হাওর বার্তা ডেস্কঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম মৌসুমই শুরু হয় গোপালভোগ দিয়ে। অনেকের কাছেই আমটি জনপ্রিয়। তবে আক্ষেপের বিষয় গোপালভোগ বাজারে বেশি দিন পাওয়া যায় না। গোপালভোগ আমের ফলন যেমন কম হয়, তেমনি অন্যান্য আম বাজারে আসার আগেই ফুরিয়ে যায়। বিষয়টি ভাবিয়ে তোলে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. জমির উদ্দীনকে। তার সেই ভাবনা থেকেই দীর্ঘ গবেষণায় মিলেছে সুখবর।
গোপালভোগের সঙ্গে রাবি আম-১ এর শংকরায়ন করে নতুন হাইব্রিড বারি আম-১৮ উদ্ভাবন করেছেন এই বিজ্ঞানী। ইতোমধ্যে বারি আম-১৮ নামে নতুন হাইব্রিড আমের এ জাতটির নিবন্ধন প্রত্যায়নপত্র দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের জাতীয় বীজ বোর্ড। এ সংক্রান্ত কাগজপত্র রোববার (১৯ ডিসেম্বর) চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রে পৌঁছেছে।
মুক্তায়িত বারি আম-১৮ এর বৈশিষ্ট্যের কথা বলতে গিয়ে ড. জমির উদ্দীন বলেন, আমাদের ল্যাংড়া আম ছাড়া অন্য কোনো আমে তেমন সুঘ্রাণ পাওয়া যায় না। নতুন এ জাতটিতে মিলেছে ল্যাংড়া আমের মতোই সুঘ্রাণ। এছাড়া আমটির ফলন বেশি, গড় ওজনও প্রায় ২৪০ গ্রাম। এর ভক্ষণযোগ্য অংশ ৭৫ ভাগ। মিষ্টতার দিক থেকেও অনেক এগিয়ে নুতন এ জাতটি। এতে মিষ্টির পরিমাণ শতকরা ২৪.৬৭ ভাগ।
আমের নতুন এ জাতটি মধ্য জুন থেকে পাকা শুরু করে জুনের শেষ পর্যন্ত গাছে থাকে। যারা গোপালভোগ আমের মতো আম খাওয়ার কথা ভাবেন তাদের জন্য এ জাতটি। অন্যদিকে গোপালভোগ আমের ফলন কম হওয়ার কারণে কৃষকরাও গাছটির প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছেন। সেদিক বিবেচনা করে নতুন জাতটির ফলন তুলনামূলক বেশি। তাই আমার মনে হয় কৃষকরাও এটি চাষে আগ্রহী হবেন।
এখন পর্যন্ত বারি থেকে মুক্তায়িত ১৮টি আমের জাতের মধ্যে ১৪টি জাত মুক্তায়ন করা হয়েছে চাঁপাইানবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র থেকে। এর মধ্যে হাইব্রিড চারটি জাতের উদ্ভাবক চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. জমির উদ্দীন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মুখলেসুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বারি আম-১৮ নামে নতুন হাইব্রিড জাতের আমটি চূড়ান্তভাবে নিবন্ধন পেয়েছে। এ আমের জাতের সম্প্রসারণের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে শিগগিরই। আমাদের কেন্দ্র থেকে চারা কলম তৈরি করে কৃষক পর্যায়ে সরবরাহ করা হবে।