ঢাকা ১২:৩৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাসুল (সাঃ) কখনো আজান দেননি কেন?

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:১৪:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ নভেম্বর ২০২১
  • ১৮২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় মুসলিমগণ দিন রাত ইবাদত করেন। নিশ্চয়ই জানেন, নামাজ হচ্ছে সর্বোত্তম ইবাদত। নামাজ বেহেশতের চাবি। তাইতো মুসলিমগণ সময়মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন।

মসজিদে আজান দেয়ার মাধ্যমে সমগ্র মুসলিমকে নামাজের জন্য আহবান জানানো হয়। অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজের জন্য আজান দিতে বলেছেন, কিন্তু তিনি কেন কখনো আজান দেননি? চলুন  জেনে নেয়া যাক এর মূল কারণ-

একদিন আল্লাহর রাসুল (সঃ) সাহাবিদেরকে বললেন সবাইকে কীভাবে নামাজের জন্য আহবান করা যায়।

একজন সাহাবি বললেন, “হে রাসুলুল্লাহ সাঃ, আমরা ঢোল বাজিয়ে সবাইকে নামাজের জন্য ডাকতে পারি।” তখন ঢোল নিষিদ্ধ হয়নি।

আরেকজন বললেন, “আগুন জালিয়ে এটা করা যায়। মানুষ আগুনের ধোঁয়া দেখে বুঝবে নামাজের জন্য ডাকছে।”

আরেকজন বললেন, “শিঙ্গা ফুৎকারে সবাইকে ডাকা যায়।”

আল্লাহর রাসুল সাঃ এর কারো পরামর্শই পছন্দ হলো না। সবাই নিজের বাড়িতে চলে গেলেন।

সেদিন রাতে যায়েদ ইবনে আব্দুল্লাহ স্বপ্নে দেখেন, এক ব্যক্তি শিঙ্গা বিক্রি করছেন। তিনি তখন ওই ব্যাক্তির কাছে একটা শিঙ্গা কিনতে চাইলেন। লোকটি জিজ্ঞেস করলেন, এটি দিয়ে আপনি কি করবেন?

তখন যায়েদ ইবনে আব্দুল্লাহ বলেন সবাইকে নামাজের জন্য ডাকবো। শিঙ্গা বিক্রেতা তখন বললেন, আমি এমন কিছু বাক্য শিখিয়ে দিবো যার দ্বারা আপনি সবাইকে নামাজের জন্য ডাকতে পারেন। তখন তিনি আজানের বাক্যগুলো বলতে লাগলেন।

আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার……..

অতঃপর লোকটি চলে গেলেন। যায়েদ ইবনে আব্দুল্লাহ এই কথা রাসুলকে জানান। রাসুল সাঃ বলেন, বেলাল কে ডাকো আর সবাইকে এই বাক্যগুলো দ্বারা আহবান করতে বলো। বেলাল যখন আল্লাহু আকবার বলে আজান দিচ্ছিল, মনে হচ্ছিল আসমান থেকে সুর ধ্বনিত হচ্ছে।

তখন উমর রাঃ দৌড়ে এসে বললেন এই বাক্যগুলো আমি কাল রাতে স্বপ্নে দেখি। মানে উনি সহ আরো ১৪ জন সাহাবি একই স্বপ্ন দেখেন।

আল্লাহর রাসুল সাঃ বলেন, ওই লোকটা যে কেউ ছিলেন না উনি জিব্রাইল (আ.) ছিলেন। এই বাক্যগুলো আল্লাহ পাক আমাদের শিখিয়ে দিয়েছেন সালাতের আহবান করার জন্য।

আল্লাহর রাসুল কেন কখনো আজান দেননি?

** আল্লাহর রাসুল যখন কিছু করতে বলেন আমাদের জন্য তখন তা অত্যাবশ্যক হয়ে যায়। আল্লাহ রাসুল (সাঃ) যদি আজান দিতেন তবে সেখানে তিনি বলতেন হাইয়া আলাস সালাহ। অর্থাৎ নামাজের জন্য এসো। তখন যদি কেউ এই আহবান শুনে মসজিদে না গিয়ে ঘরে নামাজ আদায় করে তবে সে কবিরা গুনাহে লিপ্ত হবে।

** আবার আজানে বলা হয় আশহাদুয়ান্না মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ। অর্থাৎ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর রাসুল। এক্ষেত্রে উনি নিজেই নিজের সাক্ষ্য দিবেন কীভাবে? উনার এই সাক্ষ্য দানে হয়তো অনেকে ভাবতো যে উনি হয়তো অন্য কোনো রাসুলের কথা বলছেন।

** রাসুল (সাঃ) নিজের উম্মতের কথা ভেবে আজান দেননি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সঠিক সময়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। হাদিসের উপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

রাসুল (সাঃ) কখনো আজান দেননি কেন?

আপডেট টাইম : ০৯:১৪:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ নভেম্বর ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় মুসলিমগণ দিন রাত ইবাদত করেন। নিশ্চয়ই জানেন, নামাজ হচ্ছে সর্বোত্তম ইবাদত। নামাজ বেহেশতের চাবি। তাইতো মুসলিমগণ সময়মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন।

মসজিদে আজান দেয়ার মাধ্যমে সমগ্র মুসলিমকে নামাজের জন্য আহবান জানানো হয়। অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজের জন্য আজান দিতে বলেছেন, কিন্তু তিনি কেন কখনো আজান দেননি? চলুন  জেনে নেয়া যাক এর মূল কারণ-

একদিন আল্লাহর রাসুল (সঃ) সাহাবিদেরকে বললেন সবাইকে কীভাবে নামাজের জন্য আহবান করা যায়।

একজন সাহাবি বললেন, “হে রাসুলুল্লাহ সাঃ, আমরা ঢোল বাজিয়ে সবাইকে নামাজের জন্য ডাকতে পারি।” তখন ঢোল নিষিদ্ধ হয়নি।

আরেকজন বললেন, “আগুন জালিয়ে এটা করা যায়। মানুষ আগুনের ধোঁয়া দেখে বুঝবে নামাজের জন্য ডাকছে।”

আরেকজন বললেন, “শিঙ্গা ফুৎকারে সবাইকে ডাকা যায়।”

আল্লাহর রাসুল সাঃ এর কারো পরামর্শই পছন্দ হলো না। সবাই নিজের বাড়িতে চলে গেলেন।

সেদিন রাতে যায়েদ ইবনে আব্দুল্লাহ স্বপ্নে দেখেন, এক ব্যক্তি শিঙ্গা বিক্রি করছেন। তিনি তখন ওই ব্যাক্তির কাছে একটা শিঙ্গা কিনতে চাইলেন। লোকটি জিজ্ঞেস করলেন, এটি দিয়ে আপনি কি করবেন?

তখন যায়েদ ইবনে আব্দুল্লাহ বলেন সবাইকে নামাজের জন্য ডাকবো। শিঙ্গা বিক্রেতা তখন বললেন, আমি এমন কিছু বাক্য শিখিয়ে দিবো যার দ্বারা আপনি সবাইকে নামাজের জন্য ডাকতে পারেন। তখন তিনি আজানের বাক্যগুলো বলতে লাগলেন।

আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার……..

অতঃপর লোকটি চলে গেলেন। যায়েদ ইবনে আব্দুল্লাহ এই কথা রাসুলকে জানান। রাসুল সাঃ বলেন, বেলাল কে ডাকো আর সবাইকে এই বাক্যগুলো দ্বারা আহবান করতে বলো। বেলাল যখন আল্লাহু আকবার বলে আজান দিচ্ছিল, মনে হচ্ছিল আসমান থেকে সুর ধ্বনিত হচ্ছে।

তখন উমর রাঃ দৌড়ে এসে বললেন এই বাক্যগুলো আমি কাল রাতে স্বপ্নে দেখি। মানে উনি সহ আরো ১৪ জন সাহাবি একই স্বপ্ন দেখেন।

আল্লাহর রাসুল সাঃ বলেন, ওই লোকটা যে কেউ ছিলেন না উনি জিব্রাইল (আ.) ছিলেন। এই বাক্যগুলো আল্লাহ পাক আমাদের শিখিয়ে দিয়েছেন সালাতের আহবান করার জন্য।

আল্লাহর রাসুল কেন কখনো আজান দেননি?

** আল্লাহর রাসুল যখন কিছু করতে বলেন আমাদের জন্য তখন তা অত্যাবশ্যক হয়ে যায়। আল্লাহ রাসুল (সাঃ) যদি আজান দিতেন তবে সেখানে তিনি বলতেন হাইয়া আলাস সালাহ। অর্থাৎ নামাজের জন্য এসো। তখন যদি কেউ এই আহবান শুনে মসজিদে না গিয়ে ঘরে নামাজ আদায় করে তবে সে কবিরা গুনাহে লিপ্ত হবে।

** আবার আজানে বলা হয় আশহাদুয়ান্না মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ। অর্থাৎ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর রাসুল। এক্ষেত্রে উনি নিজেই নিজের সাক্ষ্য দিবেন কীভাবে? উনার এই সাক্ষ্য দানে হয়তো অনেকে ভাবতো যে উনি হয়তো অন্য কোনো রাসুলের কথা বলছেন।

** রাসুল (সাঃ) নিজের উম্মতের কথা ভেবে আজান দেননি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সঠিক সময়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। হাদিসের উপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।