ঢাকা ১২:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রেমিক-প্রেমিকার চুল কেটে মোবাইল ছিনিয়ে নিলেন ‘সমাজসেবী’, অতঃপর

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৪০:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২১
  • ১৫৫ বার

 

হাওর বার্তা ডেস্কঃ এক সময়ের বিজেপি নেত্রী এখন ‘সমাজসেবী’। সে নেত্রী অবতীর্ণ হয়েছেন নীতি পুলিশের ভূমিকায়। কেটে দিয়েছেন প্রেমিক-প্রেমিকার চুল। তাদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছেন মোবাইল।  নিজেই সেই ভিডিও ফেসবুক পেজে আপলোড করেছেন।

তিনি হচ্ছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাবলি মুখোপাধ্যায়। যাকে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে রাজ্য পুলিশ গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে করা হয়েছে মোবাইল ছিনতাইয়ের মামলা।

শুক্রবার বাবলিকে কৃষ্ণনগর আদালতে হাজির করা হয়।  পরে আদালত তাকে সাত দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

পুলিশ জানায়, নদিয়ার কৃষ্ণনগরে বিজেপির মিটিং-মিছিলে এক সময়ের পরিচিত মুখ বছর কয়েক ধরে ‘সমাজসেবী’ পরিচয়ে দাম্পত্য কলহে সালিশি করে আসছিলেন এবং সেই সব ভিডিও নিজের ফেসবুক পেজ এর মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছিলেন। সালিশির জন্য তিনি টাকাও নিতেন। কৃষ্ণনগর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় করেছেন অফিসও। সেখানে মঙ্গলবার রাত ১টা নাগাদ অফিস বন্ধ করার সময়ে বাবলির দুই সহযোগী যুবক ওই ছেলেমেয়ে দু’টিকে দেখে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। সেই সময়েই গাড়িতে করিমপুর থেকে এসে হাজির হন ছেলেটির মা ও দুই আত্মীয়। দুই সহযোগী সবাইকে বাবলির অফিসে নিয়ে আসে।

বাবলির দাবি, জানতে পারি, ছেলেটির বয়স প্রায় আঠারো বছর। মেয়েটির চৌদ্দ, বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরে। ফেসবুকে আলাপ। মেয়েটি ছেলেটির সঙ্গে বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছে। আর ছেলেটির বাড়ির লোক তাদের নিতে এসেছে।

তদন্তে পুলিশ জেনেছে, রাতেই বাবলি মেয়ের মাকে ফোন করে ডেকে পাঠান। বাকিদের অফিসে আটকে রাখেন। বুধবার সকালে মেয়েটির মা এলে দুই পরিবারের লোকজনকে মুখোমুখি বসিয়ে সালিশ শুরু করেন বাবলি। বাড়ির লোকের সামনেই ছেলেটিকে চড়থাপ্পড় মারতে থাকেন তিনি। বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ তিনি ছেলেমেয়ে দু’টিকে অফিস থেকে বের করে সবার সামনেই মারধর করতে থাকেন। বাসস্ট্যান্ডে ভিড়ের সামনেই তিনি ছেলেমেয়ে দু’টির চুল কেটে নেন। দুই পরিবারের লোকজন থামতে অনুরোধ করলেও তিনি তা শোনেননি। পরে অবশ্য ছেলেটি ও মেয়েটি নিজের বাড়ি ফিরে যায়।

বাবলির দাবি, যুবকের মোবাইলে মেয়েটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছবি ছিল বলেই তিনি তা কেড়ে নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলেন।

কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার ঈশানী পাল বলেন, আমরা তদন্ত চালিয়ে ওই মহিলার বিরুদ্ধে মামলা করেছি।

বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার মিডিয়া আহ্বায়ক সন্দীপ মজুমদার বলছেন, এক সময়ে ওই মহিলা আমাদের দল করতেন ঠিকই। তবে নানা কারণে বছর দুয়েক আগেই দল তার সঙ্গে যাবতীয় যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

প্রেমিক-প্রেমিকার চুল কেটে মোবাইল ছিনিয়ে নিলেন ‘সমাজসেবী’, অতঃপর

আপডেট টাইম : ১০:৪০:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২১

 

হাওর বার্তা ডেস্কঃ এক সময়ের বিজেপি নেত্রী এখন ‘সমাজসেবী’। সে নেত্রী অবতীর্ণ হয়েছেন নীতি পুলিশের ভূমিকায়। কেটে দিয়েছেন প্রেমিক-প্রেমিকার চুল। তাদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছেন মোবাইল।  নিজেই সেই ভিডিও ফেসবুক পেজে আপলোড করেছেন।

তিনি হচ্ছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাবলি মুখোপাধ্যায়। যাকে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে রাজ্য পুলিশ গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে করা হয়েছে মোবাইল ছিনতাইয়ের মামলা।

শুক্রবার বাবলিকে কৃষ্ণনগর আদালতে হাজির করা হয়।  পরে আদালত তাকে সাত দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

পুলিশ জানায়, নদিয়ার কৃষ্ণনগরে বিজেপির মিটিং-মিছিলে এক সময়ের পরিচিত মুখ বছর কয়েক ধরে ‘সমাজসেবী’ পরিচয়ে দাম্পত্য কলহে সালিশি করে আসছিলেন এবং সেই সব ভিডিও নিজের ফেসবুক পেজ এর মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছিলেন। সালিশির জন্য তিনি টাকাও নিতেন। কৃষ্ণনগর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় করেছেন অফিসও। সেখানে মঙ্গলবার রাত ১টা নাগাদ অফিস বন্ধ করার সময়ে বাবলির দুই সহযোগী যুবক ওই ছেলেমেয়ে দু’টিকে দেখে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। সেই সময়েই গাড়িতে করিমপুর থেকে এসে হাজির হন ছেলেটির মা ও দুই আত্মীয়। দুই সহযোগী সবাইকে বাবলির অফিসে নিয়ে আসে।

বাবলির দাবি, জানতে পারি, ছেলেটির বয়স প্রায় আঠারো বছর। মেয়েটির চৌদ্দ, বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরে। ফেসবুকে আলাপ। মেয়েটি ছেলেটির সঙ্গে বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছে। আর ছেলেটির বাড়ির লোক তাদের নিতে এসেছে।

তদন্তে পুলিশ জেনেছে, রাতেই বাবলি মেয়ের মাকে ফোন করে ডেকে পাঠান। বাকিদের অফিসে আটকে রাখেন। বুধবার সকালে মেয়েটির মা এলে দুই পরিবারের লোকজনকে মুখোমুখি বসিয়ে সালিশ শুরু করেন বাবলি। বাড়ির লোকের সামনেই ছেলেটিকে চড়থাপ্পড় মারতে থাকেন তিনি। বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ তিনি ছেলেমেয়ে দু’টিকে অফিস থেকে বের করে সবার সামনেই মারধর করতে থাকেন। বাসস্ট্যান্ডে ভিড়ের সামনেই তিনি ছেলেমেয়ে দু’টির চুল কেটে নেন। দুই পরিবারের লোকজন থামতে অনুরোধ করলেও তিনি তা শোনেননি। পরে অবশ্য ছেলেটি ও মেয়েটি নিজের বাড়ি ফিরে যায়।

বাবলির দাবি, যুবকের মোবাইলে মেয়েটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছবি ছিল বলেই তিনি তা কেড়ে নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলেন।

কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার ঈশানী পাল বলেন, আমরা তদন্ত চালিয়ে ওই মহিলার বিরুদ্ধে মামলা করেছি।

বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার মিডিয়া আহ্বায়ক সন্দীপ মজুমদার বলছেন, এক সময়ে ওই মহিলা আমাদের দল করতেন ঠিকই। তবে নানা কারণে বছর দুয়েক আগেই দল তার সঙ্গে যাবতীয় যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে।