবাগান আছে ৫ হাজার ৪১৮টি। এর মধ্যে বোম্বাই লিচু ৩ হাজার ১৭০, মাদ্রাজি ১ হাজার ১৬৬, চায়না থ্রি ৭০২ দশমিক ৫ হেক্টরে চাষ হয়েছে।