ঢাকা ০৫:৩২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যে গ্রামে পুরুষদের দুই বিয়ে করতে হয়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:৪৩:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ নভেম্বর ২০২১
  • ১৩১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পাকিস্তান-ভারত সীমান্তের কাছে রাজস্থানের বাড়মের জেলার ছোট্ট একটি গ্রাম দেরাসর। বড়জোর ৬০০ মানুষের বাস গ্রামটিতে।

কিন্তু এই গ্রামের অদ্ভুত এক রীতি গোটা ভারতে পরিচিতি এনে দিয়েছে। দেরাসরের প্রতিটি পুরুষের অন্তত দু’জন করে স্ত্রী। এ নিয়ে নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আনন্দবাজার পত্রিকা।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এ গ্রামের বাসিন্দাদের বিশ্বাস, প্রথম স্ত্রী থেকে কোনো স্বামীরই সন্তান হবে না। সন্তানের মুখ দেখতে গেলে দ্বিতীয় বিয়ে করতেই হবে। এই অদ্ভুত বিশ্বাস থেকেই দ্বিতীয় বিয়ে করেন দেরাসর গ্রামের পুরুষরা।

এমন রীতির সূত্রপাত অতীতের একটি ঘটনা থেকে। গ্রামের এক লোকের নাকি কিছুতেই সন্তান হচ্ছিল না। পরে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করতেই সন্তানলাভ করেন।

এরপর যখনই গ্রামের কোনো পুরুষ এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতেন, তার দ্বিতীয় বিয়ে দেওয়া হত। আর তাতেই নাকি মিলত ফল। এভাবে পুরুষের বহুবিবাহ গ্রামের রীতিতে পরিণত হয়।

অবশ্য এটি ছাড়াও অন্য একটি কারণ রয়েছে এমন রীতির পিছনে। দেরাসর গ্রামে শুরু থেকেই তীব্র পানি সঙ্কট চলে আসছে। অন্তত পাঁচ কিলোমিটার হেঁটে পরিবারের নারীদের পানি আনতে হয় এই গ্রামে। অন্তঃসত্ত্বা হলে কোনো নারীর পক্ষেই হেঁটে এতদূর থেকে পানি আনা সম্ভব নয়। সে কারণেও দ্বিতীয় বিয়ে করে থাকেন পুরুষরা।

সে ক্ষেত্রে প্রথমজনকে সে অর্থে স্ত্রীর কোনো অধিকারই দেওয়া হয় না। তারা বরং বাড়ির পরিচারিকার মতো জীবন কাটিয়ে থাকেন। প্রথম স্ত্রীকে বলা হয় ‘জল স্ত্রী’।

সাধারণত প্রথম স্ত্রী সারা জীবনে সন্তানধারণের অধিকার পান না। স্বামীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনেরও অধিকার নেই তাদের।

কোনো পুরুষ যদি এই রীতির বিরোধিতা করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে পুরো গ্রাম একজোট হয়। এমনকি নিজের পরিবারও তাকে পরিত্যাগ করবে। গ্রাম থেকেই বিতাড়িত করা হয় তাকে।

দ্বিতীয় স্ত্রীও যদি সন্তানধারণ না করে থাকেন সে ক্ষেত্রে স্বামীকে আরও একটি বিয়ে করতে হয়। উপার্জনকারী স্বামীকে নিতে হয় পুরো পরিবারের দায়িত্ব।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

যে গ্রামে পুরুষদের দুই বিয়ে করতে হয়

আপডেট টাইম : ০২:৪৩:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ নভেম্বর ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পাকিস্তান-ভারত সীমান্তের কাছে রাজস্থানের বাড়মের জেলার ছোট্ট একটি গ্রাম দেরাসর। বড়জোর ৬০০ মানুষের বাস গ্রামটিতে।

কিন্তু এই গ্রামের অদ্ভুত এক রীতি গোটা ভারতে পরিচিতি এনে দিয়েছে। দেরাসরের প্রতিটি পুরুষের অন্তত দু’জন করে স্ত্রী। এ নিয়ে নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আনন্দবাজার পত্রিকা।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এ গ্রামের বাসিন্দাদের বিশ্বাস, প্রথম স্ত্রী থেকে কোনো স্বামীরই সন্তান হবে না। সন্তানের মুখ দেখতে গেলে দ্বিতীয় বিয়ে করতেই হবে। এই অদ্ভুত বিশ্বাস থেকেই দ্বিতীয় বিয়ে করেন দেরাসর গ্রামের পুরুষরা।

এমন রীতির সূত্রপাত অতীতের একটি ঘটনা থেকে। গ্রামের এক লোকের নাকি কিছুতেই সন্তান হচ্ছিল না। পরে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করতেই সন্তানলাভ করেন।

এরপর যখনই গ্রামের কোনো পুরুষ এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতেন, তার দ্বিতীয় বিয়ে দেওয়া হত। আর তাতেই নাকি মিলত ফল। এভাবে পুরুষের বহুবিবাহ গ্রামের রীতিতে পরিণত হয়।

অবশ্য এটি ছাড়াও অন্য একটি কারণ রয়েছে এমন রীতির পিছনে। দেরাসর গ্রামে শুরু থেকেই তীব্র পানি সঙ্কট চলে আসছে। অন্তত পাঁচ কিলোমিটার হেঁটে পরিবারের নারীদের পানি আনতে হয় এই গ্রামে। অন্তঃসত্ত্বা হলে কোনো নারীর পক্ষেই হেঁটে এতদূর থেকে পানি আনা সম্ভব নয়। সে কারণেও দ্বিতীয় বিয়ে করে থাকেন পুরুষরা।

সে ক্ষেত্রে প্রথমজনকে সে অর্থে স্ত্রীর কোনো অধিকারই দেওয়া হয় না। তারা বরং বাড়ির পরিচারিকার মতো জীবন কাটিয়ে থাকেন। প্রথম স্ত্রীকে বলা হয় ‘জল স্ত্রী’।

সাধারণত প্রথম স্ত্রী সারা জীবনে সন্তানধারণের অধিকার পান না। স্বামীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনেরও অধিকার নেই তাদের।

কোনো পুরুষ যদি এই রীতির বিরোধিতা করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে পুরো গ্রাম একজোট হয়। এমনকি নিজের পরিবারও তাকে পরিত্যাগ করবে। গ্রাম থেকেই বিতাড়িত করা হয় তাকে।

দ্বিতীয় স্ত্রীও যদি সন্তানধারণ না করে থাকেন সে ক্ষেত্রে স্বামীকে আরও একটি বিয়ে করতে হয়। উপার্জনকারী স্বামীকে নিতে হয় পুরো পরিবারের দায়িত্ব।