ঢাকা ০৫:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকার কাছেই মিষ্টি কুমড়ার হাট, দামেও সস্তা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫৫:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৮ এপ্রিল ২০২২
  • ১২৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ হঠাৎ দেখলে মনে হবে যেন মিষ্টি কুমড়ার কোন রাজ্যে এখানে। যাতায়াত ব্যবস্থাও অতটা ভালো নয়। মূল শহর থেকেও অনেক দূরে। তবে এখানেই গড়ে উঠেছে মিষ্টি কুমড়ার এক বিশাল হাট। যেখানে প্রতিদিন অন্তত লাখ খানেক কুমড়া বেচাকেনা হয়।

রাজধানীর অদূরে ধামরাইয়ের রোয়াইল ইউনিয়নের খড়ারচর বাজারে শুধু কুমড়া বেচাকেনার জন্যই গড়ে উঠেছে পাঁচটি আড়ত। এসব আড়তে ধামরাইসহ মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে কুমড়া নিয়ে আসেন ব্যাপারীরা। দিনভর নিলামে কেনাবেচা হয় শত শত কুমড়া। এই হাটের কুমড়া দিয়েই চাহিদা মেটে ঢাকা ও এর আশপাশের বাজার-আড়তগুলোতে।

সম্প্রতি বাজারটি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ধামরাইয়ের রোয়াইল ইউনিয়নজুড়ে বাড়ি বাড়ি যেমন কুমড়া আবাদ হয়; তেমনই উপজেলাজুড়েও প্রচুর চাষ হয়। এসব কুমড়া বেচাকেনার জন্য ধীরে ধীরে কৃষকরা প্রথমে এই বাজারটিতে ভিড় করতে শুরু করেন। আশপাশ থেকে ব্যবসায়ীরা কুমড়া কিনে ট্রাকে করে আশপাশের এলাকার বাজারগুলোতে নিয়ে যেতেন। পরে এখানে পরপর ৫টি আড়ত গড়ে ওঠে। এছাড়া কুমড়ার বাজার হিসেবেও প্রচার পায় এই বাজারটি।

বাজারটিতে গিয়ে দেখা যায়, একের পর এক ট্রাক, ভ্যানে করে কুমড়া নিয়ে আসছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। আড়তে সেসব কুমড়া আকার অনুযায়ী আলাদা আলাদা করে সাজিয়ে রাখছেন কর্মীরা। আরেকদিকে সাজিয়ে রাখা কুমড়ার দাম ধরে নিলামে ডাক তুলছেন ক্রেতারা। সেখানে ভিড় জমিয়েছেন অনেকেই।

আড়তদাররা জানান, উপজেলার এই বাজারে কুমড়া বিক্রিকে কেন্দ্র করে ৫টি আড়ত গড়ে ওঠেছে। একেকটি আড়তে গড়ে প্রতিদিন ২০-২৫ হাজার কুমড়া আসে। এসব কুমড়া ৫ টাকা থেকে শুরু করে ৮০-৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। এতে প্রতিদিন অন্তত একেকটি আড়তে ৪-৫ লাখ টাকার কুমড়া বিক্রি হয়। এতে মাসে প্রায় কোটি টাকার ক্রয়-বিক্রয় হয়ে থাকে।

কথা হয় কুমড়া নিয়ে আসা কয়েকজনের সঙ্গে। সিঙ্গাইর থেকে প্রায় ৩ হাজার পিস কুমড়া নিয়ে এক চাষি।

তিনি  বলেন, আমার ১০ বিঘা জমিতে কুমড়া চাষ করেছি। আশপাশে কুমড়ার বাজার সেভাবে নেই। এখানে নিয়ে আসলে দ্রুত বিক্রি হয়ে যায়। পুরো মৌসুমজুড়ে নিয়মিত তাই এখানে কুমড়া নিয়ে আসি।

সাভারের হোটেল ব্যবসায়ী  বলেন, টাটকা তাজা কুমড়া পাওয়ার জন্য এই বাজারের বিকল্প নেই। এজন্য নিয়মিত এখান থেকে কুমড়া কিনি।

একতা কাঁচা মালের আড়তের মালিক বলেন, এখানে প্রতিদিনই প্রচুর কুমড়া বিক্রি হয়। সাধারণভাবেই ৩ লাখ টাকার মতো কুমড়া বিক্রি হয়। বেশি হলে ৪-৫ লাখও বিক্রি হয়। এই বছর ফলন বেশি হওয়ায় প্রচুর কুমড়া আসছে। আর দূর-দূরান্তের ব্যবসায়ীরা আসায় কৃষকরা ভালো দাম পাচ্ছেন। এখানে কয়েকটা থানা ও অন্তত ২০-৩০টা গ্রামের কুমড়া নিয়ে আসা হয়।

রোয়াইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বলেন, বাজারটিতে দূর-দূরান্তের মানুষ আসতে শুরু করেছে। কুমড়ার হাট হিসেবে বহু জায়গায় পরিচিতিও পেয়েছে। এটাকে কেন্দ্র করে সুযোগ সুবিধা বাড়াতে আমরা ভূমিকা রাখছি।

ধামরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা  বলেন, ধামরাইতেই চলতি বছর ২৩৩ হেক্টর জমিতে ৯৩২০ মেট্রিক টন কুমড়া উৎপাদন হয়েছে। ফলে এটাকে কেন্দ্র করে বাজার গড়ে উঠারই কথা। কুমড়া বিক্রি করতে পেরে কৃষকরাও খুশি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ঢাকার কাছেই মিষ্টি কুমড়ার হাট, দামেও সস্তা

আপডেট টাইম : ১০:৫৫:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৮ এপ্রিল ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ হঠাৎ দেখলে মনে হবে যেন মিষ্টি কুমড়ার কোন রাজ্যে এখানে। যাতায়াত ব্যবস্থাও অতটা ভালো নয়। মূল শহর থেকেও অনেক দূরে। তবে এখানেই গড়ে উঠেছে মিষ্টি কুমড়ার এক বিশাল হাট। যেখানে প্রতিদিন অন্তত লাখ খানেক কুমড়া বেচাকেনা হয়।

রাজধানীর অদূরে ধামরাইয়ের রোয়াইল ইউনিয়নের খড়ারচর বাজারে শুধু কুমড়া বেচাকেনার জন্যই গড়ে উঠেছে পাঁচটি আড়ত। এসব আড়তে ধামরাইসহ মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে কুমড়া নিয়ে আসেন ব্যাপারীরা। দিনভর নিলামে কেনাবেচা হয় শত শত কুমড়া। এই হাটের কুমড়া দিয়েই চাহিদা মেটে ঢাকা ও এর আশপাশের বাজার-আড়তগুলোতে।

সম্প্রতি বাজারটি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ধামরাইয়ের রোয়াইল ইউনিয়নজুড়ে বাড়ি বাড়ি যেমন কুমড়া আবাদ হয়; তেমনই উপজেলাজুড়েও প্রচুর চাষ হয়। এসব কুমড়া বেচাকেনার জন্য ধীরে ধীরে কৃষকরা প্রথমে এই বাজারটিতে ভিড় করতে শুরু করেন। আশপাশ থেকে ব্যবসায়ীরা কুমড়া কিনে ট্রাকে করে আশপাশের এলাকার বাজারগুলোতে নিয়ে যেতেন। পরে এখানে পরপর ৫টি আড়ত গড়ে ওঠে। এছাড়া কুমড়ার বাজার হিসেবেও প্রচার পায় এই বাজারটি।

বাজারটিতে গিয়ে দেখা যায়, একের পর এক ট্রাক, ভ্যানে করে কুমড়া নিয়ে আসছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। আড়তে সেসব কুমড়া আকার অনুযায়ী আলাদা আলাদা করে সাজিয়ে রাখছেন কর্মীরা। আরেকদিকে সাজিয়ে রাখা কুমড়ার দাম ধরে নিলামে ডাক তুলছেন ক্রেতারা। সেখানে ভিড় জমিয়েছেন অনেকেই।

আড়তদাররা জানান, উপজেলার এই বাজারে কুমড়া বিক্রিকে কেন্দ্র করে ৫টি আড়ত গড়ে ওঠেছে। একেকটি আড়তে গড়ে প্রতিদিন ২০-২৫ হাজার কুমড়া আসে। এসব কুমড়া ৫ টাকা থেকে শুরু করে ৮০-৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। এতে প্রতিদিন অন্তত একেকটি আড়তে ৪-৫ লাখ টাকার কুমড়া বিক্রি হয়। এতে মাসে প্রায় কোটি টাকার ক্রয়-বিক্রয় হয়ে থাকে।

কথা হয় কুমড়া নিয়ে আসা কয়েকজনের সঙ্গে। সিঙ্গাইর থেকে প্রায় ৩ হাজার পিস কুমড়া নিয়ে এক চাষি।

তিনি  বলেন, আমার ১০ বিঘা জমিতে কুমড়া চাষ করেছি। আশপাশে কুমড়ার বাজার সেভাবে নেই। এখানে নিয়ে আসলে দ্রুত বিক্রি হয়ে যায়। পুরো মৌসুমজুড়ে নিয়মিত তাই এখানে কুমড়া নিয়ে আসি।

সাভারের হোটেল ব্যবসায়ী  বলেন, টাটকা তাজা কুমড়া পাওয়ার জন্য এই বাজারের বিকল্প নেই। এজন্য নিয়মিত এখান থেকে কুমড়া কিনি।

একতা কাঁচা মালের আড়তের মালিক বলেন, এখানে প্রতিদিনই প্রচুর কুমড়া বিক্রি হয়। সাধারণভাবেই ৩ লাখ টাকার মতো কুমড়া বিক্রি হয়। বেশি হলে ৪-৫ লাখও বিক্রি হয়। এই বছর ফলন বেশি হওয়ায় প্রচুর কুমড়া আসছে। আর দূর-দূরান্তের ব্যবসায়ীরা আসায় কৃষকরা ভালো দাম পাচ্ছেন। এখানে কয়েকটা থানা ও অন্তত ২০-৩০টা গ্রামের কুমড়া নিয়ে আসা হয়।

রোয়াইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বলেন, বাজারটিতে দূর-দূরান্তের মানুষ আসতে শুরু করেছে। কুমড়ার হাট হিসেবে বহু জায়গায় পরিচিতিও পেয়েছে। এটাকে কেন্দ্র করে সুযোগ সুবিধা বাড়াতে আমরা ভূমিকা রাখছি।

ধামরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা  বলেন, ধামরাইতেই চলতি বছর ২৩৩ হেক্টর জমিতে ৯৩২০ মেট্রিক টন কুমড়া উৎপাদন হয়েছে। ফলে এটাকে কেন্দ্র করে বাজার গড়ে উঠারই কথা। কুমড়া বিক্রি করতে পেরে কৃষকরাও খুশি।