বঙ্গবন্ধুকে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌছে দিবে ‘মুজিব আমার পিতা’: পলক

হাওর বার্তা ডেস্কঃ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, বঙ্গবন্ধু ও তার জীবন সংগ্রামকে আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে পৌছে দিবে বাংলাদেশের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য ২ডি (টুডি) অ্যানিমেশন সিনেমা ‘মুজিব আমার পিতা’। রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বসুন্ধরা সিটিতে অবস্থিত স্টার সিনেপ্লেক্সে গণমাধ্যমের সামনে সিনেমাটির টেকনিক্যাল শো প্রদর্শনীর পরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

পলক বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর শৈশব, কৈশোর, তারুন্য, রাজনৈতিক দর্শন, পারিবারিক জীবন এবং তার কর্মজীবনের অন্যান্য দিক তুলে ধরার চেষ্টা করেছি বর্তমান এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা এবং তাদের জনপ্রিয় মাধ্যমে তুলে ধরা। এজন্যই আমরা মুজিব১০০.জিওভি.বিডি ওয়েবসাইট, বঙ্গবন্ধু অ্যাপ তৈরি করেছি। সেই কারণেই আজকে এই এনিমেশন সিনেমাটি প্রদর্শন করলাম, সেটিও তরুনদের কাছে বঙ্গবন্ধুকে পৌছানোর জন্য। কারণ, আমরা চাই তরুণরাও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হোক, তার আদর্শ ধারণ করে একটা দেশপ্রেমিক প্রজন্ম যেন নিজেদের জীবনেও সফল হয়।

পলক আরও বলেন, একটা মুলধারার চলচিত্র বানাতে কিন্তু অভিনেতা-অভিনেত্রী, শিল্পী, গায়ক, সাউন্ড, ক্যামেরা থাকলেই হয়। কিন্তু এনিমেশন সিনেমা বানাতে গিয়ে আমি দেখেছি মুলধারার চলচিত্র বানাতে প্রয়োজনীয় সব উপকরণের পাশাপাশি অতিরক্ত প্রয়োজন প্রযুক্তির ব্যবহার। সেই যায়গাতে আমাদের পরিচালক তার দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে এবং বাংলাদেশে যে মেধার কোন ঘাটতি নেই তার আরও একটা উদাহরণ আমাদের সোহেল।

অনুষ্ঠানে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) সমন্বয়ক তন্ময় আহমেদ বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মাঝে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তুলে ধরতে সরকার নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে এই চলচ্চিত্র নির্মাণ। মূলত বঙ্গবন্ধুর শৈশব থেকে শুরু করে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন পর্যন্ত সময়কে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছে চলচ্চিত্রটি। বঙ্গবন্ধুর জীবন সংগ্রাম থেকে যেন নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা অনুপ্রেরণা খুঁজে পায়, সেই চেষ্টাটি করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের এনিমেশন মার্কেটের উন্নয়ন বিষয়টা মাথায় নিয়েই আমরা তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগকে জানিয়েছিলাম আপনারা যদি কোন সুযোগ করে দেন তাহলেই বাংলাদেশে কয়েকটা বড় বড় স্টুডিও তৈড়ি হবে। সেই প্রয়াসের ফলেই আমাদের এই প্রোল্যান্সার স্টুডিও এবং মুজিব আমার পিতা সিনেমাটি’।

‘মুজিব আমার পিতা’ টুডি এনিমেশন সিনেমাটির পরিচালক সোহেল মোহাম্মদ রানা বলেন, ‘সিনেমাটি বানানোর আগে আমি যখন ব্যক্তিগতভাবে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গবেষণা করছিলাম তখন আমি বেশ কিছু লেখা বা প্রবন্ধ পড়েছি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর হাতে লেখা মুজিব আমার পিতা গল্পটি যখন আমি পড়ি। তখন আমার মনে হয় আমি বঙ্গবন্ধুকে আরও কাছ থেকে জানলাম’।

রানা বলেন, ‘আমরা যখন কাজ শুরু করেছিলাম, অনেকে বিশ্বাসই করতে পারেননি, বাংলাদেশে বসে ফিচার-লেংথ অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র নির্মাণ করা সম্ভব। কিন্তু আমরা বিশ্বাস হারাইনি। এই সিনেমাটি নির্মাণ করতে গিয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা হলো, এখনই হয়তো বিশ্বমানের অ্যানিমেশন বানানো সম্ভব নয়। তবে যাত্রাটা আমরা শুরু করেছি। ভবিষ্যতেও আমরা আপনাদেরকে এমন কিছু সিনেমা উপহার দিতে চাই’।

৪৮ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই সিনেমাটিতে তৈরিতে ২ কোটি টাকারও কম খরচ হয়েছে বলে জানা গেছে। যেখানে উন্নত বিশ্বের প্রতি সেকেন্ডের খরচ কয়েকহাজার টাকা, এমনকি মীনা কার্টুনের প্রতি সেকেন্ডের খরচ ১১ হাজারেরও বেশি,। সেখানে এই সিনেমাটিতে মাত্র ১০ হাজার টাকার মত খরচ হয়েছে বলে জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে আরও বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্সে হবে প্রিমিয়ার। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, চলচ্চিত্রটির পৃষ্ঠপোষক তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী প্রমুখ। ১ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তি পাবে এই সিনেমাটি, এরপর ধীরে ধীরে সারাদেশের সকল প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দেওয়া হবে।

অনুষ্ঠানে আরও জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লেখা বই ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’ অবলম্বনে তৈরি করা হয়েছে পূর্ণদৈর্ঘ্য দ্বিমাত্রিক (টু-ডি) অ্যানিমেশন সিনেমাটি। এটি নির্মাণে প্রায় দুই বছর সময় লেগেছে। গবেষণা ও চিত্রনাট্য প্রস্তুতের পর প্রোডাকশনের কাজ শুরু হয় গত বছরের জানুয়ারিতে। এক শর বেশি কলাকুশলীর শ্রমে নির্মিত হয়েছে ‘মুজিব আমার পিতা’।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর