ঢাকা ১০:১৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারতীয় জাত বিটল ছাগল পালনে আগ্রহী হচ্ছে মানুষ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:০৯:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জুন ২০২২
  • ১২৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশের আবহাওয়ায় ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল (Black Bengal) পালন করা হলেও এখন ভারতীয় জাত বিটল ছাগল পালনে আগ্রহী হচ্ছে মানুষ। ভারত ও পাকিস্তানের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছাগল এটি। জমুনাপুরী ছাগলের সাথে এর বেশ মিল রয়েছে। এরা অত্যন্ত দুধ উৎদনশীল প্রজাতির ছাগল। লাভ অত্যন্ত বেশি।

দুধ এবং মাংস, এই দুই-এর জন্য দেশে ছাগলের চাহিদা প্রচুর।  বিটল ছাগলের (Beetal Goat) চাহিদাও বাড়ছে একটু একটু করে। বেশি পরিমাণে দুধ এবং মাংসের জন্য এই জাতের ছাগল পালনে উৎসাহ প্রকাশ করছেন পশুপালকেরা। এ জাতটি নিজেদেরকে পরিবেশ এবং জলবায়ুর সাথে সহজেই খাপ খাওয়াতে পারে।

বিটল ছাগলের শারীরিক গঠন:
এদের শারীরিক গঠনের জন্য সহজেই এদের আলাদা করে চিনতে পারা যায়। এদের পা লম্বা, কান ঝোলানো প্রকৃতির। লেজও তুলনামূলকভাবে ছোট এবং এদের সিং মোড়ানো অবস্থায় থাকে। দৈর্ঘ্যে প্রায় ৮৬ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয় এই জাতের ছাগল। তাদের শরীর কম্প্যাক্ট এবং ভাল উন্নত। লম্বা আকারের পা এবং কান। Ears pendulous হয়। এ ছাগলের মাথা একটি রোমান নাক যুক্ত বৃহদায়তন এবং বিস্তৃত।

বিটল ছাগলের বৈশিষ্ট্য
এদের দুগ্ধ প্রদানের ক্ষমতা দৈনিক গড়ে প্রায় ২.৫ থেকে ৪ লিটার। ছেলে বিটল ছাগলের ওজন প্রায় ৫০-৬০ কেজি হয় এবং মেয়ে বিটল ছাগলের ওজন প্রায় ৩৫-৪০ কেজি পর্যন্ত হয়। মূলত খাদ্য হিসেবে চারণ ভূমি ব্যবহার করা হয়। এরা প্রায় সব ধরণের গাছপালা, পাতা, ঘাস খেয়ে থাকে। তবে বেশি দুধ এবং মাংসের জন্য সুষম এবং পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে এদের। মহিলা ছাগল ২০-২২ মাস বয়সে প্রথমবারের মতো বাচ্চাদের জন্ম দেয়।

বিটল ছাগলের ঘর
বিটল ছাগল সাধারণত শুষ্ক জায়গা পছন্দ করে। তাই ছাগলদের সুস্থ ও উৎদনশীল রাখার জন্য ছাগলটির ঘর সবসময় শুষ্ক ও পরিষ্কার রাখা অত্যন্ত জরুরী। সাধারণভাবে ছাগলটি দিনে এবং রাতে শুকনো এবং আরামদায়ক ঘরে রাখলে সেগুলি আরও বেশি উৎপাদন করবে।

বিটল ছাগলের পরিচর্যা
এদের ভালো রকম পরিচর্যার প্রয়োজন হয়। যদিও এরা সব ধরণের আবহাওয়াতে নিজেদের মানিয়ে নিতে সক্ষম৷ গর্ভবতী বিটল ছাগলকে (Beetal Goat) পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এবং শুকনো স্থানে রাখতে হয়। ৬-৮ সপ্তাহ আগে দুধ নেওয়া বন্ধ করে দিতে হয়। তাদের ভাল মানের ভাল সুষম ও পুষ্টিকর খাবার দরকার। তাদের খাদ্য প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট পর্যাপ্ত অনুপাত নিশ্চিত করতে হবে। পুষ্টিকর খাদ্যের পাশাপাশি তাদের নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিষ্কার ও তাজা পানি সরবরাহ করতে হবে।

বিটল ছাগলের বাচ্চার যত্ন
বাচ্চা জন্ম নেওয়ার পর স্বচ্ছ সূক্ষ্ম কাপড়ে তাকে পরিষ্কার করতে হবে। এর নাক, মুখ, কান-এর প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে। জন্মের পর যদি বাচ্চা শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে সমস্যা হয় বা এই জাতের ছাগলের কোনও রোগের উপসর্গ দেখা দেয় তাহলে দেরি না করে পশু চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত।

বিটল ছাগলের প্রজনন
একটি পুরুষ বিটাল ছাগল তাদের ১২-১৫ মাস বয়সে পরিপক্ক হয়ে ওঠে। এবং একটি ছাগী তাদের ২০-২২ মাস বয়সে প্রথম বাচ্চা প্রসব করে। প্রতি বছর ছাগী এক জোড়া করে বাচ্চা দেয়।

প্রসঙ্গত, বিটল ছাগলের দুধ উৎপাদন ক্ষমতা যেমন বেশি, তেমনই বেশি মাংসের জন্য এদের বাণিজ্যিক মূল্যও বেশ চড়া। তাই পশুপালকদের কাছে ধীরে ধীরে এই জাতের ছাগলের চাহিদা বাড়ছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ভারতীয় জাত বিটল ছাগল পালনে আগ্রহী হচ্ছে মানুষ

আপডেট টাইম : ১১:০৯:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জুন ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশের আবহাওয়ায় ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল (Black Bengal) পালন করা হলেও এখন ভারতীয় জাত বিটল ছাগল পালনে আগ্রহী হচ্ছে মানুষ। ভারত ও পাকিস্তানের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছাগল এটি। জমুনাপুরী ছাগলের সাথে এর বেশ মিল রয়েছে। এরা অত্যন্ত দুধ উৎদনশীল প্রজাতির ছাগল। লাভ অত্যন্ত বেশি।

দুধ এবং মাংস, এই দুই-এর জন্য দেশে ছাগলের চাহিদা প্রচুর।  বিটল ছাগলের (Beetal Goat) চাহিদাও বাড়ছে একটু একটু করে। বেশি পরিমাণে দুধ এবং মাংসের জন্য এই জাতের ছাগল পালনে উৎসাহ প্রকাশ করছেন পশুপালকেরা। এ জাতটি নিজেদেরকে পরিবেশ এবং জলবায়ুর সাথে সহজেই খাপ খাওয়াতে পারে।

বিটল ছাগলের শারীরিক গঠন:
এদের শারীরিক গঠনের জন্য সহজেই এদের আলাদা করে চিনতে পারা যায়। এদের পা লম্বা, কান ঝোলানো প্রকৃতির। লেজও তুলনামূলকভাবে ছোট এবং এদের সিং মোড়ানো অবস্থায় থাকে। দৈর্ঘ্যে প্রায় ৮৬ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয় এই জাতের ছাগল। তাদের শরীর কম্প্যাক্ট এবং ভাল উন্নত। লম্বা আকারের পা এবং কান। Ears pendulous হয়। এ ছাগলের মাথা একটি রোমান নাক যুক্ত বৃহদায়তন এবং বিস্তৃত।

বিটল ছাগলের বৈশিষ্ট্য
এদের দুগ্ধ প্রদানের ক্ষমতা দৈনিক গড়ে প্রায় ২.৫ থেকে ৪ লিটার। ছেলে বিটল ছাগলের ওজন প্রায় ৫০-৬০ কেজি হয় এবং মেয়ে বিটল ছাগলের ওজন প্রায় ৩৫-৪০ কেজি পর্যন্ত হয়। মূলত খাদ্য হিসেবে চারণ ভূমি ব্যবহার করা হয়। এরা প্রায় সব ধরণের গাছপালা, পাতা, ঘাস খেয়ে থাকে। তবে বেশি দুধ এবং মাংসের জন্য সুষম এবং পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে এদের। মহিলা ছাগল ২০-২২ মাস বয়সে প্রথমবারের মতো বাচ্চাদের জন্ম দেয়।

বিটল ছাগলের ঘর
বিটল ছাগল সাধারণত শুষ্ক জায়গা পছন্দ করে। তাই ছাগলদের সুস্থ ও উৎদনশীল রাখার জন্য ছাগলটির ঘর সবসময় শুষ্ক ও পরিষ্কার রাখা অত্যন্ত জরুরী। সাধারণভাবে ছাগলটি দিনে এবং রাতে শুকনো এবং আরামদায়ক ঘরে রাখলে সেগুলি আরও বেশি উৎপাদন করবে।

বিটল ছাগলের পরিচর্যা
এদের ভালো রকম পরিচর্যার প্রয়োজন হয়। যদিও এরা সব ধরণের আবহাওয়াতে নিজেদের মানিয়ে নিতে সক্ষম৷ গর্ভবতী বিটল ছাগলকে (Beetal Goat) পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এবং শুকনো স্থানে রাখতে হয়। ৬-৮ সপ্তাহ আগে দুধ নেওয়া বন্ধ করে দিতে হয়। তাদের ভাল মানের ভাল সুষম ও পুষ্টিকর খাবার দরকার। তাদের খাদ্য প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট পর্যাপ্ত অনুপাত নিশ্চিত করতে হবে। পুষ্টিকর খাদ্যের পাশাপাশি তাদের নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিষ্কার ও তাজা পানি সরবরাহ করতে হবে।

বিটল ছাগলের বাচ্চার যত্ন
বাচ্চা জন্ম নেওয়ার পর স্বচ্ছ সূক্ষ্ম কাপড়ে তাকে পরিষ্কার করতে হবে। এর নাক, মুখ, কান-এর প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে। জন্মের পর যদি বাচ্চা শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে সমস্যা হয় বা এই জাতের ছাগলের কোনও রোগের উপসর্গ দেখা দেয় তাহলে দেরি না করে পশু চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত।

বিটল ছাগলের প্রজনন
একটি পুরুষ বিটাল ছাগল তাদের ১২-১৫ মাস বয়সে পরিপক্ক হয়ে ওঠে। এবং একটি ছাগী তাদের ২০-২২ মাস বয়সে প্রথম বাচ্চা প্রসব করে। প্রতি বছর ছাগী এক জোড়া করে বাচ্চা দেয়।

প্রসঙ্গত, বিটল ছাগলের দুধ উৎপাদন ক্ষমতা যেমন বেশি, তেমনই বেশি মাংসের জন্য এদের বাণিজ্যিক মূল্যও বেশ চড়া। তাই পশুপালকদের কাছে ধীরে ধীরে এই জাতের ছাগলের চাহিদা বাড়ছে।