হাওর বার্তা ডেস্কঃ ‘মৌমাছি, মৌমাছি, কোথা যাও নাচি নাচি’ কবিতার কবি নবকৃষ্ণ ভট্টাচার্যের সেই মৌমাছির দল বাসা বেঁধেছে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের শতবর্ষী এক পাকুড় গাছে। দু একটি নয়, এক গাছে অন্তত ৬০টি মৌমাছির দল চাক বেঁধেছে। একসঙ্গে এতগুলো মৌচাক দেখার জন্য প্রতিদিনই পাকুড়তলায় ভিড় করছেন উৎসুক জনতা।
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নাকাই ইউনিয়নের মেঘেরচর মাঝিপাড়া গ্রামে দেখা যায় এমন চিত্র। নিভৃতপল্লীর সরকারি একটি খাস জায়গার মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে শতবর্ষী একটি পাকুড় গাছ। গাছের নিচেই রয়েছে সনাতন ধর্মাবম্বীদের ছোট্ট একটি মন্দির। পাকুড় গাছের গোড়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন ডালে নির্বিঘ্নে বাস করছে মৌমাছির দল। মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় একবার হলেও পাকুড় তলায় থমকে দাঁড়াচ্ছেন লোকজন। সম্প্রতি স্থানীয় লোকজন ২০টি চাক থেকে তিন মণ মধু বিক্রি করেছেন। সেই মধু বিক্রির টাকায় মন্দিরের জন্য ইট কিনেছেন।
মেঘেরচর গ্রামের কৃষ্ণ চন্দ্র বলেন, এক মাস হলো মৌচাকগুলো বসেছে। ৮০-৯০টি চাক ছিল। মধু সংগ্রহের কারণে কিছু মৌমাছি উড়ে গেছে। তবে এখনও ৬০টির মতো মৌচাক রয়েছে। তবে এত মৌচাক এর আগে এই গাছে কখনই লাগেনি।
মৌচাক দেখতে আসা রফিকুল ইসলাম নামে এক যুবক বলেন, এক গাছে এত মৌচাক এর আগে আমি কখন দেখিনি। আমি মনে করি এই জায়গাটি সংরক্ষণ করা দরকার। যাতে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এসে সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে।
চন্দ্রা রানী নামে একজন বলেন, আশপাশে অনেক গাছ আছে। সেখানে মৌচাক বসেনি। শুধু পাকুড় গাছেই মৌচাক লাগে। তাছাড়া আমাদের এখানে ভালো কোনো মন্দির নেই। এই গাছের মধু বিক্রি করে মন্দিরের উন্নয়ন কাজ করতে পারছি। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া।
গাইবান্ধা বিসিক শিল্প নগরীর সহকারী মহাব্যাবস্থাপক রবিন চন্দ্র রায় মুঠোফোনে জানান, মৌমাছিরা সংঘবদ্ধভাবে এক জায়গায় থাকতে ভালোবাসে। এদের বিরক্ত না করলে বহু দিন পর্যন্ত এক জায়গায় অবস্থান করে। এক দিকে গ্রামাঞ্চল অন্যদিকে ওই এলাকায় প্রচুর সরিষার আবাদ হয়। ফলে মৌমাছিরা সহজেই মধু সংগ্রহ করতে পারে। এজন্য মৌমাছিগুলো প্রাচীন এ পাকুড় গাছটিতে বাসা বেঁধেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।