ঢাকা ১১:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিক্ষার্থীসহ নিরাপদ জীবন ও জীবিকায় মাস্ক হয়ে উঠুক নিত্যসঙ্গী: রাষ্ট্রপতিপুত্র এমপি তৌফিক

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫৫:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ অক্টোবর ২০২১
  • ২২২ বার

রফিকুল ইসলামঃ কোভিড-১৯ বিদায় হওয়া সময়েরের ব্যাপার। সরকারের সফল কূটনৈতিক তৎপরতায় পাওয়া পর্যাপ্ত করোনা প্রতিষেধক টিকা সারাদেশের জনসাধারণের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও শিক্ষার্থীদের মাঝে টিকা গ্রহণে নিবন্ধনের কাজ সম্পন্ন প্রায়। সবাইকে গণটিকা কার্ক্রমের আওতায় না আনা পর্যন্ত করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় মাস্কের সর্বজনীন ব্যবহারের বিষয়টি নিশ্চিত জরুরি। এক্ষেত্রে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ সকল মানুষের জীবন-জীবীকা বাঁচানোর জন্য তথা নিরাপত্তায় অতি গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে উঠুক মাস্ক। কেননা, প্রতিষেধকের চেয়ে প্রতিরোধ আগে।

সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদও বদ্ধপরিকর। সাধারণ মানুষ ও পথচারীসহ প্রায় প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিতরণ করে চলেছে। করোনা প্রতিরোধে সরকারের মহতী এ উদ্যোগ ও নিরন্তর প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়ে ‘ভাটির শার্দূল’ খ্যাত রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের বড় ছেলে কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনের তিনবারের নির্বাচিত এমপি প্রকৌশলী রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক আশাবাদ ব্যক্ত করে এসব কথা বলেছেন।

বিভিন্ন বক্তৃতায় ও আলাপচারিতায় মাস্ককে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় অন্যতম রক্ষাকবচ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারিভাবে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হলেও আমরা স্বাস্থ্যসম্মত সঠিক পদ্ধতি অনুসরণে অতটা সচেতন হচ্ছি না। আবার ব্যবহারের ক্ষেত্রে উদাসীনতা ও কুঁড়েমিও পরিলক্ষিত হচ্ছে।

এমপি তৌফিক বলেন, সেই ৮ মার্চ ২০১৯ সালে বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সরকারিভাবে নেওয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে সরকারের সবরকম পদক্ষেপ তখনই সফল হবে, যদি নিজেরা সচেতন হই। মাস্ক ব্যবহারে গুরুত্ব বোঝাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, জাতীয় ইমাম একাডেমির পরিচালকের ভিডিও বার্তা প্রচার, পুলিশিং বিটের দায়িত্বপ্রাপ্তরা শুক্রবারে জুমার দিন মসজিদে মসজিদে ও বাড়ি বাড়ি গিয়ে মাস্ক বিতরণ এবং শহর-হাওরের রাস্তার বিভিন্ন মোড়ে ও হাট-বাজারে স্বেচ্ছাসেবকসহ অকেকেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শগুলো তুলে ধরাার ফলে মাস্ক পরা বেড়ে গেছে, এটা উত্তম দিক।

শিক্ষকদের প্রতি পুরো আস্থা নিয়ে শিক্ষানুরাগী নতুন প্রজন্মের এ জাতীয় সংসদ সদস্য বলেন, অনুরূপ প্রতিদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্যারেরা শিক্ষার্থীদের মাঝে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রয়োজনীয়তা জোরালোভাবে তুলে ধরলে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের পদক্ষেপ বাস্তবায়নের বিপরীতে জনসাধারণও লাভ করবেন সুরক্ষিত জীবন ও জীবীকা।

শিক্ষকেরা অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব ও সমাজ বিনির্মাণে আদর্শ মডেল উল্লেখ করে এমপি তৌফিক বলেন, করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কোন বিষয়টি বড় ভূমিকা রাখছে তা বলা মুশকিল। তাই নিয়মিত মাস্ক ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি ক্ষণেক্ষণে হাত ধোয়া বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এছাড়া টিকা নিতে মসজিদের ইমাম, জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, সমাজ-সংস্কৃতি, রাজনৈতিক ও গণমাধ্যমকর্মীরাও জনসচেতনতা তৈরিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করার পাশাপাশি কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে একমাত্র টিকাই কেবল ষোলআনা নিয়ন্ত্রণে সক্ষম নয় মন্তব্য করে জীবন ও জীবীকার তাগিদে হলেও উপরিউক্ত অভ্যাসগুলোতে অভ্যস্ত হওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানান আধুনিক হাওরের রূপকার ‘হাওরসিংহগ্রীব’ খ্যাত জননন্দিত নেতা এমপি প্রকৌশলী তৌফিক।

জেলা পরিষদের বিতরণ করা কাপড়ের রঙবেরঙের সরকারি মাস্ক পেয়ে শিক্ষার্থীরাও বেজায় খুশি। কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মাতৃ-নামীয় বিদ্যাপীঠ তমিজা খাতুন সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালের ষষ্ঠ শ্রেণির জুঁই শাখার ছাত্রী অংকিতা বৈষ্ণব অধরা ও চামেলি শাখার নাফিসা নাওয়ার এবং সপ্তম শ্রেণির কোয়েল শাখার নিশাত তাসনিম ও দোয়েল শাখার আরিশা জাজান, ধলাই-বগাদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসমিয়া, আশামনি ও ইয়াসিন মিয়া; ইটনার মহেশচন্দ্র সরকারি মডেল শিক্ষা নিকেতনের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসপিয়া জাহান তানহা ও আবদুল্লাহ আল দাইয়ান; অষ্টগ্রাম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যলয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ফারিয়া সুলতানা জিম ও প্রান্ত দাস সহ অনেকেই তাদের সরল সহজ প্রতিক্রিয়ায় জানান, মাস্ক পরা, হাত ধোয়া ও হেন্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের উপকারীতা ও  স্যার-ম্যাডামেরা বুঝিয়ে বলেছেন; কিন্তু মাস্ক পরলে দমফাঁটা লাগে। তাছাড়া কথা বললে কম শোনা যায় এবং মাস্ক নাক থেকে নেমে যাবার দরুন বারবার টেনে তুলে দেবার বিড়ম্বনা সয়েই তো সবারই পরা আবশ্যিক দরকার প্রাণের ঝুঁকি রয়েছে বলে। বিদায় হতে কবে যে করোনার করুণা হয়! – কাতরতার ভাষার সোনামণিদের চোখে-মুখে।

03
এদিকে করোনা পরবর্তী পাঠদান ও শিক্ষাকার্যক্রমে প্রথম দিকে স্বাস্থ্যবিধি মানার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হলেও হালে অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই দিনে দিনে তা শৈথিল্যতায় গড়াচ্ছে হাওরাঞ্চল তো বটেই; লোকারণ্য শহরের বেশকিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও। স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা শহরে বেশি হলেও হাওরের গ্রামের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টদের আগ্রহ নেহাৎ কম। তাছাড়া গণপরিবহন, রাস্তাঘাট, দোকানপাট, হাটবাজার থেকে শুরু করে সেলুন; অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানার যেন কোনো নাম নেই। মাস্ক পরতে মানুষকে বাধ্য করার জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে নামা সত্ত্বেও হুঁশ ফিরছে না।

বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তমিজা খাতুন সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবেদা আক্তার জাহান তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার দৃঢ়তা ব্যক্ত করে বলেন, মূলত নিয়মিত নজরদারি ও পর্যবেক্ষণের কারণে মানুষের মধ্যে যে সচেতনতা তৈরি হয়, তা থেকেই সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার অভ্যাস গড়ে উঠে।

এতে তিনটি ক্ষেত্রে মনোযোগ দেওয়া জরুরি মনে করে তিনি বলেন, ওষুধবর্হিভূত উদ্যোগ, যার মধ্যে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে সমন্বিত উদ্যোগে জোর দেওয়ার বিষয়টি থাকবে। বাকি দুটি বিষয় হলো স্বাস্থ্য খাতে নজরদারি বাড়ানো ও গণটিকাদান। টিকা সবচেয়ে কার্যকর সমাধান। সে লক্ষ্যেই সরকারের উদার নীতির ফলে শিক্ষার্থীদের টিকা নিবন্ধনের কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। তাই অন্তত টিকার ডোজ কমপ্লিট না হওয়া পর্যন্ত শৈথল্যতা দেখানোর কোনো সুযোগ নেই বলে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে জোর দেওয়া দরকার বলে মনে করেন আবেদা আক্তার জাহান।

মাস্ক পড়ুন, নিরাপদে থাকুন, নিরাপদে রাখুন’ – এই স্লোগান নিয়ে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের মহামারির দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমণ রোধে মাস্ক পরিধান সরকারের পদক্ষেপকে সামনে রেখে সাধারণ জনগণ ও পথচারী এবং দীর্ঘ দেড় বছর ছুটির পর গত ১২ সেপ্টেম্বর সারা দেশজুড়ে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যারের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে করোনাকালে সরকারি নির্দেশনা মেনে সীমিত পরিসরে ক্লাস শুরুর পটভূমিতে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টদের সুরক্ষার কথা ভেবে কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদও দফায় দফায় মাস্ক বিতরণ করে যাচ্ছে।

জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ৯১ লাখ টাকার বরাদ্দের বিপরীতে ৪৬ লাখ টাকার মাস্ক ও স্যানিটাইজার ইতোমধ্যে কয়েক দফাতে বিতরণ করা হয়েছে। বাকি টাকার মাস্ক ও স্যানিটাইজার কিংবা অন্যকোন উপকরণ বিতরণ করা হবে পর্যায়ক্রমে, টেন্ডারের মাধ্যমে পাওয়ার পর পরেই। জেলা সদরসহ ১৩টি উপজেলায় জেলা পরিষদ সদস্যদের মাধ্যমে এ মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিতরণের কাজ চলমান রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।

মাস্ক পরা, হাত ধোয়া ও হেন্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার তথা নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি প্রসঙ্গে দু’বারের মনোনীত জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও প্রাক্তন পিপি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান বলেন, মাস্ক পরা ও হাত ধোয়াসহ অন্যসব উত্তম অভ্যাসের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অনেকাংশে কমানো সম্ভব। বিশেষ করে মাস্ক পরিধানে সুফল পেতে নাক এবং মুখ পুরোটাই ঢেকে রাখার পরামর্শ দেন তিনি।

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান আরও বলেন, সরকারি ভাষ্যমতে দেশে করোনা সংক্রমণের হার ৭ শতাংশে নেমে এসেছে। নিম্নমুখী এ প্রবণতা ধরে রাখতে পাবলিক, অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট সবারই দায়িত্বপূর্ণ আচরণের জোরালো দাবি রাখে।

ভিন্নতার ক্ষেত্রে শঙ্কা জাগান দিয়ে তিনি বলেন,  বিশেষ করে যে-কারণে ঠিক ৫৪৪ দিন পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সীমিত পরিসরে খোলা হয়েছে, শিক্ষার্থীরাও ফের যাত্রা শুরু করেছে ভবিষ্যতের দিকে; তা যেন স্বাস্থ্যবিধি অমান্যতায় কোনো অবস্থাতেই থমকে না দাঁড়ায়।

এ প্রসঙ্গে গুরুদয়াল সরকারি কলেজের নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. জামালুর রহমান বলেন, কোনো কারণে সরকারের ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ নীতির ব্যত্যয় ঘটলে স্বাস্থ্যঝুঁকি নির্ঘাত বেড়ে যাবে, যা বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে বিরাট বাধা হয়ে দেখা দিবে।

তা নিরসনের উপায়ের ওপর আলোকপাত করে তিনি বলেন, পরিস্থিতির নাজুকতা মোকাবিলায় আরও যেন সচেতন হই, মাস্ক ব্যবহারে নিজে আগ্রহী হই ও অন্যকে উদ্বুদ্ধ করি; আর কথা বলার সময় মুখের মাস্ক না নামিয়ে কথা বলি। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে উদ্বুদ্ধ করা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচ্ছন্ন রাখাসহ ১৯ দফা অনুসরণ করে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনাসহ বেশকিছু সতর্কতা ও সচেতনতার ভিত্তিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) নির্দেশনা জারি করা হয়েছিল বলে স্মরণ করেন তিনি।

এক অভিন্ন মতামত প্রকাশ করেছেন মিঠামইনের মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হক সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী, মহিষারকান্দি নিজামিয়া মাতলুবুল উলুম আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোবারক হোসেন, ইটনায় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. ইসলাম উদ্দিন ও মহেশচন্দ্র সরকারি মডেল শিক্ষা নিকেতনের প্রধান শিক্ষক আবুবক্কর ছিদ্দিক এবং অষ্টগ্রাম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেবেশ চন্দ্র দাস প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়, স্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, এনজিওস ইনোভেশন ফর পোভার্টি অ্যাকশন, গ্রিন ভয়েস এবং বাংলাদেশ সরকারের এটুআই কর্মসূচি ও বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত মাস্ক পরার অভ্যাস নিয়ে দেশে একটি গবেষণা করেছে। গবেষণার সেই সমীক্ষায় দেখা যায়, সার্জিক্যাল মাস্কের কার্যকারীতা ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত। আর ২০ বার ধোয়ার পরও এর কার্যকারীতা ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত থাকে। অন্যদিকে কাপড়ের মাস্কের কার্যকারীতা প্রায় ৪০ শতাংশ। সমন্বিত উপায়ে মাস্ক ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার হার ২৯ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ে বলে ওই গবেষণায় উঠে এসেছে।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে, ব্যবহৃত মাস্ক যেন যত্রতত্র না ফেলা হয়। আর ব্যবহৃত মাস্ক ডাস্টবিনে না ফেলে পুড়িয়ে ফেলার কথা বলা হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
সহযোগী সম্পাদক, আজকের সূর্যোদয়, ঢাকা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

শিক্ষার্থীসহ নিরাপদ জীবন ও জীবিকায় মাস্ক হয়ে উঠুক নিত্যসঙ্গী: রাষ্ট্রপতিপুত্র এমপি তৌফিক

আপডেট টাইম : ১০:৫৫:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ অক্টোবর ২০২১

রফিকুল ইসলামঃ কোভিড-১৯ বিদায় হওয়া সময়েরের ব্যাপার। সরকারের সফল কূটনৈতিক তৎপরতায় পাওয়া পর্যাপ্ত করোনা প্রতিষেধক টিকা সারাদেশের জনসাধারণের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও শিক্ষার্থীদের মাঝে টিকা গ্রহণে নিবন্ধনের কাজ সম্পন্ন প্রায়। সবাইকে গণটিকা কার্ক্রমের আওতায় না আনা পর্যন্ত করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় মাস্কের সর্বজনীন ব্যবহারের বিষয়টি নিশ্চিত জরুরি। এক্ষেত্রে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ সকল মানুষের জীবন-জীবীকা বাঁচানোর জন্য তথা নিরাপত্তায় অতি গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে উঠুক মাস্ক। কেননা, প্রতিষেধকের চেয়ে প্রতিরোধ আগে।

সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদও বদ্ধপরিকর। সাধারণ মানুষ ও পথচারীসহ প্রায় প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিতরণ করে চলেছে। করোনা প্রতিরোধে সরকারের মহতী এ উদ্যোগ ও নিরন্তর প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়ে ‘ভাটির শার্দূল’ খ্যাত রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের বড় ছেলে কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনের তিনবারের নির্বাচিত এমপি প্রকৌশলী রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক আশাবাদ ব্যক্ত করে এসব কথা বলেছেন।

বিভিন্ন বক্তৃতায় ও আলাপচারিতায় মাস্ককে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় অন্যতম রক্ষাকবচ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারিভাবে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হলেও আমরা স্বাস্থ্যসম্মত সঠিক পদ্ধতি অনুসরণে অতটা সচেতন হচ্ছি না। আবার ব্যবহারের ক্ষেত্রে উদাসীনতা ও কুঁড়েমিও পরিলক্ষিত হচ্ছে।

এমপি তৌফিক বলেন, সেই ৮ মার্চ ২০১৯ সালে বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সরকারিভাবে নেওয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে সরকারের সবরকম পদক্ষেপ তখনই সফল হবে, যদি নিজেরা সচেতন হই। মাস্ক ব্যবহারে গুরুত্ব বোঝাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, জাতীয় ইমাম একাডেমির পরিচালকের ভিডিও বার্তা প্রচার, পুলিশিং বিটের দায়িত্বপ্রাপ্তরা শুক্রবারে জুমার দিন মসজিদে মসজিদে ও বাড়ি বাড়ি গিয়ে মাস্ক বিতরণ এবং শহর-হাওরের রাস্তার বিভিন্ন মোড়ে ও হাট-বাজারে স্বেচ্ছাসেবকসহ অকেকেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শগুলো তুলে ধরাার ফলে মাস্ক পরা বেড়ে গেছে, এটা উত্তম দিক।

শিক্ষকদের প্রতি পুরো আস্থা নিয়ে শিক্ষানুরাগী নতুন প্রজন্মের এ জাতীয় সংসদ সদস্য বলেন, অনুরূপ প্রতিদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্যারেরা শিক্ষার্থীদের মাঝে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রয়োজনীয়তা জোরালোভাবে তুলে ধরলে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের পদক্ষেপ বাস্তবায়নের বিপরীতে জনসাধারণও লাভ করবেন সুরক্ষিত জীবন ও জীবীকা।

শিক্ষকেরা অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব ও সমাজ বিনির্মাণে আদর্শ মডেল উল্লেখ করে এমপি তৌফিক বলেন, করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কোন বিষয়টি বড় ভূমিকা রাখছে তা বলা মুশকিল। তাই নিয়মিত মাস্ক ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি ক্ষণেক্ষণে হাত ধোয়া বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এছাড়া টিকা নিতে মসজিদের ইমাম, জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, সমাজ-সংস্কৃতি, রাজনৈতিক ও গণমাধ্যমকর্মীরাও জনসচেতনতা তৈরিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করার পাশাপাশি কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে একমাত্র টিকাই কেবল ষোলআনা নিয়ন্ত্রণে সক্ষম নয় মন্তব্য করে জীবন ও জীবীকার তাগিদে হলেও উপরিউক্ত অভ্যাসগুলোতে অভ্যস্ত হওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানান আধুনিক হাওরের রূপকার ‘হাওরসিংহগ্রীব’ খ্যাত জননন্দিত নেতা এমপি প্রকৌশলী তৌফিক।

জেলা পরিষদের বিতরণ করা কাপড়ের রঙবেরঙের সরকারি মাস্ক পেয়ে শিক্ষার্থীরাও বেজায় খুশি। কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মাতৃ-নামীয় বিদ্যাপীঠ তমিজা খাতুন সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালের ষষ্ঠ শ্রেণির জুঁই শাখার ছাত্রী অংকিতা বৈষ্ণব অধরা ও চামেলি শাখার নাফিসা নাওয়ার এবং সপ্তম শ্রেণির কোয়েল শাখার নিশাত তাসনিম ও দোয়েল শাখার আরিশা জাজান, ধলাই-বগাদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসমিয়া, আশামনি ও ইয়াসিন মিয়া; ইটনার মহেশচন্দ্র সরকারি মডেল শিক্ষা নিকেতনের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসপিয়া জাহান তানহা ও আবদুল্লাহ আল দাইয়ান; অষ্টগ্রাম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যলয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ফারিয়া সুলতানা জিম ও প্রান্ত দাস সহ অনেকেই তাদের সরল সহজ প্রতিক্রিয়ায় জানান, মাস্ক পরা, হাত ধোয়া ও হেন্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের উপকারীতা ও  স্যার-ম্যাডামেরা বুঝিয়ে বলেছেন; কিন্তু মাস্ক পরলে দমফাঁটা লাগে। তাছাড়া কথা বললে কম শোনা যায় এবং মাস্ক নাক থেকে নেমে যাবার দরুন বারবার টেনে তুলে দেবার বিড়ম্বনা সয়েই তো সবারই পরা আবশ্যিক দরকার প্রাণের ঝুঁকি রয়েছে বলে। বিদায় হতে কবে যে করোনার করুণা হয়! – কাতরতার ভাষার সোনামণিদের চোখে-মুখে।

03
এদিকে করোনা পরবর্তী পাঠদান ও শিক্ষাকার্যক্রমে প্রথম দিকে স্বাস্থ্যবিধি মানার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হলেও হালে অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই দিনে দিনে তা শৈথিল্যতায় গড়াচ্ছে হাওরাঞ্চল তো বটেই; লোকারণ্য শহরের বেশকিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও। স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা শহরে বেশি হলেও হাওরের গ্রামের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টদের আগ্রহ নেহাৎ কম। তাছাড়া গণপরিবহন, রাস্তাঘাট, দোকানপাট, হাটবাজার থেকে শুরু করে সেলুন; অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানার যেন কোনো নাম নেই। মাস্ক পরতে মানুষকে বাধ্য করার জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে নামা সত্ত্বেও হুঁশ ফিরছে না।

বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তমিজা খাতুন সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবেদা আক্তার জাহান তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার দৃঢ়তা ব্যক্ত করে বলেন, মূলত নিয়মিত নজরদারি ও পর্যবেক্ষণের কারণে মানুষের মধ্যে যে সচেতনতা তৈরি হয়, তা থেকেই সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার অভ্যাস গড়ে উঠে।

এতে তিনটি ক্ষেত্রে মনোযোগ দেওয়া জরুরি মনে করে তিনি বলেন, ওষুধবর্হিভূত উদ্যোগ, যার মধ্যে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে সমন্বিত উদ্যোগে জোর দেওয়ার বিষয়টি থাকবে। বাকি দুটি বিষয় হলো স্বাস্থ্য খাতে নজরদারি বাড়ানো ও গণটিকাদান। টিকা সবচেয়ে কার্যকর সমাধান। সে লক্ষ্যেই সরকারের উদার নীতির ফলে শিক্ষার্থীদের টিকা নিবন্ধনের কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। তাই অন্তত টিকার ডোজ কমপ্লিট না হওয়া পর্যন্ত শৈথল্যতা দেখানোর কোনো সুযোগ নেই বলে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে জোর দেওয়া দরকার বলে মনে করেন আবেদা আক্তার জাহান।

মাস্ক পড়ুন, নিরাপদে থাকুন, নিরাপদে রাখুন’ – এই স্লোগান নিয়ে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের মহামারির দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমণ রোধে মাস্ক পরিধান সরকারের পদক্ষেপকে সামনে রেখে সাধারণ জনগণ ও পথচারী এবং দীর্ঘ দেড় বছর ছুটির পর গত ১২ সেপ্টেম্বর সারা দেশজুড়ে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যারের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে করোনাকালে সরকারি নির্দেশনা মেনে সীমিত পরিসরে ক্লাস শুরুর পটভূমিতে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টদের সুরক্ষার কথা ভেবে কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদও দফায় দফায় মাস্ক বিতরণ করে যাচ্ছে।

জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ৯১ লাখ টাকার বরাদ্দের বিপরীতে ৪৬ লাখ টাকার মাস্ক ও স্যানিটাইজার ইতোমধ্যে কয়েক দফাতে বিতরণ করা হয়েছে। বাকি টাকার মাস্ক ও স্যানিটাইজার কিংবা অন্যকোন উপকরণ বিতরণ করা হবে পর্যায়ক্রমে, টেন্ডারের মাধ্যমে পাওয়ার পর পরেই। জেলা সদরসহ ১৩টি উপজেলায় জেলা পরিষদ সদস্যদের মাধ্যমে এ মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিতরণের কাজ চলমান রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।

মাস্ক পরা, হাত ধোয়া ও হেন্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার তথা নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি প্রসঙ্গে দু’বারের মনোনীত জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও প্রাক্তন পিপি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান বলেন, মাস্ক পরা ও হাত ধোয়াসহ অন্যসব উত্তম অভ্যাসের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অনেকাংশে কমানো সম্ভব। বিশেষ করে মাস্ক পরিধানে সুফল পেতে নাক এবং মুখ পুরোটাই ঢেকে রাখার পরামর্শ দেন তিনি।

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান আরও বলেন, সরকারি ভাষ্যমতে দেশে করোনা সংক্রমণের হার ৭ শতাংশে নেমে এসেছে। নিম্নমুখী এ প্রবণতা ধরে রাখতে পাবলিক, অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট সবারই দায়িত্বপূর্ণ আচরণের জোরালো দাবি রাখে।

ভিন্নতার ক্ষেত্রে শঙ্কা জাগান দিয়ে তিনি বলেন,  বিশেষ করে যে-কারণে ঠিক ৫৪৪ দিন পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সীমিত পরিসরে খোলা হয়েছে, শিক্ষার্থীরাও ফের যাত্রা শুরু করেছে ভবিষ্যতের দিকে; তা যেন স্বাস্থ্যবিধি অমান্যতায় কোনো অবস্থাতেই থমকে না দাঁড়ায়।

এ প্রসঙ্গে গুরুদয়াল সরকারি কলেজের নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. জামালুর রহমান বলেন, কোনো কারণে সরকারের ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ নীতির ব্যত্যয় ঘটলে স্বাস্থ্যঝুঁকি নির্ঘাত বেড়ে যাবে, যা বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে বিরাট বাধা হয়ে দেখা দিবে।

তা নিরসনের উপায়ের ওপর আলোকপাত করে তিনি বলেন, পরিস্থিতির নাজুকতা মোকাবিলায় আরও যেন সচেতন হই, মাস্ক ব্যবহারে নিজে আগ্রহী হই ও অন্যকে উদ্বুদ্ধ করি; আর কথা বলার সময় মুখের মাস্ক না নামিয়ে কথা বলি। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে উদ্বুদ্ধ করা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচ্ছন্ন রাখাসহ ১৯ দফা অনুসরণ করে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনাসহ বেশকিছু সতর্কতা ও সচেতনতার ভিত্তিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) নির্দেশনা জারি করা হয়েছিল বলে স্মরণ করেন তিনি।

এক অভিন্ন মতামত প্রকাশ করেছেন মিঠামইনের মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হক সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী, মহিষারকান্দি নিজামিয়া মাতলুবুল উলুম আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোবারক হোসেন, ইটনায় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. ইসলাম উদ্দিন ও মহেশচন্দ্র সরকারি মডেল শিক্ষা নিকেতনের প্রধান শিক্ষক আবুবক্কর ছিদ্দিক এবং অষ্টগ্রাম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেবেশ চন্দ্র দাস প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়, স্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, এনজিওস ইনোভেশন ফর পোভার্টি অ্যাকশন, গ্রিন ভয়েস এবং বাংলাদেশ সরকারের এটুআই কর্মসূচি ও বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত মাস্ক পরার অভ্যাস নিয়ে দেশে একটি গবেষণা করেছে। গবেষণার সেই সমীক্ষায় দেখা যায়, সার্জিক্যাল মাস্কের কার্যকারীতা ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত। আর ২০ বার ধোয়ার পরও এর কার্যকারীতা ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত থাকে। অন্যদিকে কাপড়ের মাস্কের কার্যকারীতা প্রায় ৪০ শতাংশ। সমন্বিত উপায়ে মাস্ক ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার হার ২৯ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ে বলে ওই গবেষণায় উঠে এসেছে।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে, ব্যবহৃত মাস্ক যেন যত্রতত্র না ফেলা হয়। আর ব্যবহৃত মাস্ক ডাস্টবিনে না ফেলে পুড়িয়ে ফেলার কথা বলা হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
সহযোগী সম্পাদক, আজকের সূর্যোদয়, ঢাকা।