ঢাকা ০৩:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাঘায় হলুদের বাম্পার ফলনে চাষিদের মুখে হাসি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:০৬:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ১২৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাজশাহীর বাঘায় হলুদের বাম্পার ফলন হয়েছে। হলুদ সংগ্রহ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাঘা উপজেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি হয়েছে উৎপাদন। এতে হাসি ফুটেছে চাষিদের মুখে।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ও বাজার এবং চাতাল ঘুরে দেখা যায়, মাঠে কৃষকরা হলুদ ওঠাতে ব্যস্ত। চাষিরা বিভিন্ন যানবাহনে করে বস্তা বস্তা হলুদ বাজারে বিক্রি করার জন্য নিয়ে আসছেন। ব্যবসায়ীরা কাঁচাহলুদ কিনে চাতালে সিদ্ধ করে শুকিয়ে সংরক্ষণ করতে শুরু করেছেন।

আড়ানী পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের গোচর মহল্লার হলুদচাষি মজবুল হোসেন, সেলিম উদ্দিন, হাফিজুল ইসলাম, আবুল কালাম আজাদ প্রায় একই রকম তথ্য দিয়ে জানান, উপজেলার পাবনা, গাঙ্গীয়া, সোনামুখী, ডিমলা বারী-১ প্রভৃতি জাতের হলুদ চাষ হয়। এ বছর গাঙ্গীয়া জাতের হলুদ ফলন ভালো হয়েছে। এ জাতের হলুদটি আকারে মোটা এবং রঙ অন্যান্য হলুদের তুলনায় ভালো। প্রতিবিঘা জমিতে ৫০-৫৫ মণ উৎপাদন হয় এটি।

বাজারে প্রতিমণ কাঁচাহলুদ বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে এক হাজার ২৫০ টাকা পর্যন্ত। হলুদ চাষে জৈব সার ব্যবহার হওয়ায় খরচ খুব কম হয়েছে। বিঘাপ্রতি সার ও বীজসহ খরচ হয় ৮০০ থেকে ১০ হাজার টাকা। এক বিঘা জমির কাঁচাহলুদ বিক্রি হচ্ছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকায়।

গোচর গ্রামের হানিফ আলী জানান, বাগানের ছায়াযুক্ত জমিতে হলুদ চাষ ভালো হয়। একসঙ্গে ফল ও হলুদ দুটো পাওয়া যায়।

হামিদকুড়া গ্রামের বিরাজ উদ্দিন জানান, এ বছর বীজের দাম বেশি হওয়ায় এবং রোপণের সময় বীজ সংকটের কারণে বেশি জমিতে আবাদ করা যায়নি। হলুদ উঠানোর সময় বীজ সংরক্ষণ করতে হয়। সরকারিভাবে বীজ সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হলে আগামীতে অনেক চাষি হলুদ চাষে আগ্রহী হবেন।

হলুদচাষি জহুরুল ইসলাম এ বছর আড়াই বিঘা জমিতে হলুদের চাষ করে ১০০ মণ হলুদ পেয়েছেন। হলুদ ব্যবসায়ী একরামুল হক জানান, আড়ানীর হলুদের সুনাম দেশব্যাপী রয়েছে। প্রতি সপ্তাহে শনি ও মঙ্গলবার হাটে হলুদ কিনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, বরিশাল, খুলনাসহ বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যায়।

আড়ানীর চাতাল ব্যবসায়ী রহমান বাবলু বলেন, উপজেলায় ছোট-বড় প্রায় পাঁচ শতাধিক চাতাল রয়েছে। কাঁচাহলুদ কিনে সিদ্ধ করে শুকিয়ে কিছু দিন ঘরে রেখে বিক্রি করি। বর্তমানে ৪০ কেজি শুকনা হলুদ তিন হাজার ৫০০ টাকা থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমার চাতালে রোজ প্রায় তিন হাজার মণ কাঁচাহলুদ কিনে সিদ্ধ করে শুকানো হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান জানান, এ বছর উপজেলায় সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে হলুদের চাষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা আট হাজার ৩০০ টন। উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে সাড়ে ১০ হাজার টন। উপজেলার পাশ দিয়ে বড়াল নদী বয়ে যাওয়ায় জমিতে বৃষ্টির পানি জমে থাকে না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বাঘায় হলুদের বাম্পার ফলনে চাষিদের মুখে হাসি

আপডেট টাইম : ০৩:০৬:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাজশাহীর বাঘায় হলুদের বাম্পার ফলন হয়েছে। হলুদ সংগ্রহ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাঘা উপজেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি হয়েছে উৎপাদন। এতে হাসি ফুটেছে চাষিদের মুখে।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ও বাজার এবং চাতাল ঘুরে দেখা যায়, মাঠে কৃষকরা হলুদ ওঠাতে ব্যস্ত। চাষিরা বিভিন্ন যানবাহনে করে বস্তা বস্তা হলুদ বাজারে বিক্রি করার জন্য নিয়ে আসছেন। ব্যবসায়ীরা কাঁচাহলুদ কিনে চাতালে সিদ্ধ করে শুকিয়ে সংরক্ষণ করতে শুরু করেছেন।

আড়ানী পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের গোচর মহল্লার হলুদচাষি মজবুল হোসেন, সেলিম উদ্দিন, হাফিজুল ইসলাম, আবুল কালাম আজাদ প্রায় একই রকম তথ্য দিয়ে জানান, উপজেলার পাবনা, গাঙ্গীয়া, সোনামুখী, ডিমলা বারী-১ প্রভৃতি জাতের হলুদ চাষ হয়। এ বছর গাঙ্গীয়া জাতের হলুদ ফলন ভালো হয়েছে। এ জাতের হলুদটি আকারে মোটা এবং রঙ অন্যান্য হলুদের তুলনায় ভালো। প্রতিবিঘা জমিতে ৫০-৫৫ মণ উৎপাদন হয় এটি।

বাজারে প্রতিমণ কাঁচাহলুদ বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে এক হাজার ২৫০ টাকা পর্যন্ত। হলুদ চাষে জৈব সার ব্যবহার হওয়ায় খরচ খুব কম হয়েছে। বিঘাপ্রতি সার ও বীজসহ খরচ হয় ৮০০ থেকে ১০ হাজার টাকা। এক বিঘা জমির কাঁচাহলুদ বিক্রি হচ্ছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকায়।

গোচর গ্রামের হানিফ আলী জানান, বাগানের ছায়াযুক্ত জমিতে হলুদ চাষ ভালো হয়। একসঙ্গে ফল ও হলুদ দুটো পাওয়া যায়।

হামিদকুড়া গ্রামের বিরাজ উদ্দিন জানান, এ বছর বীজের দাম বেশি হওয়ায় এবং রোপণের সময় বীজ সংকটের কারণে বেশি জমিতে আবাদ করা যায়নি। হলুদ উঠানোর সময় বীজ সংরক্ষণ করতে হয়। সরকারিভাবে বীজ সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হলে আগামীতে অনেক চাষি হলুদ চাষে আগ্রহী হবেন।

হলুদচাষি জহুরুল ইসলাম এ বছর আড়াই বিঘা জমিতে হলুদের চাষ করে ১০০ মণ হলুদ পেয়েছেন। হলুদ ব্যবসায়ী একরামুল হক জানান, আড়ানীর হলুদের সুনাম দেশব্যাপী রয়েছে। প্রতি সপ্তাহে শনি ও মঙ্গলবার হাটে হলুদ কিনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, বরিশাল, খুলনাসহ বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যায়।

আড়ানীর চাতাল ব্যবসায়ী রহমান বাবলু বলেন, উপজেলায় ছোট-বড় প্রায় পাঁচ শতাধিক চাতাল রয়েছে। কাঁচাহলুদ কিনে সিদ্ধ করে শুকিয়ে কিছু দিন ঘরে রেখে বিক্রি করি। বর্তমানে ৪০ কেজি শুকনা হলুদ তিন হাজার ৫০০ টাকা থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমার চাতালে রোজ প্রায় তিন হাজার মণ কাঁচাহলুদ কিনে সিদ্ধ করে শুকানো হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান জানান, এ বছর উপজেলায় সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে হলুদের চাষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা আট হাজার ৩০০ টন। উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে সাড়ে ১০ হাজার টন। উপজেলার পাশ দিয়ে বড়াল নদী বয়ে যাওয়ায় জমিতে বৃষ্টির পানি জমে থাকে না।