ঢাকা ০৬:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
ভারতে ১৩ বাংলাদেশি নাগরিক গ্রেপ্তার কবরের পাশে দিন-রাত বসে থাকি, ছেলে ফিরে আসে না সংস্কার না করলে শহীদদের রক্তের সঙ্গে অন্যায় করা হবে : উপদেষ্টা সাখাওয়াত কাকে ‘ননসেন্স’ বললেন বুবলী ভোটার হওয়ার ন্যূনতম বয়সসীমা প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে আপত্তি বিএনপি মহাসচিবের সচিবালয়ে প্রবেশে অস্থায়ী পাসের ব্যাপারে বিশেষ সেল গঠন জর্জিনাকে ‘স্ত্রী’ সম্বোধন, তবে কি বিয়েটা সেরেই ফেলেছেন রোনালদো ৩১ ডিসেম্বর আসছে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণা মহাখালীতে আবাসিক ভবনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২ ইউনিট ভোটার হওয়ার ন্যূনতম বয়সসীমা প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে আপত্তি বিএনপি মহাসচিবের

নতুন দেশি মুরগি উদ্ভাবন, ৮ সপ্তাহে এক কেজি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:০১:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ১৪২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বর্তমানে মুরগির মাংস আসে বাণিজ্যিক ব্রয়লার থেকে। মাংস উৎপাদনকারী এ ব্রয়লার মুরগি ৩০ থেকে ৩২ দিনে ১ কেজি ওজনের হয়। অন্যদিকে নতুন দেশি মুরগি উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই)। যা ৮ সপ্তাহে কেজি হয়।

দেশীয় আবহাওয়ার উপযোগী মুরগির এই জাতটির নামকরণ করা হয়েছে ‘মাল্টি কালার টেবিল চিকেন (এমসিটিসি)’। মাত্র ৮ সপ্তাহেই এ মুরগির গড় ওজন হয় প্রায় এক কেজি। মুরগির এ জাতটি যেমন রোগ-বালাই সহিষ্ণু, তেমনি দ্রুত বর্ধনশীল। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এ জাতটির বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়েছে। সেখানেও আশানুরূপ উৎপাদন মিলেছে। এ কারণে এতে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিএলআরআই জানায়, দেশীয় জার্মপ্লাজম ব্যবহার করে অধিক মাংস উৎপাদনকারী মুরগির জাত উদ্ভাবন করেছে। নতুন জাতের এ মুরগির মাংস স্বাদে দেশি মুরগির মতো। আবার ওজন এবং বৃদ্ধিও হবে তুলনামূলক অনেক বেশি। ফলে এ জাতের মুরগি একদিকে যেমন আমিষের চাহিদা পূরণ করবে তেমনি লাখো মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও হবে।

গবেষণা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সময়ের সঙ্গে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে। এ কারণে বাড়ছে আমিষের চাহিদাও। সরকারের ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নের জন্য দৈনিক ৩৫-৪০ হাজার মেট্রিক টন মুরগির মাংস উৎপাদন করা প্রয়োজন। জলবায়ুর ক্রমাগত পরিবর্তনের কারণে দেশি আবহাওয়া উপযোগী, দেশীয় জাতের অধিক মাংস উৎপাদনকারী মুরগির জাত উদ্ভাবন করাও ছিল জরুরি। সব দিক বিবেচনায় এমসিটিসি ব্যাপক কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

গবেষণায় দেখা গেছে, আট সপ্তাহ পর্যন্ত এক হাজার এমসিটিসি জাতের মুরগির এক ব্যাচ লালন-পালন করে বাজার মূল্যভেদে প্রায় ৪৫-৬০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। বছরে অন্তত চারটি ব্যাচ পালন করলে এক লাখ ৮০ হাজার থেকে দুই লাখ ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব। এছাড়া এমসিটিসি জাতের মুরগিগুলো মাংসের স্বাদ ও পালকের রং দেশি মুরগির মতো হওয়ায় খামারিরা প্রচলিত সোনালি বা অন্যান্য কক মুরগির চাইতে বেশি দাম পাবেন।

নতুন উদ্ভাবিত মাংসল জাতের এমসিটিসি মুরগির একদিন বয়সে হালকা হলুদ থেকে হলুদাভ, কালো বা ধূসর রংয়ের পালক দেখা যায়। পরবর্তীতে সেগুলো দেশি মুরগির মতো মিশ্র রংয়ের হয়ে থাকে। এগুলোর ঝুঁটির রং গাঢ় লাল এবং একক ধরনের। চামড়ার রং সাদাটে এবং গলার পালক স্বাভাবিকভাবে বিন্যস্ত।

গবেষণার ফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আট সপ্তাহে এমসিটিসি মুরগির গড় ওজন ৯৭৫ গ্রাম থেকে এক কেজি হয়। এই ওজন হতে প্রতিটি মুরগি প্রায় ২ দশমিক ২০ থেকে ২ দশমিক ৪০ কেজি খাবার খায়। আবার এ জাতের মুরগির মৃত্যুর হারও খুব কম। বিএলআরআই পরিচালিত বিভিন্ন গবেষণায় সর্বোচ্চ ১ দশমিক ৫ শতাংশ মৃত্যুহার পাওয়া গেছে। এই জাতের মুরগি অধিক রোগ প্রতিরোধক্ষম। আবার দেশীয় আবহাওয়া উপযোগী হওয়ায় সঠিক বায়োসিকিউরিটি এবং প্রতিপালন ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পারলে রোগ-বালাই হয় না বললেই চলে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সব দিক বিবেচনা করে গত বছরের (২০২০) সালের জুন মাস থেকেই এমসিটিসি বাচ্চার বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়েছে। বর্তমানে সারাদেশে খামারি পর্যায়ে ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হচ্ছে। নতুন উদ্ভাবিত মাংসল জাতের মুরগি খামারি পর্যায়ে সম্প্রসারণ সফলভাবে করতে পারলে একদিকে স্বল্পমূল্যে প্রান্তিক খামারিরা বেশি মাংস উৎপাদনকারী জাতের বাচ্চা পাবেন, অন্যদিকে আমদানি নির্ভরশীলতা অনেকাংশেই হ্রাস পাবে। একই সঙ্গে মুরগির বাচ্চা ও মাংসের বাজারমূল্যের উত্থান-পতন নিয়ন্ত্রণও সম্ভব হবে।

বিএলআরআইয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা  বলেন, ২০১৪ সালে এমসিটিসি নিয়ে গবেষণা শুরু হয়। আমরা অলরেডি অনেকগুলো ধাপ পার করেছি, আমাদের রেজাল্টের ধারাবাহিকতার জন্য। আমরা মোটামুটি ভালো রেজাল্ট পাওয়ার পর ক্ষুদ্র খামারিদের মধ্যে ট্রায়াল করেছি। পরবর্তীতে বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান আগ্রহ প্রকাশ করায় আমরা আফতাব বহুমুখী ফার্মের সঙ্গে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করি।

তিনি বলেন, গত দুই বছর ধরে তাদের সঙ্গে কাজ করছি এমসিটিসি নিয়ে। তাদের ওখানেও ভালো ফলাফল আসছে। তারা বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনও করছে। প্রত্যেক সপ্তাহে তাদের ১০ থেকে ১২ হাজার বাচ্চা হচ্ছে। সামনে আরেও বৃহৎ আঙ্গিকে তারা শুরু করবে।

আরও অনেক কোম্পানি আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং অনেকে আবেদনও করেছে বলে জানান বিএলআরআইয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা।

স্বাদ, উৎপাদন এবং বাজার দর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এমসিটিসি দেশি জাত ব্যবহার করে করা হয়েছে। এর স্বাদ দেশি মুরগির মতো। আট সপ্তাহে এক কেজি ওজন আসে। এর খাদ্য রূপান্তর দক্ষতা ভালো। গ্রামীণ পরিবেশে এটি পালন উপযোগী। বিশেষ করে গরমে বা পরিবেশের কারণে অন্যান্য পাখির যে মৃত্যুর হার, সে তুলনায় এই মুরগির মৃত্যুর হার অনেক কম। স্বাদ ভালো তাই ভোক্তার আগ্রহ আছে। বাজার যখন স্বাভাবিক ছিল তখন খামারিরা ২৪০-২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছে। তবে এখন অনেক দাম বেশি।

বিএলআরআইয়ের মহাপরিচালক  বলেন, এখন আমরা ডিম দিচ্ছি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে। তারা কিন্তু মেইনলি এটি বিস্তারের কাজটি করবে। তাদের আমরা ডিম দিচ্ছি সারাদেশে চারটি ফার্মের জন্য। সেগুলো হলো- যশোর, সাভার, বরিশাল, চট্টগ্রাম ফার্ম, এগুলো সব সরকারি ফার্ম। প্রাইভেট সেক্টরের জন্য তারা এগুলোর বাচ্চা ফোটাবে তারপর খামারিদের দেবে। সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং বিষয় হলো মাত্র ৫৬ দিনে ১ কেজি ওজন হবে। এটা খুবই সম্ভবনাময়, এবং এটা হবেই। এই মুরগির টেস্ট হবে দেশি মুরগির মতো।

এ জাতের মুরগির দাম কেমন হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ মুরগির দাম একটু কমই হবে। তবে ব্রয়লার মুরগির চেয়ে বেশি হবে। কিন্তু টেস্ট দেশি মুরগির মতই হবে। এখন সাভার ফার্মে গেলে বাচ্চা পাওয়া যাবে। ২০২২ সাল থেকে এই জাতের মুরগি বাজারে পাওয়া যাবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ভারতে ১৩ বাংলাদেশি নাগরিক গ্রেপ্তার

নতুন দেশি মুরগি উদ্ভাবন, ৮ সপ্তাহে এক কেজি

আপডেট টাইম : ১০:০১:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বর্তমানে মুরগির মাংস আসে বাণিজ্যিক ব্রয়লার থেকে। মাংস উৎপাদনকারী এ ব্রয়লার মুরগি ৩০ থেকে ৩২ দিনে ১ কেজি ওজনের হয়। অন্যদিকে নতুন দেশি মুরগি উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই)। যা ৮ সপ্তাহে কেজি হয়।

দেশীয় আবহাওয়ার উপযোগী মুরগির এই জাতটির নামকরণ করা হয়েছে ‘মাল্টি কালার টেবিল চিকেন (এমসিটিসি)’। মাত্র ৮ সপ্তাহেই এ মুরগির গড় ওজন হয় প্রায় এক কেজি। মুরগির এ জাতটি যেমন রোগ-বালাই সহিষ্ণু, তেমনি দ্রুত বর্ধনশীল। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এ জাতটির বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়েছে। সেখানেও আশানুরূপ উৎপাদন মিলেছে। এ কারণে এতে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিএলআরআই জানায়, দেশীয় জার্মপ্লাজম ব্যবহার করে অধিক মাংস উৎপাদনকারী মুরগির জাত উদ্ভাবন করেছে। নতুন জাতের এ মুরগির মাংস স্বাদে দেশি মুরগির মতো। আবার ওজন এবং বৃদ্ধিও হবে তুলনামূলক অনেক বেশি। ফলে এ জাতের মুরগি একদিকে যেমন আমিষের চাহিদা পূরণ করবে তেমনি লাখো মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও হবে।

গবেষণা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সময়ের সঙ্গে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে। এ কারণে বাড়ছে আমিষের চাহিদাও। সরকারের ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নের জন্য দৈনিক ৩৫-৪০ হাজার মেট্রিক টন মুরগির মাংস উৎপাদন করা প্রয়োজন। জলবায়ুর ক্রমাগত পরিবর্তনের কারণে দেশি আবহাওয়া উপযোগী, দেশীয় জাতের অধিক মাংস উৎপাদনকারী মুরগির জাত উদ্ভাবন করাও ছিল জরুরি। সব দিক বিবেচনায় এমসিটিসি ব্যাপক কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

গবেষণায় দেখা গেছে, আট সপ্তাহ পর্যন্ত এক হাজার এমসিটিসি জাতের মুরগির এক ব্যাচ লালন-পালন করে বাজার মূল্যভেদে প্রায় ৪৫-৬০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। বছরে অন্তত চারটি ব্যাচ পালন করলে এক লাখ ৮০ হাজার থেকে দুই লাখ ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব। এছাড়া এমসিটিসি জাতের মুরগিগুলো মাংসের স্বাদ ও পালকের রং দেশি মুরগির মতো হওয়ায় খামারিরা প্রচলিত সোনালি বা অন্যান্য কক মুরগির চাইতে বেশি দাম পাবেন।

নতুন উদ্ভাবিত মাংসল জাতের এমসিটিসি মুরগির একদিন বয়সে হালকা হলুদ থেকে হলুদাভ, কালো বা ধূসর রংয়ের পালক দেখা যায়। পরবর্তীতে সেগুলো দেশি মুরগির মতো মিশ্র রংয়ের হয়ে থাকে। এগুলোর ঝুঁটির রং গাঢ় লাল এবং একক ধরনের। চামড়ার রং সাদাটে এবং গলার পালক স্বাভাবিকভাবে বিন্যস্ত।

গবেষণার ফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আট সপ্তাহে এমসিটিসি মুরগির গড় ওজন ৯৭৫ গ্রাম থেকে এক কেজি হয়। এই ওজন হতে প্রতিটি মুরগি প্রায় ২ দশমিক ২০ থেকে ২ দশমিক ৪০ কেজি খাবার খায়। আবার এ জাতের মুরগির মৃত্যুর হারও খুব কম। বিএলআরআই পরিচালিত বিভিন্ন গবেষণায় সর্বোচ্চ ১ দশমিক ৫ শতাংশ মৃত্যুহার পাওয়া গেছে। এই জাতের মুরগি অধিক রোগ প্রতিরোধক্ষম। আবার দেশীয় আবহাওয়া উপযোগী হওয়ায় সঠিক বায়োসিকিউরিটি এবং প্রতিপালন ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পারলে রোগ-বালাই হয় না বললেই চলে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সব দিক বিবেচনা করে গত বছরের (২০২০) সালের জুন মাস থেকেই এমসিটিসি বাচ্চার বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়েছে। বর্তমানে সারাদেশে খামারি পর্যায়ে ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হচ্ছে। নতুন উদ্ভাবিত মাংসল জাতের মুরগি খামারি পর্যায়ে সম্প্রসারণ সফলভাবে করতে পারলে একদিকে স্বল্পমূল্যে প্রান্তিক খামারিরা বেশি মাংস উৎপাদনকারী জাতের বাচ্চা পাবেন, অন্যদিকে আমদানি নির্ভরশীলতা অনেকাংশেই হ্রাস পাবে। একই সঙ্গে মুরগির বাচ্চা ও মাংসের বাজারমূল্যের উত্থান-পতন নিয়ন্ত্রণও সম্ভব হবে।

বিএলআরআইয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা  বলেন, ২০১৪ সালে এমসিটিসি নিয়ে গবেষণা শুরু হয়। আমরা অলরেডি অনেকগুলো ধাপ পার করেছি, আমাদের রেজাল্টের ধারাবাহিকতার জন্য। আমরা মোটামুটি ভালো রেজাল্ট পাওয়ার পর ক্ষুদ্র খামারিদের মধ্যে ট্রায়াল করেছি। পরবর্তীতে বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান আগ্রহ প্রকাশ করায় আমরা আফতাব বহুমুখী ফার্মের সঙ্গে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করি।

তিনি বলেন, গত দুই বছর ধরে তাদের সঙ্গে কাজ করছি এমসিটিসি নিয়ে। তাদের ওখানেও ভালো ফলাফল আসছে। তারা বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনও করছে। প্রত্যেক সপ্তাহে তাদের ১০ থেকে ১২ হাজার বাচ্চা হচ্ছে। সামনে আরেও বৃহৎ আঙ্গিকে তারা শুরু করবে।

আরও অনেক কোম্পানি আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং অনেকে আবেদনও করেছে বলে জানান বিএলআরআইয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা।

স্বাদ, উৎপাদন এবং বাজার দর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এমসিটিসি দেশি জাত ব্যবহার করে করা হয়েছে। এর স্বাদ দেশি মুরগির মতো। আট সপ্তাহে এক কেজি ওজন আসে। এর খাদ্য রূপান্তর দক্ষতা ভালো। গ্রামীণ পরিবেশে এটি পালন উপযোগী। বিশেষ করে গরমে বা পরিবেশের কারণে অন্যান্য পাখির যে মৃত্যুর হার, সে তুলনায় এই মুরগির মৃত্যুর হার অনেক কম। স্বাদ ভালো তাই ভোক্তার আগ্রহ আছে। বাজার যখন স্বাভাবিক ছিল তখন খামারিরা ২৪০-২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছে। তবে এখন অনেক দাম বেশি।

বিএলআরআইয়ের মহাপরিচালক  বলেন, এখন আমরা ডিম দিচ্ছি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে। তারা কিন্তু মেইনলি এটি বিস্তারের কাজটি করবে। তাদের আমরা ডিম দিচ্ছি সারাদেশে চারটি ফার্মের জন্য। সেগুলো হলো- যশোর, সাভার, বরিশাল, চট্টগ্রাম ফার্ম, এগুলো সব সরকারি ফার্ম। প্রাইভেট সেক্টরের জন্য তারা এগুলোর বাচ্চা ফোটাবে তারপর খামারিদের দেবে। সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং বিষয় হলো মাত্র ৫৬ দিনে ১ কেজি ওজন হবে। এটা খুবই সম্ভবনাময়, এবং এটা হবেই। এই মুরগির টেস্ট হবে দেশি মুরগির মতো।

এ জাতের মুরগির দাম কেমন হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ মুরগির দাম একটু কমই হবে। তবে ব্রয়লার মুরগির চেয়ে বেশি হবে। কিন্তু টেস্ট দেশি মুরগির মতই হবে। এখন সাভার ফার্মে গেলে বাচ্চা পাওয়া যাবে। ২০২২ সাল থেকে এই জাতের মুরগি বাজারে পাওয়া যাবে।