ঢাকা ০২:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিলাল তালুকদারের একমাত্র আশ্রয় বীরনিবাসের ঘরটিও ভেঙ্গে পড়েছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৩৯:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ১২৭ বার
বিজয় দাস,নেত্রকোনা প্রতিনিধিঃ আমার স্বামী বীর মুক্তিযোদ্ধার জীবন কাটছে মানুষের বাড়িতে কাজ করে। আমিও সাথে সাথে সারা জীবন কাটাইছি অন্যের বাড়ির ছনের চাউনি ও পাটকুড়ির বেড়ার ঘরে। স্বামী মুক্তিযুদ্ধ করছিন বলেই শেষ বয়সে একটা ঘর হাইছি হেইডাও ভাইঙা গেছে। বীর নিবাসের ভাঙা ঘর দেখিয়ে কথাগুলো বলছিলেন নেত্রকোনার মদন উপজেলার মাঘান ইউনিয়নের মান্দাউরা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিলাল তালুকদারের স্ত্রী নয়ন তারা।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মান্দাউরা গ্রামের মৃত সুরেন্দ্র তালুকদারে ছেলে মতিলাল। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। পৈত্রিক কোনো সম্পত্তি না থাকায় কয়েকযুগ কাটিয়েছেন অন্যের বাড়িতে। তারই সহদোর বড় ভাই গীরন্দ্র তালুকদারের আশ্রয় মিলেছে ছত্রমপুর গুচ্ছ গ্রামে। একটি বোনও ছিল তার। দীর্ঘদিন আগে বোনও ভারত চলে গেছেন।

মহান মুক্তিযুদ্ধে বিরোচিত অবদানের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওয়াত প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার বীর নিবাস বরাদ্দ পায় মতিলাল। কিন্তু ঘর নির্মাণ  করার বছর ঘুরতেই সামনের অংশ ভেঙে যায়। প্রত্যন্ত হাওরাঞ্চলে মতিলালের বীর নিবাসের তেমন কোন খোজও রাখেনি সংশ্লিষ্টরা।

বীর নিবাসের ঘরে লাগানো নেইম প্লেইটে তথ্যনুযায়ী দেখা যায় কাজটি বাস্তবায়ন করেন এলজিইডি। কোনো অর্থ বছরে ঘরটি বরাদ্দ বা নির্মাণ করা হয়েছে নেইম প্লেইটে এর কোন তথ্যও দেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে মদন এলজিইডি অফিসে বেশ কয়েকদিন ঘুরেও কোন রকম তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে মদন উপজেলায় এই বীর নিবাস প্রকল্পের বরাদ্দ হয় বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিলাল তালুকদার জানান, আমার বাবার কোন জমি নেই। বড় ভাই থাকেন গুচ্ছগ্রামে। ১০ শতাংশ জমি কিনে ঘরের জন্য আবেদন করার পর ঘর পেয়েছি। তিন বছর আগে সরকার আমারে ঘর করে দিয়েছে। ঘরের দরজাগুলো ভাল করে লাগানো হয়নি তাই টিন দিয়ে কোন রকম আটকে রাখছি। ঘরের কাজ ভাল হয়নি তাই নির্মাণ করার কিছু দিন পরেই সামনের অংশ ভেঙে পরে গেছে। এ বিষয়ে কেউ কোন খোজ খবরও নেয়নি।

মদন উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া পিয়েল জানান, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। বীর নিবাসের ভাঙা ঘরটির খোজ নিয়ে দেখবো।

মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলেন, বীর নিবাসের ঘর ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে ভেঙে যাওয়ার ঘরটির খোজ নিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিলাল তালুকদারের একমাত্র আশ্রয় বীরনিবাসের ঘরটিও ভেঙ্গে পড়েছে

আপডেট টাইম : ১১:৩৯:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২২
বিজয় দাস,নেত্রকোনা প্রতিনিধিঃ আমার স্বামী বীর মুক্তিযোদ্ধার জীবন কাটছে মানুষের বাড়িতে কাজ করে। আমিও সাথে সাথে সারা জীবন কাটাইছি অন্যের বাড়ির ছনের চাউনি ও পাটকুড়ির বেড়ার ঘরে। স্বামী মুক্তিযুদ্ধ করছিন বলেই শেষ বয়সে একটা ঘর হাইছি হেইডাও ভাইঙা গেছে। বীর নিবাসের ভাঙা ঘর দেখিয়ে কথাগুলো বলছিলেন নেত্রকোনার মদন উপজেলার মাঘান ইউনিয়নের মান্দাউরা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিলাল তালুকদারের স্ত্রী নয়ন তারা।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মান্দাউরা গ্রামের মৃত সুরেন্দ্র তালুকদারে ছেলে মতিলাল। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। পৈত্রিক কোনো সম্পত্তি না থাকায় কয়েকযুগ কাটিয়েছেন অন্যের বাড়িতে। তারই সহদোর বড় ভাই গীরন্দ্র তালুকদারের আশ্রয় মিলেছে ছত্রমপুর গুচ্ছ গ্রামে। একটি বোনও ছিল তার। দীর্ঘদিন আগে বোনও ভারত চলে গেছেন।

মহান মুক্তিযুদ্ধে বিরোচিত অবদানের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওয়াত প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার বীর নিবাস বরাদ্দ পায় মতিলাল। কিন্তু ঘর নির্মাণ  করার বছর ঘুরতেই সামনের অংশ ভেঙে যায়। প্রত্যন্ত হাওরাঞ্চলে মতিলালের বীর নিবাসের তেমন কোন খোজও রাখেনি সংশ্লিষ্টরা।

বীর নিবাসের ঘরে লাগানো নেইম প্লেইটে তথ্যনুযায়ী দেখা যায় কাজটি বাস্তবায়ন করেন এলজিইডি। কোনো অর্থ বছরে ঘরটি বরাদ্দ বা নির্মাণ করা হয়েছে নেইম প্লেইটে এর কোন তথ্যও দেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে মদন এলজিইডি অফিসে বেশ কয়েকদিন ঘুরেও কোন রকম তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে মদন উপজেলায় এই বীর নিবাস প্রকল্পের বরাদ্দ হয় বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিলাল তালুকদার জানান, আমার বাবার কোন জমি নেই। বড় ভাই থাকেন গুচ্ছগ্রামে। ১০ শতাংশ জমি কিনে ঘরের জন্য আবেদন করার পর ঘর পেয়েছি। তিন বছর আগে সরকার আমারে ঘর করে দিয়েছে। ঘরের দরজাগুলো ভাল করে লাগানো হয়নি তাই টিন দিয়ে কোন রকম আটকে রাখছি। ঘরের কাজ ভাল হয়নি তাই নির্মাণ করার কিছু দিন পরেই সামনের অংশ ভেঙে পরে গেছে। এ বিষয়ে কেউ কোন খোজ খবরও নেয়নি।

মদন উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া পিয়েল জানান, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। বীর নিবাসের ভাঙা ঘরটির খোজ নিয়ে দেখবো।

মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলেন, বীর নিবাসের ঘর ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে ভেঙে যাওয়ার ঘরটির খোজ নিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।