মাঝ আকাশে বিমান ফেলে ঝাঁপ! পাইলটের লাইসেন্স বাতিল

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ইউটিউবে দর্শক বাড়ানোর তাগিদ যে কী ভয়ংকর হতে পারে, সেটাই প্রমাণ করে দেখিয়েছেন এক ইউটিউবার। শুধুমাত্র দর্শক বাড়ানোর জন্য মাঝ আকাশে বিমানের ইঞ্জিন বন্ধ করে ঝাঁপ মারেন তিনি! তারপর শুরু হয় একটার পর একটা নাটক! তার এই কাণ্ডে ভিউয়ার বাড়লেও চটে আগুন তদন্তকারীরা। অভিযোগ প্রমাণ হতেই সেই ইউটিউবারের পাইলটের লাইসেন্স বাতিল করেছে প্রশাসন।

গত ডিসেম্বর মাসে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও পোস্ট করেন ট্রেভর জ্যাকব। তাতে দেখা যাচ্ছে, প্রথমে তিনি এক আসনের বিমানটির চালকের আসনে বসে রয়েছেন। বিমান তার স্বাভাবিক গতিতেই আকাশে উড়ছে। কিন্তু, হঠাই সেটির প্রপেলার কাজ করা বন্ধ করা দেয়! ট্রেভর অন্তত সেই সময় তেমনই দাবি করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তার বিমান মাঝ আকাশেই যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য স্তব্ধ হয়ে যায়। এরপর প্রাণ বাঁচাতেই বিমানের দরজা খুলে সটান নীচে ঝাঁপ মারেন তিনি। এবং হলিউড সিনেমার নায়েকর মতোই বেঁচে যান।

আর এখানেই সন্দেহ হয় তদন্তকারীদের। কারণ, ট্রেভর আগে থেকে প্যারাশুট পরেছিলেন। অর্থাৎ তিনি আগে থেকেই এমন কাণ্ড ঘটানোর জন্য প্রস্তুত ছিলেন। এবং তার বিমানের নানা অংশে স্বয়ংক্রিয় ক্যামেরা লাগানো ছিল। যাতে বিমানের নীচে এসে পড়ার দৃশ্য রেকর্ড করা যায়। এমনকী, ট্রেভরের নিজের শরীরেও আগে থেকেই ক্যামেরা লাগানো ছিল। তাতে তার পতনও সুন্দরভাবে রেকর্ড হয়েছিল। তদন্তকারীরা বুঝে যান, আসলে সমস্ত রকমের বন্দোবস্ত পাকা করেই সেদিন ক্যালিফোর্নিয়ার আকাশ উড়েছিলেন ট্রেভর।

নাটকের এখানেই শেষ নয়। আরও আছে। প্লেন ‘ক্র্যাশ’ হওয়ার পর এবং তারপরও দিব্যি বেঁচে থাকার পর লস প্যাড্রেস জাতীয় অরণ্যের মধ্যে দিয়ে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করেন ট্রেভস। তারপর তিনি অন্যদের ‘সাহায্যে’ আবার লোকালয়ে ফিরে আসেন! অতঃপর অনেক চেষ্টা করে ভেঙে পড়া বিমানটি খুঁজে পান! গোটা ঘটনা ক্যামেরাবন্দি করে ইউটিউবে পোস্ট করে দেন ট্রেভর। ‘ভিউ’ ওঠে হু হু করে। একইসঙ্গে, এমন ঘটনা নজর কাড়ে গোয়েন্দাদেরও।

আমেরিকার Federal Aviation Administration-এর কর্মকর্তারা ঘটনার তদন্ত শুরু করেন। কিছু দূর এগোনোর পরই তারা বুঝে যান, আদতে পুরোটাই ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। ট্রেভর জেনে-বুঝেই বিমানের প্রপেলার বন্ধ করে দিয়েছিলেন। ওই বিমানে আদৌ কোনও ত্রুটি ছিল না। এরপরই ট্রেভরের লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেইসঙ্গে, Federal Aviation Administration-এর পক্ষ থেকে তাকে কড়া ভাষায় একটি চিঠিও পাঠানো হয়। প্রসঙ্গত, ট্রেভর একসময় স্নোবোর্ডিং করতেন। ২০১৪ সালের অলিম্পিক্সেও অংশগ্রহণ করেছেন তিনি। সূত্র: দ্য টেলিগ্রাফ।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর