ঢাকা ০৭:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
মহাখালীতে আবাসিক ভবনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২ ইউনিট ভোটার হওয়ার ন্যূনতম বয়সসীমা প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে আপত্তি বিএনপি মহাসচিবের মাহফিলে গিয়ে নিখোঁজ কৃষকের মরদেহ মিললো আম গাছে নদী বাঁচাতে প্রয়োজনে দু’চারটি ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দেয়া হবে যারা অর্থ নিয়ে দেশ ছেড়েছে তাদের অর্থ ফেরাতে চেষ্টা চলছে: গভর্নর প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতির বিচার হবে: উপদেষ্টা ফরিদা আখতার শীতের সবজিতে ভরপুর বাজার, কমেছে দাম ২৫ বছর বয়সেই না ফেরার দেশে জনপ্রিয় আরজে স্বস্তি ফিরছে পেঁয়াজের বাজারে নান্দাইলে মাদ্রাসা ছাত্রী ধর্ষণ ও হত্যা আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় পরিবারের ক্ষোভ

পায়ুপথে ক্যান্সার হয়েছে কিনা বুঝবেন কীভাবে?

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৪৭:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ নভেম্বর ২০২১
  • ১৩৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মলদ্বারের রোগের মধ্যে পাইলস ও ফিস্টুলা জটিল রোগ। আমাদের ধারণা, পায়ুপথের বিভিন্ন সমস্যা যেমন— রক্ত যাওয়া, ব্যথা হওয়া, ফুলে যাওয়া এসবই হয় পাইলসের কারণে। এ ধারণা ঠিক নয়। প্রতিটি উপসর্গই পায়ুপথে ক্যান্সার হতে পারে।  ফিস্টুলা বা ভগন্দর রোগেও এমন উপসর্গ দেখা দিতে পারে।  পায়ুপথে ক্যান্সার হলে সেটিও ফিস্টুলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে।

পায়ুপথের বিভিন্ন রোগ ও ক্যান্সার নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অধ্যাপক ডা. একেএম ফজলুল হক।

যেসব রোগে পায়খানার সঙ্গে রক্ত যায়, তার মধ্যে ক্যান্সার অন্যতম। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রক্ত যায় যেসব রোগে, সেগুলো হচ্ছে— ১. এনাল ফিসার ২. পাইলস ৩. রেকটাল পলিপ (শিশুদের বেশি হয়) ৪. ক্যান্সার ৫. আলসারেটিভ কেলোইটিস ৬. ফিস্টুলা ও অন্যান্য।

অনেকে বলে থাকেন— পায়খানা পরিষ্কার হয় না। পায়খানার বেগ এলে কিছু তরল জিনিস বের হয়ে আসে, কিন্তু পায়খানা অসম্পূর্ণ রয়ে যায়। মাঝে মাঝে টয়লেটে রক্তও যায়।  পরবর্তী সময় মলদ্বারে ও কোমরের নিচের দিকের ব্যথা মলদ্বার থেকে পেছন দিকে ছড়িয়ে পড়ে।  ভেতরের ব্যথা কোমরে অনুভূত হতে পারে, আবার উরুর দিকেও সম্প্রসারিত হতে পারে।

এমন লক্ষণকে আমরা পাইলস-ফিস্টুলা হিসেবে প্রথমে চিহ্নিত করে ভুল করে থাকি।  এগুলো মূলত মলদ্বারে ক্যান্সারের লক্ষণ।

দুটি পরীক্ষার মাধ্যমে রেকটামের ভেতরে ক্যান্সার চিহ্নিত করা হয়। সেগুলো হচ্ছে—সিগময়ডস্কপি ও প্রকটস্কপি।

এ ক্ষেত্রে একটি বড় সমস্যা হচ্ছে— রোগীরা মলদ্বারের ভেতর যন্ত্র দিয়ে পরীক্ষা করাতে চান না। ব্যথা হতে পারে এই ভেবে খুব ভয় পেয়ে যান। জিজ্ঞাস করেন যে, এই পরীক্ষা করলে আমি আগামীকাল অফিসে যেতে পারব কিনা?

এটি নিশ্চিত করেই বলা যায় যে, এ পরীক্ষায় সামান্য অস্বস্তি ছাড়া কোনোরূপ ব্যথা হয় না। বেশিরভাগ রোগীই এ পরীক্ষায় কোনোরূপ ব্যথা পান না। এ পরীক্ষার জন্য খুবই সামান্য সময়ের প্রয়োজন। সারাদিন না খেয়ে থাকার প্রয়োজন হয় না।  মলদ্বারে তীব্র ব্যথা আছে এমন রোগীরও এ পরীক্ষা করা যায়।

মফস্বল থেকে আসা অনেক রোগী দেখি যাদের ক্যান্সার আছে অথচ হাতুড়ে চিকিৎসকরা তদের ইনজেকশন দিচ্ছেন।  কোনো কোনো হাতুড়ে চিকিৎসক আবার এক ধাপ এগিয়ে সেখানে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন।

রেকটাম ক্যান্সারের রোগীদের একই সঙ্গে পাইলস ও ক্যান্সার থাকতে পারে।  সে ক্ষেত্রে আমরা যদি পাইলসের চিকিৎসা করি, তা হলেও দেখা যায় যে, রোগীর সমস্যা যাচ্ছে না, তখন মলদ্বারের ভেতর লম্বা যন্ত্র দিয়ে পরীক্ষা (সিগময়ডস্কপি বা কোলনস্কপি) করলে ক্যান্সার ধরা পড়ে।  এ জাতীয় সমস্যাও মাঝে মধ্যে দেখা যায়।

মলদ্বারের মুখ থেকেও রক্ত যেতে পারে আবার অনেক ভেতর অর্থাৎ রেকটাম বা বৃহদান্তের ভেতর থেকেও রক্ত যেতে পারে।  কী কারণে যাচ্ছে তা বিশেষ ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে একজন উপযুক্ত চিকিৎসক বলে দিতে পারেন।

কিছু কিছু রোগী বলেন, আমার পাইলস হয়েছে আমাকে কিছু ওষুধ দেন খেয়ে দেখি পরীক্ষা-নিরীক্ষার দরকার নেই। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বিশেষ ধরনের পরীক্ষা না করে অনুমান নির্ভর পাইলস চিকিৎসা দেওয়া ঠিক নয়। কারণ এতে যে রোগীদের ক্যান্সার আছে তা শনাক্তকরণে বিলম্ব হবে।  এতে করে বড় বিপদ হতে পারে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মহাখালীতে আবাসিক ভবনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২ ইউনিট

পায়ুপথে ক্যান্সার হয়েছে কিনা বুঝবেন কীভাবে?

আপডেট টাইম : ০৯:৪৭:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ নভেম্বর ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মলদ্বারের রোগের মধ্যে পাইলস ও ফিস্টুলা জটিল রোগ। আমাদের ধারণা, পায়ুপথের বিভিন্ন সমস্যা যেমন— রক্ত যাওয়া, ব্যথা হওয়া, ফুলে যাওয়া এসবই হয় পাইলসের কারণে। এ ধারণা ঠিক নয়। প্রতিটি উপসর্গই পায়ুপথে ক্যান্সার হতে পারে।  ফিস্টুলা বা ভগন্দর রোগেও এমন উপসর্গ দেখা দিতে পারে।  পায়ুপথে ক্যান্সার হলে সেটিও ফিস্টুলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে।

পায়ুপথের বিভিন্ন রোগ ও ক্যান্সার নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অধ্যাপক ডা. একেএম ফজলুল হক।

যেসব রোগে পায়খানার সঙ্গে রক্ত যায়, তার মধ্যে ক্যান্সার অন্যতম। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রক্ত যায় যেসব রোগে, সেগুলো হচ্ছে— ১. এনাল ফিসার ২. পাইলস ৩. রেকটাল পলিপ (শিশুদের বেশি হয়) ৪. ক্যান্সার ৫. আলসারেটিভ কেলোইটিস ৬. ফিস্টুলা ও অন্যান্য।

অনেকে বলে থাকেন— পায়খানা পরিষ্কার হয় না। পায়খানার বেগ এলে কিছু তরল জিনিস বের হয়ে আসে, কিন্তু পায়খানা অসম্পূর্ণ রয়ে যায়। মাঝে মাঝে টয়লেটে রক্তও যায়।  পরবর্তী সময় মলদ্বারে ও কোমরের নিচের দিকের ব্যথা মলদ্বার থেকে পেছন দিকে ছড়িয়ে পড়ে।  ভেতরের ব্যথা কোমরে অনুভূত হতে পারে, আবার উরুর দিকেও সম্প্রসারিত হতে পারে।

এমন লক্ষণকে আমরা পাইলস-ফিস্টুলা হিসেবে প্রথমে চিহ্নিত করে ভুল করে থাকি।  এগুলো মূলত মলদ্বারে ক্যান্সারের লক্ষণ।

দুটি পরীক্ষার মাধ্যমে রেকটামের ভেতরে ক্যান্সার চিহ্নিত করা হয়। সেগুলো হচ্ছে—সিগময়ডস্কপি ও প্রকটস্কপি।

এ ক্ষেত্রে একটি বড় সমস্যা হচ্ছে— রোগীরা মলদ্বারের ভেতর যন্ত্র দিয়ে পরীক্ষা করাতে চান না। ব্যথা হতে পারে এই ভেবে খুব ভয় পেয়ে যান। জিজ্ঞাস করেন যে, এই পরীক্ষা করলে আমি আগামীকাল অফিসে যেতে পারব কিনা?

এটি নিশ্চিত করেই বলা যায় যে, এ পরীক্ষায় সামান্য অস্বস্তি ছাড়া কোনোরূপ ব্যথা হয় না। বেশিরভাগ রোগীই এ পরীক্ষায় কোনোরূপ ব্যথা পান না। এ পরীক্ষার জন্য খুবই সামান্য সময়ের প্রয়োজন। সারাদিন না খেয়ে থাকার প্রয়োজন হয় না।  মলদ্বারে তীব্র ব্যথা আছে এমন রোগীরও এ পরীক্ষা করা যায়।

মফস্বল থেকে আসা অনেক রোগী দেখি যাদের ক্যান্সার আছে অথচ হাতুড়ে চিকিৎসকরা তদের ইনজেকশন দিচ্ছেন।  কোনো কোনো হাতুড়ে চিকিৎসক আবার এক ধাপ এগিয়ে সেখানে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন।

রেকটাম ক্যান্সারের রোগীদের একই সঙ্গে পাইলস ও ক্যান্সার থাকতে পারে।  সে ক্ষেত্রে আমরা যদি পাইলসের চিকিৎসা করি, তা হলেও দেখা যায় যে, রোগীর সমস্যা যাচ্ছে না, তখন মলদ্বারের ভেতর লম্বা যন্ত্র দিয়ে পরীক্ষা (সিগময়ডস্কপি বা কোলনস্কপি) করলে ক্যান্সার ধরা পড়ে।  এ জাতীয় সমস্যাও মাঝে মধ্যে দেখা যায়।

মলদ্বারের মুখ থেকেও রক্ত যেতে পারে আবার অনেক ভেতর অর্থাৎ রেকটাম বা বৃহদান্তের ভেতর থেকেও রক্ত যেতে পারে।  কী কারণে যাচ্ছে তা বিশেষ ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে একজন উপযুক্ত চিকিৎসক বলে দিতে পারেন।

কিছু কিছু রোগী বলেন, আমার পাইলস হয়েছে আমাকে কিছু ওষুধ দেন খেয়ে দেখি পরীক্ষা-নিরীক্ষার দরকার নেই। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বিশেষ ধরনের পরীক্ষা না করে অনুমান নির্ভর পাইলস চিকিৎসা দেওয়া ঠিক নয়। কারণ এতে যে রোগীদের ক্যান্সার আছে তা শনাক্তকরণে বিলম্ব হবে।  এতে করে বড় বিপদ হতে পারে।