ঢাকা ০১:৫৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্ত্রীর দেওয়া লিভারে নতুন জীবন পেলেন স্বামী

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:১১:২০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জুন ২০২২
  • ১৩৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ফার্মেসি ব্যবসায়ী কাজল রায়ের (৫০) শরীরে বাসা বেঁধেছিল কঠিন ব্যাধি। তিন বছর আগে লিভারের দূরারোগ্য অসুখে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি।

সামর্থ্য ছিল না লিভার প্রতিস্থাপনের মত ব্যয়বহুল চিকিৎসার।

কঠিন বাস্তবতার এই সময়টিতে স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসায় ত্যাগের অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করলেন কাজলের অর্ধাঙ্গিনী মনিকা রায়। প্রিয়তমর জীবন বাঁচাতে নিজের লিভারের একটি অংশ স্বামীকে দান করলেন তিনি। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর এলাকায় প্রশংসায় ভাসছেন মনিকা।

মনিকা রায়ের স্বজন ও মাধবপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা সেলিনা আক্তার জানান, তিন বছর আগে মাধবপুর পৌরসভার রায়েরপাড়ার বাসিন্দা বজ্রলাল রায়ের ছেলে কাজল রায়ের লিভারে সমস্যা দেখা দিলে তিনি দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করান। কিন্তু সুস্থ হয়ে ওঠেননি। প্রায় ছয় মাস আগে কাজল রায় ভারতের হায়দারাবাদে অবস্থিত এআইজি হাসপাতালে গেলে চিকিৎসকরা তাকে লিভার প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন। এরপর আর কোনো উপায় না পেয়ে মনিকা রায়ের লিভার থেকে কিছু অংশ কেটে নিয়ে কাজলের লিভারে প্রতিস্থাপন করা হয়। প্রায় ১০ দিন আগে তারা দেশে ফিরেছেন এবং দু’জনই সুস্থ রয়েছেন।

মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) মো. তারেকুজ্জামান বলেন, রক্তের সম্পর্ক ছাড়া একজনের লিভারের সঙ্গে অন্যজনের লিভার ম্যাচ করা দুর্লভ। এই দম্পতির সৌভাগ্যের কারণেই হয়ত তাদের এই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটেছে।

এ বিষয়ে মাধবপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আলাউদ্দিন আল রনি বলেন, বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রীকে জড়িয়ে অসংখ্য নেতিবাচক খবর পাওয়া যাচ্ছে। সংকটের এই মুহূর্তে ইতিবাচক এই ঘটনাটি সমাজে ভালোবাসার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ফেসবুকে কাজল রায়ের স্ত্রীকে নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ প্রশংসা করছেন।

তিনি আরও জানান, কাজল রায় অসুস্থ হওয়ার পর থেকে তার মাধবপুর বাজারের রায় ফার্মেসিটিরও দেখাশোনা করে যাচ্ছেন মনিকা রায়।

এ ব্যাপারে কাজল রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার ও স্ত্রীর সুস্থতা কামনায় সবার আশির্বাদ কামনা করছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

স্ত্রীর দেওয়া লিভারে নতুন জীবন পেলেন স্বামী

আপডেট টাইম : ১০:১১:২০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জুন ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ফার্মেসি ব্যবসায়ী কাজল রায়ের (৫০) শরীরে বাসা বেঁধেছিল কঠিন ব্যাধি। তিন বছর আগে লিভারের দূরারোগ্য অসুখে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি।

সামর্থ্য ছিল না লিভার প্রতিস্থাপনের মত ব্যয়বহুল চিকিৎসার।

কঠিন বাস্তবতার এই সময়টিতে স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসায় ত্যাগের অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করলেন কাজলের অর্ধাঙ্গিনী মনিকা রায়। প্রিয়তমর জীবন বাঁচাতে নিজের লিভারের একটি অংশ স্বামীকে দান করলেন তিনি। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর এলাকায় প্রশংসায় ভাসছেন মনিকা।

মনিকা রায়ের স্বজন ও মাধবপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা সেলিনা আক্তার জানান, তিন বছর আগে মাধবপুর পৌরসভার রায়েরপাড়ার বাসিন্দা বজ্রলাল রায়ের ছেলে কাজল রায়ের লিভারে সমস্যা দেখা দিলে তিনি দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করান। কিন্তু সুস্থ হয়ে ওঠেননি। প্রায় ছয় মাস আগে কাজল রায় ভারতের হায়দারাবাদে অবস্থিত এআইজি হাসপাতালে গেলে চিকিৎসকরা তাকে লিভার প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন। এরপর আর কোনো উপায় না পেয়ে মনিকা রায়ের লিভার থেকে কিছু অংশ কেটে নিয়ে কাজলের লিভারে প্রতিস্থাপন করা হয়। প্রায় ১০ দিন আগে তারা দেশে ফিরেছেন এবং দু’জনই সুস্থ রয়েছেন।

মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) মো. তারেকুজ্জামান বলেন, রক্তের সম্পর্ক ছাড়া একজনের লিভারের সঙ্গে অন্যজনের লিভার ম্যাচ করা দুর্লভ। এই দম্পতির সৌভাগ্যের কারণেই হয়ত তাদের এই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটেছে।

এ বিষয়ে মাধবপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আলাউদ্দিন আল রনি বলেন, বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রীকে জড়িয়ে অসংখ্য নেতিবাচক খবর পাওয়া যাচ্ছে। সংকটের এই মুহূর্তে ইতিবাচক এই ঘটনাটি সমাজে ভালোবাসার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ফেসবুকে কাজল রায়ের স্ত্রীকে নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ প্রশংসা করছেন।

তিনি আরও জানান, কাজল রায় অসুস্থ হওয়ার পর থেকে তার মাধবপুর বাজারের রায় ফার্মেসিটিরও দেখাশোনা করে যাচ্ছেন মনিকা রায়।

এ ব্যাপারে কাজল রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার ও স্ত্রীর সুস্থতা কামনায় সবার আশির্বাদ কামনা করছেন।