ঢাকা ১০:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অতিরিক্ত খাবার না কি জিনগত ত্রুটি, মোটা হওয়ার কারণ কী

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১১:৪২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ মে ২০২২
  • ১৩৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শুধু অতিরিক্ত বা অস্বাস্থ্যকর খাবার খেলেই শরীর স্থূল হয়ে যায়, ব্যপারটা তা নয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কোনো অসুখ যেমন এর জন্য দায়ী হতে পারে আবার কিছু মানুষের জন্মগতভাবেই ওজন বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকে। তাদের জিনেই ত্রুটি থাকে, ফলে তাদের পেটে প্রচুর খাবার থাকলেও তাদের মস্তিষ্ক বলতে থাকে যে তারা ক্ষুধার্ত।

সব সময় নিজেকে ক্ষুধার্ত মনে হয় এমন একজন হলেন কেভিন জ্যাকসন। নিজের পরিস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, আমি হয়তো পেট ভরে খেলাম, কিন্তু ৫-১০ মিনিট পরই আমার মনে হয় যেন আমি কিছুই খাইনি। ফলে আমার তখন একটা স্যান্ডউইচ খেতে হয়, তার আধা ঘণ্টা পরই এক বাটি সিরিয়াল, ঘুমাতে যাওয়ার আগে হয়তো আরও এক বাটি। না হলে আমাকে রাতে উঠে কিছু খেতে হবে।

এ বিষয়ে গবেষক ড. বিনীশ মাসুদ বলেন, এখানে কতজন জিনগত কারণে মোটা হচ্ছে এবং কতজন পারিপার্শ্বিক কারণে মোটা হচ্ছে তা বের করতে পারবো বলে আশা করছি। এতে বোঝা যাবে যে এটা কোনো দোষ নয়, বরং হরমোনগত সমস্যা। হরমোনের ভারসাম্যের অভাবেই তাদের অতিরিক্ত ক্ষুধা পাচ্ছে এবং তারা খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।

জিনগত স্থূলতা নিয়ে গবেষণায় এরই মধ্যে বিজ্ঞানীরা শত শত ডিএনএ নমুনা পরীক্ষা করেছেন। গত ২৫ বছরে বিজ্ঞানীরা এমন ৪০টি জিন চিহ্নিত করেছেন যা স্থূলতার সাথে সম্পর্কিত।

ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় একজন গবেষক অধ্যাপক সাদাফ ফারুকী বলেন, কিছু লোক আছে যারা অনেক খেতে পারে। কেউ কেউ যতই খাক-কখনোই মোটা হয় না। জিনের কারণেই এটা হয়। এসব জিনই আমাদের মস্তিষ্ক ও ক্ষুধাকে নিয়ন্ত্রণ করে। আগে ভাবা হতো, আমরা কতটা খাবো তা আমরাই নিয়ন্ত্রণ করি, আসলে ব্যাপারটা এত সরল নয়।

অধ্যাপক সাদাফ ফারুকী আরও বলেন, এই জিনগুলো এবং মস্তিষ্কের সার্কিটগুলো কিভাবে কাজ করে, তা অনেক দিন ধরেই আমরা জানার চেষ্টা করছি এবং এর ওষুধ কী হতে পারে তাও বের করার চেষ্টা করছি। এখন আমরা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছি যে এর নতুন কিছু চিকিৎসা বের হচ্ছে।

যারা স্থূলতার শিকার তাদের প্রায়ই সমাজে ভালো চোখে দেখা হয় না। মনে করা হয় মানুষ মোটা হয় তার নিজের দোষেই। কিন্তু বাস্তবতা হলো অনেক ক্ষেত্রেই কারণটা জিনগত।

আপনার কি মনে হয়, জিনগত কারণটা জানতে পারলে লোকে আপনার প্রতি সহানুভূতিশীল হবে? এর জবাবে কেভিন জ্যাকসন বলছেন, নিশ্চয়ই। আসল কারণটা জানতে পারলে সবাই বুঝবে যে এটা আমার দোষে হয়নি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

অতিরিক্ত খাবার না কি জিনগত ত্রুটি, মোটা হওয়ার কারণ কী

আপডেট টাইম : ১১:১১:৪২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ মে ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শুধু অতিরিক্ত বা অস্বাস্থ্যকর খাবার খেলেই শরীর স্থূল হয়ে যায়, ব্যপারটা তা নয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কোনো অসুখ যেমন এর জন্য দায়ী হতে পারে আবার কিছু মানুষের জন্মগতভাবেই ওজন বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকে। তাদের জিনেই ত্রুটি থাকে, ফলে তাদের পেটে প্রচুর খাবার থাকলেও তাদের মস্তিষ্ক বলতে থাকে যে তারা ক্ষুধার্ত।

সব সময় নিজেকে ক্ষুধার্ত মনে হয় এমন একজন হলেন কেভিন জ্যাকসন। নিজের পরিস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, আমি হয়তো পেট ভরে খেলাম, কিন্তু ৫-১০ মিনিট পরই আমার মনে হয় যেন আমি কিছুই খাইনি। ফলে আমার তখন একটা স্যান্ডউইচ খেতে হয়, তার আধা ঘণ্টা পরই এক বাটি সিরিয়াল, ঘুমাতে যাওয়ার আগে হয়তো আরও এক বাটি। না হলে আমাকে রাতে উঠে কিছু খেতে হবে।

এ বিষয়ে গবেষক ড. বিনীশ মাসুদ বলেন, এখানে কতজন জিনগত কারণে মোটা হচ্ছে এবং কতজন পারিপার্শ্বিক কারণে মোটা হচ্ছে তা বের করতে পারবো বলে আশা করছি। এতে বোঝা যাবে যে এটা কোনো দোষ নয়, বরং হরমোনগত সমস্যা। হরমোনের ভারসাম্যের অভাবেই তাদের অতিরিক্ত ক্ষুধা পাচ্ছে এবং তারা খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।

জিনগত স্থূলতা নিয়ে গবেষণায় এরই মধ্যে বিজ্ঞানীরা শত শত ডিএনএ নমুনা পরীক্ষা করেছেন। গত ২৫ বছরে বিজ্ঞানীরা এমন ৪০টি জিন চিহ্নিত করেছেন যা স্থূলতার সাথে সম্পর্কিত।

ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় একজন গবেষক অধ্যাপক সাদাফ ফারুকী বলেন, কিছু লোক আছে যারা অনেক খেতে পারে। কেউ কেউ যতই খাক-কখনোই মোটা হয় না। জিনের কারণেই এটা হয়। এসব জিনই আমাদের মস্তিষ্ক ও ক্ষুধাকে নিয়ন্ত্রণ করে। আগে ভাবা হতো, আমরা কতটা খাবো তা আমরাই নিয়ন্ত্রণ করি, আসলে ব্যাপারটা এত সরল নয়।

অধ্যাপক সাদাফ ফারুকী আরও বলেন, এই জিনগুলো এবং মস্তিষ্কের সার্কিটগুলো কিভাবে কাজ করে, তা অনেক দিন ধরেই আমরা জানার চেষ্টা করছি এবং এর ওষুধ কী হতে পারে তাও বের করার চেষ্টা করছি। এখন আমরা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছি যে এর নতুন কিছু চিকিৎসা বের হচ্ছে।

যারা স্থূলতার শিকার তাদের প্রায়ই সমাজে ভালো চোখে দেখা হয় না। মনে করা হয় মানুষ মোটা হয় তার নিজের দোষেই। কিন্তু বাস্তবতা হলো অনেক ক্ষেত্রেই কারণটা জিনগত।

আপনার কি মনে হয়, জিনগত কারণটা জানতে পারলে লোকে আপনার প্রতি সহানুভূতিশীল হবে? এর জবাবে কেভিন জ্যাকসন বলছেন, নিশ্চয়ই। আসল কারণটা জানতে পারলে সবাই বুঝবে যে এটা আমার দোষে হয়নি।