ঢাকা ০৫:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হিম হাওয়ায় ত্বকের যত্নে করণীয়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:২৭:২০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ নভেম্বর ২০২১
  • ১৭৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে আসছে শীত। এই সময়ে সবচেয়ে নাজুক হয়ে পড়ে ত্বক। চাই তার আলাদা খেয়াল ও যত্ন। শোভন মেকওভারের রূপ বিশেষজ্ঞ শোভন সাহার সঙ্গে কথা বলে ত্বকের যত্নের নানা দিক জানাচ্ছেন জিনাত জোয়ার্দার রিপা।

শীতে ত্বক তরতাজা আর উজ্জ্বল রাখতে অতিরিক্ত সূর্যরশ্মি অর্থাৎ অতিবেগুনি রশ্মি এড়িয়ে চলতে হবে। ছাতা বা টুপি ব্যবহার করা যেতে পারে। এগুলো ব্যবহার করতে না চাইলে সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। সানস্ক্রিন ব্যবহারের ক্ষেত্রে ত্বকের রং বিবেচনায় আনতে হবে। যে ত্বক যত উজ্জ্বল, দিনের আলোয় তা তত বেশি নাজুক। শীতে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যায় বলে পরিবেশের হিম হাওয়া ত্বকের পানি শুষে নেয়। ফলে ত্বক, ঠোঁট ও হাত, পায়ের তালু ফেটে যায়।

শরীর আর্দ্র রাখুন

অনেকেই শীতকালে ঘরে হিটার ব্যবহার করেন, যা গরম বাড়ালেও বাতাসকে শুষ্ক করে। তাই ঘরকে উষ্ণ ও আর্দ্র রাখতে হিটার ব্যবহার না করাই ভালো। রোদে বের হওয়ার আগে মুখে সানস্ক্রিন মাখা উচিত। এ ছাড়া হাতে হাতমোজা ও মাথায় রুমাল ব্যবহার করা ভালো।

নিয়মিত পানি পান

শীতে স্বাভাবিকভাবেই আমরা কম পানি পান করি, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। শরীরের ভেতরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে পরিমিত পানি পান করা জরুরি। শীতে কুসুম গরম করে পানি খেতে পারেন।

ঘুমানোর আগে ময়েশ্চারাইজার

এই সময়ে ত্বক মসৃণ রাখতে ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে। আমাদের শরীরের যেসব অংশ বেশি শুষ্ক থাকে যেমন হাত, পা, হাঁটু, কপাল, পায়ের গোড়ালি ইত্যাদিতে রাতে শোবার আগে ভালো করে ক্রিম মেখে তারপর মোজা পরে নিলে সকাল পর্যন্ত ত্বকে আর্দ্রতা বজায় থাকে। এ ছাড়া প্রচুর পরিমাণে পানি ও সবজি খাওয়া উচিত।

ত্বকের প্রাকৃতিক যত্ন

গোসলের কয়েক মিনিট আগে সারা শরীরে জলপাই তেল মেখে গোসল করুন। জলপাই তেল ১ টেবিল চামচ, ৫ টেবিল চামচ লবণ ও ১ টেবিল চামচ লেবুর রস দিয়ে স্ক্রাব তৈরি করে নিন। সেটি মুখে ও সারা শরীরে লাগাতে পারেন। এতে মরা কোষ দূর হবে। নারকেল তেল ব্যবহার করলেও উপকার পাবেন।

ঠোঁটের যত্ন

শীতে অনেকেই জিহ্বা দিয়ে বারবার ঠোঁট ভেজান। এতে ঠোঁট ফাটা আরো বেড়ে যাবে। সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে তৈলাক্ত প্রলেপ যেমন—গ্লিসারিন, লিপজেল, অলিভ অয়েল বা পেট্রোলিয়াম জেলির ব্যবহার সহজেই ফাটা নিয়ন্ত্রণ করে ঠোঁট ভালো রাখে।

হাতের যত্ন

মুখের ত্বক নিয়ে মানুষ যত সচেতন, হাতের যত্নের বিষয়ে ততটা দেখা যায় না। যদিও হাতের ত্বক শীতকালে অনেক বেশি রুক্ষ হয়ে পড়ে। বিশেষ করে যাদের বারবার হাত ধুতে হয়, তারা এই সমস্যায় বেশি ভোগে। এ সময় হাতে ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। বারবার যাদের হাত ধুতে হয় কিংবা স্যানিটাইজ করতে হয়, তাদের দিনে কয়েকবার ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা দরকার।

সুন্দর পায়ের জন্য

শীতে পায়ে মোজা পরে থাকার বিকল্প নেই। এতে পায়ের ত্বক ঝকঝকে, মসৃণ থাকে। এ ছাড়া শীতের সময় পেট্রোলিয়াম জেলি কিংবা গ্লিসারিন দিয়ে পায়ের ত্বকে ম্যাসাজ করতে পারেন। সপ্তাহে একবার এক্সফোলিয়েট করে পায়ের ত্বকের মৃত কোষ তুলে নিন। প্রতি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে সামান্য যত্ন আপনার পায়ের ত্বক সুন্দর রাখবে।

পা কিছুক্ষণ কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে রেখে তারপর ভালোভাবে মুছে শুকিয়ে ভ্যাসলিন মাখলে উপকার পেতে পারেন।

এ ছাড়া গ্লিসারিন ও পানি মিশিয়ে সেই মিশ্রণ মাখলেও পায়ের ফাটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।

ত্বক কোমল ও উজ্জ্বল রাখতে

১.মুখ ধোয়ার সময় খুব ঠাণ্ডা বা গরম পানি ব্যবহার করবেন না। কুসুম গরম পানিতে মুখ ধুয়ে নিন।

২.মুখের ত্বক উজ্জ্বল করতে লেবু ব্যবহার করা হয়। লেবুতে অ্যাসিড রয়েছে, যা ঠাণ্ডা ত্বককে শুষ্ক করে তোলে। তাই শীতকালে ত্বকে লেবু খুব বেশি ব্যবহার না করাই ভালো।

৩.শীতে চালের গুঁড়ার ফেস প্যাক ব্যবহার করবেন না। চালের গুঁড়ায় স্টার্চ থাকে, যা ত্বককে শুষ্ক করে তোলে।

৪.ঘন ঘন মুখ ধোয়া হলে ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে। তাই এখন ঘন ঘন মুখ ধোয়া এড়েয়ে চলুন।

৫.শীতে ত্বকের যত্নে ভালো ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন। বাজার থেকে বাদাম তেল বা এভাকাডোসমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার কিনুন।

৫.গোসলের পর এবং প্রতিবার মুখ ধোয়ার পর ভেজা অবস্থায় ময়েশ্চারাইজার বা লোশন ব্যবহার করুন। এতে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে।

৬.শীতকালে কখনোই ভেজা চুলে বাইরে যাওয়া উচিত নয়। এতে চুলের আর্দ্রতা নষ্ট হয় ও চুল ভেঙে যায়।

৭.প্রতিদিন সকালে, গোসলের পর ও রাতে ঘুমানোর আগে ময়েশ্চারাইজড ক্রিম বা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করলে রুক্ষ ত্বকও হয়ে উঠবে ঝলমলে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

হিম হাওয়ায় ত্বকের যত্নে করণীয়

আপডেট টাইম : ০৯:২৭:২০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ নভেম্বর ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে আসছে শীত। এই সময়ে সবচেয়ে নাজুক হয়ে পড়ে ত্বক। চাই তার আলাদা খেয়াল ও যত্ন। শোভন মেকওভারের রূপ বিশেষজ্ঞ শোভন সাহার সঙ্গে কথা বলে ত্বকের যত্নের নানা দিক জানাচ্ছেন জিনাত জোয়ার্দার রিপা।

শীতে ত্বক তরতাজা আর উজ্জ্বল রাখতে অতিরিক্ত সূর্যরশ্মি অর্থাৎ অতিবেগুনি রশ্মি এড়িয়ে চলতে হবে। ছাতা বা টুপি ব্যবহার করা যেতে পারে। এগুলো ব্যবহার করতে না চাইলে সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। সানস্ক্রিন ব্যবহারের ক্ষেত্রে ত্বকের রং বিবেচনায় আনতে হবে। যে ত্বক যত উজ্জ্বল, দিনের আলোয় তা তত বেশি নাজুক। শীতে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যায় বলে পরিবেশের হিম হাওয়া ত্বকের পানি শুষে নেয়। ফলে ত্বক, ঠোঁট ও হাত, পায়ের তালু ফেটে যায়।

শরীর আর্দ্র রাখুন

অনেকেই শীতকালে ঘরে হিটার ব্যবহার করেন, যা গরম বাড়ালেও বাতাসকে শুষ্ক করে। তাই ঘরকে উষ্ণ ও আর্দ্র রাখতে হিটার ব্যবহার না করাই ভালো। রোদে বের হওয়ার আগে মুখে সানস্ক্রিন মাখা উচিত। এ ছাড়া হাতে হাতমোজা ও মাথায় রুমাল ব্যবহার করা ভালো।

নিয়মিত পানি পান

শীতে স্বাভাবিকভাবেই আমরা কম পানি পান করি, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। শরীরের ভেতরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে পরিমিত পানি পান করা জরুরি। শীতে কুসুম গরম করে পানি খেতে পারেন।

ঘুমানোর আগে ময়েশ্চারাইজার

এই সময়ে ত্বক মসৃণ রাখতে ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে। আমাদের শরীরের যেসব অংশ বেশি শুষ্ক থাকে যেমন হাত, পা, হাঁটু, কপাল, পায়ের গোড়ালি ইত্যাদিতে রাতে শোবার আগে ভালো করে ক্রিম মেখে তারপর মোজা পরে নিলে সকাল পর্যন্ত ত্বকে আর্দ্রতা বজায় থাকে। এ ছাড়া প্রচুর পরিমাণে পানি ও সবজি খাওয়া উচিত।

ত্বকের প্রাকৃতিক যত্ন

গোসলের কয়েক মিনিট আগে সারা শরীরে জলপাই তেল মেখে গোসল করুন। জলপাই তেল ১ টেবিল চামচ, ৫ টেবিল চামচ লবণ ও ১ টেবিল চামচ লেবুর রস দিয়ে স্ক্রাব তৈরি করে নিন। সেটি মুখে ও সারা শরীরে লাগাতে পারেন। এতে মরা কোষ দূর হবে। নারকেল তেল ব্যবহার করলেও উপকার পাবেন।

ঠোঁটের যত্ন

শীতে অনেকেই জিহ্বা দিয়ে বারবার ঠোঁট ভেজান। এতে ঠোঁট ফাটা আরো বেড়ে যাবে। সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে তৈলাক্ত প্রলেপ যেমন—গ্লিসারিন, লিপজেল, অলিভ অয়েল বা পেট্রোলিয়াম জেলির ব্যবহার সহজেই ফাটা নিয়ন্ত্রণ করে ঠোঁট ভালো রাখে।

হাতের যত্ন

মুখের ত্বক নিয়ে মানুষ যত সচেতন, হাতের যত্নের বিষয়ে ততটা দেখা যায় না। যদিও হাতের ত্বক শীতকালে অনেক বেশি রুক্ষ হয়ে পড়ে। বিশেষ করে যাদের বারবার হাত ধুতে হয়, তারা এই সমস্যায় বেশি ভোগে। এ সময় হাতে ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। বারবার যাদের হাত ধুতে হয় কিংবা স্যানিটাইজ করতে হয়, তাদের দিনে কয়েকবার ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা দরকার।

সুন্দর পায়ের জন্য

শীতে পায়ে মোজা পরে থাকার বিকল্প নেই। এতে পায়ের ত্বক ঝকঝকে, মসৃণ থাকে। এ ছাড়া শীতের সময় পেট্রোলিয়াম জেলি কিংবা গ্লিসারিন দিয়ে পায়ের ত্বকে ম্যাসাজ করতে পারেন। সপ্তাহে একবার এক্সফোলিয়েট করে পায়ের ত্বকের মৃত কোষ তুলে নিন। প্রতি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে সামান্য যত্ন আপনার পায়ের ত্বক সুন্দর রাখবে।

পা কিছুক্ষণ কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে রেখে তারপর ভালোভাবে মুছে শুকিয়ে ভ্যাসলিন মাখলে উপকার পেতে পারেন।

এ ছাড়া গ্লিসারিন ও পানি মিশিয়ে সেই মিশ্রণ মাখলেও পায়ের ফাটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।

ত্বক কোমল ও উজ্জ্বল রাখতে

১.মুখ ধোয়ার সময় খুব ঠাণ্ডা বা গরম পানি ব্যবহার করবেন না। কুসুম গরম পানিতে মুখ ধুয়ে নিন।

২.মুখের ত্বক উজ্জ্বল করতে লেবু ব্যবহার করা হয়। লেবুতে অ্যাসিড রয়েছে, যা ঠাণ্ডা ত্বককে শুষ্ক করে তোলে। তাই শীতকালে ত্বকে লেবু খুব বেশি ব্যবহার না করাই ভালো।

৩.শীতে চালের গুঁড়ার ফেস প্যাক ব্যবহার করবেন না। চালের গুঁড়ায় স্টার্চ থাকে, যা ত্বককে শুষ্ক করে তোলে।

৪.ঘন ঘন মুখ ধোয়া হলে ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে। তাই এখন ঘন ঘন মুখ ধোয়া এড়েয়ে চলুন।

৫.শীতে ত্বকের যত্নে ভালো ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন। বাজার থেকে বাদাম তেল বা এভাকাডোসমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার কিনুন।

৫.গোসলের পর এবং প্রতিবার মুখ ধোয়ার পর ভেজা অবস্থায় ময়েশ্চারাইজার বা লোশন ব্যবহার করুন। এতে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে।

৬.শীতকালে কখনোই ভেজা চুলে বাইরে যাওয়া উচিত নয়। এতে চুলের আর্দ্রতা নষ্ট হয় ও চুল ভেঙে যায়।

৭.প্রতিদিন সকালে, গোসলের পর ও রাতে ঘুমানোর আগে ময়েশ্চারাইজড ক্রিম বা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করলে রুক্ষ ত্বকও হয়ে উঠবে ঝলমলে।