হাওর বার্তা ডেস্কঃ খুলনায় ধানের ভরা মৌসুমেও চালের দাম বেড়েছে। মানভেদে প্রতি কেজি চালে দুই থেকে তিন টাকা করে বাড়ে। এর জন্য ডিজেল ও ধানের দাম বাড়ার অজুহাত দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
তবে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজিকে দায়ী করে ক্রেতারা বলছেন, বড় বড় ব্যবসায়ীরা তাদের লাভ বাড়ানোর জন্য হঠাৎ করেই দাম বাড়িয়ে দেন। যারা প্রতিদিন চাল কেনেন তারা হয়তো কেজিতে দু-এক টাকা বেশি দিলেও গায়ে মাখে না। কিন্তু এতে ব্যবসায়ীর ঘরে কোটি কোটি টাকা চলে যায় তা বোঝে না কেউ।
খুলনা নগরীর কয়েকটি চালের পাইকারি বাজার ঘুরে জানা যায়, মিনিকেট (সরু) প্রতি কেজি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে মাঝারি মিনিকেট চাল ৫৫ টাকা, লোকাল ২৮ ইরি (সিদ্ধ) ৪৭ টাকা, বাসমতী ৬০ টাকা ও নাজিরশাইল ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত এক সপ্তাহ আগে কেজি প্রতি ২-৩ টাকা কম ছিল।
নগরীর রূপসা কাঁচা বাজারের চাল ব্যবসায়ী এস কে জাকারিয়া বলেন, দেড় মাস ধরে ভারতীয় চালের আমদানি বন্ধ। বাজারে যা আছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। গত একসপ্তাহ ধরে চালের বাজার গরম। চালের বাজার দর কমার কোনো লক্ষণ নেই।
তবে টুটপাড়া জোড়াকল বাজারের চাল ব্যবসায়ী আবু বকর, গোলাম আলী, আতাহার আলীরা বলেন, বাজারে চালের কোনো ঘাটতি নেই। তবুও কেনো যে চালের দাম বেড়েছে তা বলতে পারছে না কেউ।
এ ব্যবসায়ীরা আরও বলেন, চালের দাম হঠাৎ করে বেড়ে গেলে ক্রেতাদের নানামুখী কথার সম্মুখীন হতে হয় বিক্রেতাদের। ক্রেতারা দাম বাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে কোন সদুত্তর দেওয়া যায় না।
দোলখোলা বাজারের ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ করে চালের দাম বেড়েছে। চিকন চালের মৌসুম শেষ। বাজারে চালের ঘাটতি রয়েছে। ভারতীয় চালের আমদানি হলে বাজারে দর পড়তে পারে। এছাড়া আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই নতুন ধানের আগমন ঘটলে বাজার একটু ‘নরম’ হতে পারে।
এসিআই (প্যাকেট চাল) কোম্পানির খুলনার এরিয়া ম্যানেজার আবু তালেব বলেন, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে কৃষকরা এখনো নতুন ধান কাটতে পারেনি। এছাড়া মিলগুলোতে উৎপাদন কম। বাড়লে দাম কিছুটা কম হতে পারে।
বড় বাজারের চাল ব্যবসায়ী মেসার্স শংকর কুন্ড এন্টারপ্রাইজের মালিক শংকর কুন্ডু বলেন, কিছু কিছু চালের দর বেড়েছে। মিল মালিকরা চালের দাম বাড়িয়েছে। অনেক কৃষক এখনো ধান কাটতে পারেনি। গত কয়েকদিন আগের বৃষ্টির কারণে ক্ষেতে এখনো পানি জমে আছে। মিল মালিকরা এখনো চাল তেমন উৎপাদনে যেতে পারেনি। দর আরও বাড়তে পারে। দাম কমাতে ভারতীয় চাল আমদানির ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি।
মেসার্স কুন্ডু ট্রেডার্সের মালিক কুন্ডু বলেন, গেল দুবছরের তুলনা এবার ধানের দাম বেশি। ব্যাপারী থেকে মিলের সংখ্যাও বেশি। যা পাওয়া যায় মিলাররা অধিক দরে কিনছেন। পরবর্তীতে গোডাউনে মজুত করে রাখছেন। দাম আরও বাড়লে সেগুলো তারা বাজারজাত করবেন।