সাগর দাস হিমেল, জবি প্রতিনিধিঃ দেশব্যাপী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপর ধর্ম অবমাননার মিথ্য আভযোগ তুলে মন্দির ভাংচুর, বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ, হত্যা ও লুণ্ঠন করা হয়। এর প্রতিবাদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচী পালিত করেছে।
বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার’ ও শান্ত চত্বরের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, শিক্ষক সমিতি এবং অন্যান্য শিক্ষকরা মানববন্ধনে যোগ দেন৷
মানববন্ধনে শ্রীচৈতন্য শিক্ষা ও সংস্কৃতি সংঘ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এর সভাপতি অরুপ গোপ অপূর্ব বলেন, ‘মিথ্যে অজুহাতে সংখ্যালঘুদের উপর পরিকল্পিত হামলার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণ, ক্ষতিগ্রস্থ মন্দির সংস্কার ও হামলার শিকার নাগরিকদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা প্রদানের জন্য “সংখ্যালঘু সুরক্ষা কমিশন” গঠনের লক্ষ্যেই আমাদের এই মানববন্ধন।’
মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করা আরেক শিক্ষার্থী প্রভাশ সরকার বলেন, ‘একটা স্বাধীন দেশে এমন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা কখনো কাম্য নয়। যে বা যারা উক্ত ঘটনায় জড়িত তাদের শাস্তি দাবি করছি।’
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নূরে আলম আবদুল্লাহ বলেন, ‘বাংলাদেশের যেখানে হামলা, ভাংচুর হয়েছে সব জায়গায় সুষ্ঠু তদন্ত করে হামলাকারীদের সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার জন্য। শুধু এই হামলা নয়, এর আগে যেসব হামলা হয়েছে সেগুলোরও বিচার দাবি জানাচ্ছি। যাতে করে তারা আর এমন ঘটনা না করতে পারে।’
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. শামীমা বেগম বলেন, ‘অন্যান্য ঘটনা নিয়ে এর আগেও আমাদের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছে কিন্তু সঠিক বিচার পায়নি৷ আমি চাই এই এই ঘটনার সাথে যারা জড়িত আছে তাদের সঠিক বিচার হোক এবং আমাদের মানববন্ধন সার্থক হোক৷’
প্রক্টর মো. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আজ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করছে৷ এভাবে যদি সারা বাংলাদেশের সকল সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করে তাহলে কুচক্রীরা রক্ষা পাবে না, পালাবার রাস্তা পাবে না। আমি সরকারের কাছে আবেদন করছি যে, যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত তাদের কঠোর আইনের আওতায় আনার জন্য। যাতে করে পরবর্তীতে কেউ এমন ঘটনা ঘটানোর চিন্তাও না করতে পারে।’
প্রসঙ্গত, গত ১৩ অক্টোবর (বুধবার) দুর্গাপূজার অষ্টমীর দিন ভোরে কুমিল্লা শহরের নানুয়াদিঘির উত্তরপাড়ে দর্পণ সংঘের পূজা মণ্ডপে পবিত্র কোরআন দেখা যায়। এরপর কোরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে ওই মণ্ডপে হামলা চালায় একদল লোক। তারপর কুমিল্লা, চাঁদপুর, রংপুর, গাইবান্ধা, পঞ্চগড়, গাজীপুর চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাম্প্রদায়িক হামলা ও ভাংচুরের অভিযোগ ওঠে।