ঢাকা ০৫:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আল্লাহর ভালোবাসা বঞ্চিত ব্যক্তি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৩৬:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২১
  • ১৪৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মহান আল্লাহর ভালোবাসা লাভ যেকোনো মুমিন-মুসলমানের পরম কাক্সিক্ষত বিষয়। ইবাদত-বন্দেগি ও বিভিন্ন আমলের মাধ্যমে এ ভালোবাসা অর্জন করতে হয়। কিন্তু আল্লাহতায়ালা কোনো অপচয়কারীকে ভালোবাসেন না। এ প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে বনি আদম, তোমরা প্রত্যেক নামাজের সময় সাজসজ্জা পরিধান করে নাও, খাও ও পান করো এবং অপচয় করো না। নিশ্চয়ই তিনি অপচয়কারীদের ভালোবাসেন না।’ সুরা আরাফ : ৩১

আমরা জানি, অর্থনৈতিক ভারসাম্য ঠিক রাখতে আয় ও ব্যয়ের যথাযথ প্রয়োগ জরুরি। হালালভাবে বেশি সম্পদ উপার্জন ও প্রয়োজন মাফিক তা ব্যয়ের ক্ষেত্রে ইসলামে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তবে ইসলাম অপব্যয় সমর্থন করে না। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয়ভাবে অপচয়ের নেতিবাচক প্রভাব ভিন্ন ভিন্ন সংকট তৈরি করে, যার মাশুল দিতে হয় সবাইকে। নিম্নে অপব্যয়ের কুফল ও অপব্যয় রোধে করণীয় তুলে ধরা হলো

অপচয়কারী শয়তানের ভাই : শয়তান মানুষের চিরশত্রু। শয়তানের প্ররোচনায় মুমিনের আমল-আখলাক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অপব্যয়কারীর মন্দ প্রবণতাকে আল্লাহ সেই ঘৃণিত শয়তানের ভাই হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই অপচয়কারীরা শয়তানের ভাই। শয়তান স্বীয় পালনকর্তার প্রতি খুবই অকৃতজ্ঞ।’ সুরা বনি ইসরাইল২৭

অপব্যয় হারাম উপার্জনে উদ্বুদ্ধ করে : অপচয় মানুষকে অর্থসংকটে ফেলে দেয়। একসময় দেখা যায়, সংসারের প্রয়োজনীয় ব্যয় বহন করা তার পক্ষে সম্ভব হয় না। ফলে নিরূপায় হয়ে সে হারাম উপার্জনের দিকে পা বাড়ায়। যে কারণে তাকে জান্নাত থেকে বঞ্চিত হতে হয়। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক ওই শরীর, যা হারাম দ্বারা গঠিত তার জন্য জাহান্নামই উপযুক্ত স্থান।’ সহিহ্ বোখারি : ৪৫১৯

পরকালে কঠিন জবাবদিহি : পরকালে মহান আল্লাহর সামনে প্রত্যেককে নিজ সম্পদের হিসাব দিতে হবে, সম্পদ কোথা থেকে সে উপার্জন করেছে এবং কোথায় ব্যয় করেছে। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কিয়ামত দিবসে পাঁচটি বিষয়ে জিজ্ঞাসিত না হওয়া পর্যন্ত আদম সন্তানের দুই পা তার রবের কাছ থেকে একটুকুও নড়বে না। এর অন্যতম হলো- তার ধন-সম্পদ সম্পর্কে, কোথা থেকে তা উপার্জন করেছে এবং কোথায় তা ব্যয়

করেছে?’  তিরমিজি : ২৪১৬

অপচয় থেকে বাঁচতে করণীয় : অপচয় থেকে বাঁচতে পবিত্র কোরআন ও হাদিসে ব্যয়ের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। এর অন্যতম হলো মধ্যপন্থা অবলম্বন। মধ্যপন্থা হলো অপচয় ও কৃপণতার মাঝামাঝি অবস্থা। সমাজে মধ্যপন্থা অবলম্বনকারী মানুষের সংখ্যা খুবই কম। কেউ খুব বেশি অপচয় করে, আবার কেউ করে কৃপণতা। অথচ ইসলাম এর মাঝামাঝি থাকতে নির্দেশ দিয়েছে। আল্লাহতায়ালা ইমানদার বান্দাদের বৈশিষ্ট্য প্রসঙ্গে বলেন, ‘তারা যখন ব্যয় করে, তখন অপব্যয় করে না এবং কৃপণতাও করে না; বরং তারা এতদুভয়ের মধ্যবর্তী অবস্থায় থাকে।’ সুরা ফুরকান ৬৭

সেই সঙ্গে লোক দেখানো ব্যয় না করা। সাধারণত মানুষ লোক দেখানোর জন্য প্রয়োজনের অতিরিক্ত ব্যয় করে, যা অপচয়ের শামিল। লৌকিকতা প্রদর্শনের জন্য সম্পদ ব্যয়কে ইসলাম অনুমোদন করে না। এ ছাড়া পরকালীন হিসাব-নিকাশের ভয় করা। অপচয়কারীদের সাহচর্য পরিহার করা এবং মৃত্যু সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করলে অপব্যয় ও অপচয় থেকে বিরত থাকা যায়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আল্লাহর ভালোবাসা বঞ্চিত ব্যক্তি

আপডেট টাইম : ১২:৩৬:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মহান আল্লাহর ভালোবাসা লাভ যেকোনো মুমিন-মুসলমানের পরম কাক্সিক্ষত বিষয়। ইবাদত-বন্দেগি ও বিভিন্ন আমলের মাধ্যমে এ ভালোবাসা অর্জন করতে হয়। কিন্তু আল্লাহতায়ালা কোনো অপচয়কারীকে ভালোবাসেন না। এ প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে বনি আদম, তোমরা প্রত্যেক নামাজের সময় সাজসজ্জা পরিধান করে নাও, খাও ও পান করো এবং অপচয় করো না। নিশ্চয়ই তিনি অপচয়কারীদের ভালোবাসেন না।’ সুরা আরাফ : ৩১

আমরা জানি, অর্থনৈতিক ভারসাম্য ঠিক রাখতে আয় ও ব্যয়ের যথাযথ প্রয়োগ জরুরি। হালালভাবে বেশি সম্পদ উপার্জন ও প্রয়োজন মাফিক তা ব্যয়ের ক্ষেত্রে ইসলামে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তবে ইসলাম অপব্যয় সমর্থন করে না। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয়ভাবে অপচয়ের নেতিবাচক প্রভাব ভিন্ন ভিন্ন সংকট তৈরি করে, যার মাশুল দিতে হয় সবাইকে। নিম্নে অপব্যয়ের কুফল ও অপব্যয় রোধে করণীয় তুলে ধরা হলো

অপচয়কারী শয়তানের ভাই : শয়তান মানুষের চিরশত্রু। শয়তানের প্ররোচনায় মুমিনের আমল-আখলাক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অপব্যয়কারীর মন্দ প্রবণতাকে আল্লাহ সেই ঘৃণিত শয়তানের ভাই হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই অপচয়কারীরা শয়তানের ভাই। শয়তান স্বীয় পালনকর্তার প্রতি খুবই অকৃতজ্ঞ।’ সুরা বনি ইসরাইল২৭

অপব্যয় হারাম উপার্জনে উদ্বুদ্ধ করে : অপচয় মানুষকে অর্থসংকটে ফেলে দেয়। একসময় দেখা যায়, সংসারের প্রয়োজনীয় ব্যয় বহন করা তার পক্ষে সম্ভব হয় না। ফলে নিরূপায় হয়ে সে হারাম উপার্জনের দিকে পা বাড়ায়। যে কারণে তাকে জান্নাত থেকে বঞ্চিত হতে হয়। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক ওই শরীর, যা হারাম দ্বারা গঠিত তার জন্য জাহান্নামই উপযুক্ত স্থান।’ সহিহ্ বোখারি : ৪৫১৯

পরকালে কঠিন জবাবদিহি : পরকালে মহান আল্লাহর সামনে প্রত্যেককে নিজ সম্পদের হিসাব দিতে হবে, সম্পদ কোথা থেকে সে উপার্জন করেছে এবং কোথায় ব্যয় করেছে। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কিয়ামত দিবসে পাঁচটি বিষয়ে জিজ্ঞাসিত না হওয়া পর্যন্ত আদম সন্তানের দুই পা তার রবের কাছ থেকে একটুকুও নড়বে না। এর অন্যতম হলো- তার ধন-সম্পদ সম্পর্কে, কোথা থেকে তা উপার্জন করেছে এবং কোথায় তা ব্যয়

করেছে?’  তিরমিজি : ২৪১৬

অপচয় থেকে বাঁচতে করণীয় : অপচয় থেকে বাঁচতে পবিত্র কোরআন ও হাদিসে ব্যয়ের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। এর অন্যতম হলো মধ্যপন্থা অবলম্বন। মধ্যপন্থা হলো অপচয় ও কৃপণতার মাঝামাঝি অবস্থা। সমাজে মধ্যপন্থা অবলম্বনকারী মানুষের সংখ্যা খুবই কম। কেউ খুব বেশি অপচয় করে, আবার কেউ করে কৃপণতা। অথচ ইসলাম এর মাঝামাঝি থাকতে নির্দেশ দিয়েছে। আল্লাহতায়ালা ইমানদার বান্দাদের বৈশিষ্ট্য প্রসঙ্গে বলেন, ‘তারা যখন ব্যয় করে, তখন অপব্যয় করে না এবং কৃপণতাও করে না; বরং তারা এতদুভয়ের মধ্যবর্তী অবস্থায় থাকে।’ সুরা ফুরকান ৬৭

সেই সঙ্গে লোক দেখানো ব্যয় না করা। সাধারণত মানুষ লোক দেখানোর জন্য প্রয়োজনের অতিরিক্ত ব্যয় করে, যা অপচয়ের শামিল। লৌকিকতা প্রদর্শনের জন্য সম্পদ ব্যয়কে ইসলাম অনুমোদন করে না। এ ছাড়া পরকালীন হিসাব-নিকাশের ভয় করা। অপচয়কারীদের সাহচর্য পরিহার করা এবং মৃত্যু সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করলে অপব্যয় ও অপচয় থেকে বিরত থাকা যায়।