আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত অগ্রিম ইনক্রিমেন্ট দিয়ে সরকারী চাকুরেদের নতুন বেতন কাঠামো সংশোধন করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আবু তাহের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ১ জুলাই, ২০১৫ হতে ৩০ জুন ২০১৬ পর্যন্ত কোন কর্মচারী যে তারিখে বার্ষিক বর্ধিত বেতন প্রাপ্য হতেন, সেই নির্ধারিত তারিখের পরিবর্তে সকল কর্মচারী একই তারিখে অর্থাৎ ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৫ তারিখে বার্ষিক বর্ধিত বেতন প্রাপ্য হবেন।
তবে বার্ষিক বর্ধিত বেতন নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় ইতোমধ্যে যে সকল কর্মচারী ১ জুলাই ২০১৫ থেকে ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৫ তারিখ পর্যন্ত বার্ষিক বর্ধিত বেতন বাবদ যে অর্থ উত্তোলন করেছেন তাদের উত্তোলিত অর্থ ফেরত প্রদান করতে হবে না। একই সঙ্গে কোন কর্মচারী ওই সময়ের মধ্যে প্রাপ্যতা অনুযায়ী বার্ষিক বর্ধিত বেতন উত্তোলন না করে থাকেন তিনিও এই সুবিধা প্রাপ্য হবেন।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে অনুচ্ছেদ ১৭-এর উপ-অনুচ্ছেদ (৫)-এর পরিবর্তে উপ-অনুচ্ছেদ (৫) প্রতিস্থাপিত হবে। যথা, যদি স্বামী ও স্ত্রী উভয়েই কোন সরকারী বা স্বশাসিত সংস্থা, ব্যাংক, বীমা বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী হন এবং তারা একত্রে সরকারী বাসস্থানে বসবাস করেন, তাহলে তাঁদের মধ্যে যার নামে বাসস্থান বরাদ্দ রয়েছে, তিনি কোন বাড়ি ভাড়া ভাতা প্রাপ্য হবেন না। অপরজন (স্বামী বা স্ত্রী) প্রচলিত বিধান মোতাবেক পূর্ববৎ বাড়ি ভাড়া ভাতা প্রাপ্য হবেন। এটা ১ জুলাই ২০১৫ তারিখে কার্যকর করা হয়েছে বলে গণ্য করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত যাদের ইনক্রিমেন্ট পাওয়ার কথা, কেবল তাদের ইনক্রিমেন্ট দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। নতুন বেতন কাঠামোর গেজেটে তাদের ইনক্রিমেন্ট বাতিল করার কথা বলা হলেও এখন নতুন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে তাদের ইনক্রিমেন্ট দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আর নতুন কাঠামো অনুযায়ী, আগামী অর্থবছর থেকে ইনক্রিমেন্ট যার যেদিনই পাওয়ার কথা হোক না কেন, সবাই একসঙ্গে ১ জুলাই তারিখে পাবেন। এতে চাকরিজীবীদের মধ্যে বৈষম্য দূর হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড আর পুনর্বহাল হচ্ছে না। যদিও এই দুটি বিষয় পুনর্বহালে সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি অংশ দাবি জানিয়ে আসছিল।
জানা গেছে, সারা বছর এবং প্রতিদিনই বিপুলসংখ্যক সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী ইনক্রিমেন্ট পেতেন। এতে সরকারী চাকরিজীবীদের বেতন ব্যয় নিয়ে সরকারের হিসাব রাখা দুরূহ হয়ে পড়ে। এই বিবেচনায় ড. ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় বেতন ও চাকরি কমিশনের সুপারিশ ছিলÑপ্রতিবছর ১ জুলাই সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট দেয়ার। ইতোমধ্যে সচিব কমিটি ও মন্ত্রিসভাও এই প্রস্তাব অনুমোদন করে। তার পরিপ্রেক্ষিতে নতুন বেতন কাঠামোতে এই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।