হাওর বার্তা ডেস্কঃ ১৯০০ থেকে ১৯৩০ সাল পর্যন্ত পাট এদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখত। তারই ধারাবাহিকতায় ব্রিটিশ শাসনের পর ও পাকিস্তানের শুরুতে এদেশে প্রচুর পাটকল গড়ে ওঠে এবং রপ্তানি আয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে। সেই সময় পাটকে সোনালি আঁশ বলা হতো। কিন্তু পলিথিন আবিষ্কারের ফলে পাটের ব্যবহার কমে যায় ও অনেক পাটকল বন্ধ হয়ে যায়।
করোনাকালীন পরিবেশের বিষয়টি সামনে আসায় রাসায়নিক পণ্যের পরিবর্তে পাটের ব্যবহার বেড়ে যায় অভাবনীয় ভাবে। ফলে ২০২০-২১ অর্থবছরের ১০ সালেই (জুলাই-এপ্রিল) পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে ১০৩ কোটি ৫৬ লাখ ৭০ হাজার ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ (ইপিবি)। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩১ শতাংশ বেশি আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮ দশমিক ২ শতাংশ বেশি। আগে শুধু চট, বস্তা ও থলে তৈরিতে পাট ব্যবহূত হতো। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী পাটের বৈচিত্র্যময় ব্যবহার শুরু হয়েছে। ব্যাগ ও বস্তার বাইরে এখন পাট দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে জুতা, সান্ডেল, রুমাল, কাপড়, বিছানার চাদর, টুপিসহ বিভিন্ন শৌখিন সামগ্রী। এর বাইরেও বিভিন্ন আসবাব, তৈজসপত্র, পোশাক, শীতবস্ত্র, সোফা বিভিন্ন ধরনের কাগজ, হার্ডবোড তৈরিতেও পাট ব্যবহূত হচ্ছে। পরিবেশবান্ধব বলে বিশ্বব্যাপী এগুলোর চাহিদা বাড়ছে।
বিভিন্ন পণ্যের মোড়ক বা প্যাকেজিং করতে এখন পাটের ব্যবহার অনেক বেড়েছে। জানা গেছে, দেশের বস্ত্র কারখানাগুলোতে তুলার সঙ্গে পাট মিশিয়ে সুতা তৈরি হচ্ছে। সেই সুতা দিয়ে কাপড় তৈরি হচ্ছে। তাছাড়া পরিবেশগত কারণে পাটের তৈরি বস্তা কৃষিপণ্য প্যাকেজিংয়ে ব্যাপকভাবে ব্যবহূত হয়। তবে কৃষকরা পাটের ন্যায্যমূল্য যদি না পায়, তাহলে তারা হতাশ হয়ে পরবর্তী সময় পাট উত্পাদন কমিয়ে দিতে পারে। ফলে পাটশিল্পের সম্ভাবনা বিনষ্ট হবে। তাই বাংলাদেশের পাটের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে পাটচাষিদের ঋণ দিতে হবে।
অর্থনীতি বিভাগ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়