ঢাকা ১১:৪৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাকে খুন করে দেহ পুঁতে সেই ঘরেই দু’বছর ধরে ছিলেন ছেলে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২৪:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • ১৫৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভারতের পশ্চিমঙ্গের বর্ধমানে জন্মদাতা মাকে খুন করে দেহ ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখার অভিযোগে ছেলেকে আটক করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, মেঝেতে মায়ের দেহ পুঁতে রেখে সেই ঘরের মধ্যেই দু’বছর ধরে বসবাস করছিল ছেলে। মাটির উপর থেকে ওই জায়গায় নিয়মিত ধূপধুনো দেখাত সে। আটককৃত যুবকের নাম শেখ নয়ন। পুলিশ জানায়, মৃত মায়ের নাম সুকরানা বিবি (৫৮)। তাঁর ছোট ছেলে নয়ন বছর দুয়েক আগে সুকরানা বিবির মাথায় মুগুর মেরে এবং শ্বাসরোধ করে তাঁকে খুন করে বলে অভিযোগ। তারপর প্রমাণ লোপাট করতে দেহ ঘরের নীচে পুঁতে দেয়। ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নয়নকে আটক করা হয়েছে। এ খবর প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান থানার হটুদেওয়ান পীরতলা ক্যানেলপাড় এলাকার বাসিন্দা নয়ন। তার বেড়াতে যাওয়ার নেশা ছিল। কিন্তু, সুকরানা বিবি ছেলের এই নেশা পছন্দ করতেন না। যদিও তার বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার বিষয়ে বারবার মা-কে নিষেধ করত নয়ন। কিন্তু মা শুনতেন না। সেই রাগেই বছর দুয়েক আগে নয়ন মা-কে খুন করে দেহ লোপাট করে দেয় বলে অভিযোগ। ২০১৯ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান সুকরানা বিবি। দিন দশেক পরেও মায়ের খোঁজ না পেয়ে ওই বছরের ২২ ফেব্রুয়ারী সুকরানার বড় ছেলে শেখ কিসমত আলি বর্ধমান থানায় একটি নিখোঁজ ডায়ারি করেন। যদিও সুকরানা বিবির হদিশ দিতে ব্যর্থ হয় পুলিশও। অবশেষে নয়নের স্ত্রী স্বামীর কার্যকলাপের কথা স্বীকার করে রহস্য ফাঁস করলেন।

পুলিশ সূত্রে খবর, স্বামীর সঙ্গে বিবাদের জেরে নয়নের স্ত্রী বাপেরবাড়ি এড়ুয়ারে থাকেন। তাঁদের বিবাদ মেটাতে নয়নের দাদা কিসমত আলি হস্তক্ষেপ করেন। সোমবার তিনি এড়ুয়ারে গিয়ে নয়নের স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে আসার চেষ্টা করেন। তখনই নয়নের স্ত্রী জানান, সুকরানা বিবিকে নয়ন খুন করে দেহ ঘরের মেঝেতে পুঁতে রেখেছে। যা শুনে স্তম্ভিত কিসমত আলি মঙ্গলবার সকালে ভাইকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। প্রতিবেশীদেরও ডাকা হয়। সকলের জেরার মুখে অবশেষে ভেঙে পড়ে মা-কে খুন করার কথা স্বীকার করে নয়ন। এরপর এলাকাবাসী বর্ধমান থানায় খবর দেন। কিসমত আলি ও এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে বর্ধমান থানার পুলিশ সুকরানা বিবির নিখোঁজের বিষয়ে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। নয়ন শেখকেও আটক করেছে। সুকরানা বিবির দেহের হদিশ পেতে বুধবার আদালতের অর্ডার নিয়ে নয়নদের বাড়ি খোঁড়া হবে বলে বর্ধমান থানার পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মাকে খুন করে দেহ পুঁতে সেই ঘরেই দু’বছর ধরে ছিলেন ছেলে

আপডেট টাইম : ১১:২৪:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভারতের পশ্চিমঙ্গের বর্ধমানে জন্মদাতা মাকে খুন করে দেহ ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখার অভিযোগে ছেলেকে আটক করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, মেঝেতে মায়ের দেহ পুঁতে রেখে সেই ঘরের মধ্যেই দু’বছর ধরে বসবাস করছিল ছেলে। মাটির উপর থেকে ওই জায়গায় নিয়মিত ধূপধুনো দেখাত সে। আটককৃত যুবকের নাম শেখ নয়ন। পুলিশ জানায়, মৃত মায়ের নাম সুকরানা বিবি (৫৮)। তাঁর ছোট ছেলে নয়ন বছর দুয়েক আগে সুকরানা বিবির মাথায় মুগুর মেরে এবং শ্বাসরোধ করে তাঁকে খুন করে বলে অভিযোগ। তারপর প্রমাণ লোপাট করতে দেহ ঘরের নীচে পুঁতে দেয়। ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নয়নকে আটক করা হয়েছে। এ খবর প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান থানার হটুদেওয়ান পীরতলা ক্যানেলপাড় এলাকার বাসিন্দা নয়ন। তার বেড়াতে যাওয়ার নেশা ছিল। কিন্তু, সুকরানা বিবি ছেলের এই নেশা পছন্দ করতেন না। যদিও তার বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার বিষয়ে বারবার মা-কে নিষেধ করত নয়ন। কিন্তু মা শুনতেন না। সেই রাগেই বছর দুয়েক আগে নয়ন মা-কে খুন করে দেহ লোপাট করে দেয় বলে অভিযোগ। ২০১৯ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান সুকরানা বিবি। দিন দশেক পরেও মায়ের খোঁজ না পেয়ে ওই বছরের ২২ ফেব্রুয়ারী সুকরানার বড় ছেলে শেখ কিসমত আলি বর্ধমান থানায় একটি নিখোঁজ ডায়ারি করেন। যদিও সুকরানা বিবির হদিশ দিতে ব্যর্থ হয় পুলিশও। অবশেষে নয়নের স্ত্রী স্বামীর কার্যকলাপের কথা স্বীকার করে রহস্য ফাঁস করলেন।

পুলিশ সূত্রে খবর, স্বামীর সঙ্গে বিবাদের জেরে নয়নের স্ত্রী বাপেরবাড়ি এড়ুয়ারে থাকেন। তাঁদের বিবাদ মেটাতে নয়নের দাদা কিসমত আলি হস্তক্ষেপ করেন। সোমবার তিনি এড়ুয়ারে গিয়ে নয়নের স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে আসার চেষ্টা করেন। তখনই নয়নের স্ত্রী জানান, সুকরানা বিবিকে নয়ন খুন করে দেহ ঘরের মেঝেতে পুঁতে রেখেছে। যা শুনে স্তম্ভিত কিসমত আলি মঙ্গলবার সকালে ভাইকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। প্রতিবেশীদেরও ডাকা হয়। সকলের জেরার মুখে অবশেষে ভেঙে পড়ে মা-কে খুন করার কথা স্বীকার করে নয়ন। এরপর এলাকাবাসী বর্ধমান থানায় খবর দেন। কিসমত আলি ও এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে বর্ধমান থানার পুলিশ সুকরানা বিবির নিখোঁজের বিষয়ে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। নয়ন শেখকেও আটক করেছে। সুকরানা বিবির দেহের হদিশ পেতে বুধবার আদালতের অর্ডার নিয়ে নয়নদের বাড়ি খোঁড়া হবে বলে বর্ধমান থানার পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন।