হাওর বার্তা ডেস্কঃ পুরান ঢাকার ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে প্রতি বছরের ন্যায় এবারো পালিত হবে সাকরাইন উৎসব। প্রতি বছর বাংলা পৌষ মাসের শেষ দিন পুরান ঢাকা আকাশে নানা রঙের কয়েক লাখ ঘুড়ি উড়ানো হয়।
সন্ধ্যায় ফানুস ও আতসবাজী ফুটিয়ে উৎসবে মেতে ওঠে পুরান ঢাকাবাসী। ঢাকা দক্ষিন সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি ) পক্ষ থেকে দিবসটি পালনে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে সম্প্রতি ফানুসের আগুন থেকে অগ্নিকাণ্ড বেড়ে যাওয়ায় ঝুঁকি বিবেচনায় ফানুস ও আতশবাজী নিষিদ্ধ চায় সচেতন মহল।
জানা গেছে, পুরান ঢাকার ঐতিহ্য পৌষসংক্রান্তি বা সাকরাইন উৎসব উদযাপনে বাংলা ১৪২৮ সালের ৩০ পৌষ শুক্রবার পুরান ঢাকাবাসীর পাশাপাশি ঢাকা দক্ষিন সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
কর্মসূচীর অংশ হিসেবে প্রতিটি ওয়ার্ড, পাড়া-মহল্লায় কাউন্সিলরদের তত্ত্বাবধানে দিনব্যাপী ঘুড়ি উড়ানো ও প্রতিযোগীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ কর্মসূচী রয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, বাংলাদেশের প্রাচীন উৎসব সমূহের মধ্যে পুরান ঢাকার সাকরাইন উৎসব অন্যতম। যদিও এটি সমগ্র বাংলাদেশব্যাপী পালিত হয় না। তবে এটি খুব জনপ্রিয় এবং গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশি সংস্কৃতি।
উৎসবে দিনভর ঘুড়ি উড়ানোর পাশাপাশি সন্ধ্যায় বর্ণিল আতশবাজি ও রঙবেরঙ ফানুসে ছেয়ে যায় নগরীর আকাশ। এছাড়া সন্ধ্যায় আগুন খেলা দিয়ে সাকরাইন বিদায় দেওয়ার পুরানো প্রচলন রয়েছে।
মুখে কেরোসিন নিয়ে মশালের আগুনের উপর ফুঁ দেয়ার ফলে আগুনের দলার সৃষ্টি করে আগুন খেলা হয়। বর্তমানে উৎসবে ডিজে নাচ, প্রজেক্টর আর ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেম যোগ করে দেয়া হয়েছে ভিন্নমাত্রা।
পুরান ঢাকার বাবুবাজার- আরমানীটোলা সমাজ কল্যান সংসদের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন যুগান্তরকে বলেন, পুরান ঢাকায় ঘুড়ি উড়িয়ে সাকরাইন উৎসব পালন করা একটি ঐতিহ্যবাহী রেওয়াজ। তবে এর মধ্যে ফানুস উড়ানোর কারনে অনেক সময় অগ্নিকাণ্ডের মাধ্যমে মুহুর্তেই আনন্দ বিষাদে পরিণত হতে পারে। এজন্য ফানুস উড়ানো ও আতশবাজী নিষিদ্ধ করা উচিত।
এছাড়া অপসংস্কৃতি চর্চাও উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ বিষয়ে ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপ কমিশনার জসীম উদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে ফানুস উড়ানো ও আতশবাজি নিষিদ্ধ করা না হলেও অনুৎসাহিত করা হচ্ছে। তবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটতে পারে সেদিকে পুলিশ সতর্ক রয়েছে বলে জানান তিনি।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৭৪০ সালের এই দিনে মোঘল আমলে নায়েব-ই-নাজিম নওয়াজেশ মোহাম্মদ খানের আমলে ঘুড়ি উড়ানো হয়। সেই থেকে পুরান ঢাকায় এই দিনটি অন্যতম উৎসবে পরিণত হয়েছে।