হাওর বার্তা ডেস্কঃ দেশের সামুদ্রিক মাছের অন্যতম বড় পাইকারি বাজার পটুয়াখালীর আলীপুর ও মহিপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র। এখান থেকে বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ সড়ক পথে নিয়ে যাওয়া হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। গত কয়েক দশক সামুদ্রিক মাছের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এখান থেকে দেশ ও দেশের বাইরে মাছ বিক্রি করতে নিয়ে যান মৎস্য ব্যবসায়ীরা। তবে ফেরিঘাটে যানজটে আটকা পড়ে নষ্ট হয় মাছ, কমে যায় দামও। আবার সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারলে অপেক্ষা করতে হয় পরের দিন পর্যন্ত।
পদ্মা সেতু উদ্বোধন হলে আমুল পরিবর্তন আসবে মৎস্য ব্যবসায় যার সুফল পৌঁছাবে প্রান্তিক জেলে থেকে প্রতিটি মৎস্য ব্যবসায়ী পর্যন্ত। তাই আগামী ২৫ জুনের অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ।
মহিপুর মৎস্য বন্দরের আড়ৎদার আবু জাফর জানান, বর্তমানে আমরা যেভাবে মাছ পাঠাই তাতে মাঝে মাঝে ফেরি আটকে সময়মতো বাজার না পেলে অন্য বাজার খোঁজা লাগে। তাতে ইলিশসহ সব মাছেরই কালার নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া পচে যাওয়ায় দাম কম পাওয়ার মতো সমস্যাতেও পড়তে হয়। পদ্মা সেতু উদ্বোধন হলে এসব সমস্যা থেকে আমরা রেহাই পাবো। আমুল পরিবর্তন ঘটবে এই বন্দরে।
কলাপাড়া উপজেলা মাঝি সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. নুরু মাঝি জানান, শুধু পদ্মা সেতুর কারণে ১০-১৫ ঘণ্টার পথ ৪-৫ ঘণ্টায় চলে আসবে। তাই এই সুফল প্রান্তিক জেলে পর্যন্ত পৌঁছাবে। এতবড় সেতু বাংলাদেশে হবে এটা আমাদের কল্পনার বাইরে ছিল, তাই আমরা এখন আনন্দিত এবং গর্বিত।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, পটুয়াখালী জেলার বড় দুটি মৎস্য বন্দর আলীপুর-মহিপুর। এখানে গত ২০২০-২১ অর্থ বছরে প্রায় ৩৮ হাজার মেট্রিক টন মাছ বিক্রি হয়, যার মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিক টনই ছিল ইলিশ। উপজেলায় প্রায় নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত ৩০ হাজার জেলে রয়েছে, তাদের সবার ভাগ্যের বড় একটি পরিবর্তন আনতে পারে এই সেতু।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ.ম. রেজাউল করিম বলেন, বাংলাদেশে মাছের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এক সময় মাছের আকাল ছিল এখন কিন্তু মাছে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমরা বিশ্বের অনেক দেশে মাছ পাঠাতে পারবো। পদ্মা সেতুর কারণে এ এলাকায় মাছের প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প গড়ে উঠবে, ফলে এখান থেকে সরাসরি আমরা বিশ্বের প্রায় ৯০টি দেশে মাছ রপ্তানি করতে পারবো।