যে অপরাধে জেল খেটেছি, সে অপরাধ আবারও করব

হাওর বার্তা ডেস্কঃ যে অপরাধের কারণে জেল খেটেছি, সেই অপরাধ আবারও করবো। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবসময় আমি কথা বলবো। সেটা যদি অপরাধ হয়, সে অপরাধ আমি আবারও করবো।’

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের মামলায় খালাস পাওয়ার পর নিজের প্রতিক্রিয়ায়  একথা বলেন বর্ষীয়ান সাংবাদিক প্রবীর শিকদার।

এসময় প্রবীর শিকদার বলেন, ‘আজ থেকে ৬ বছর আগের স্মৃতি বড়ই যন্ত্রণার। আমার মতো একজন পঙ্গু মানুষ, যে ক্র্যাচ ছাড়া চলতে পারে না; তার হাতে হাতকড়া পরিয়ে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। আজ সেই মামলা থেকে আমি মুক্তি পেয়েছি। আনন্দ হচ্ছে। আমার এ মুক্তি, বিজয় একা আমার নয়। যারা সেসময় থেকে আজ পর্যন্ত আমার পাশে ছিলেন, এই জয় তাদের সবার।’

তিনি বলেন, ‘নিজের স্বার্থের জন্য নয়, নিজ জেলা ফরিদপুরের নির্যাতিত মানুষদের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে আজ আমার এই অবস্থা। যতদিন সুশাসন প্রতিষ্ঠা হবে না, ততদিন আমার এ লড়াই চলবে। আমি ফেসবুকে যে পোস্ট দিয়েছি, সে পোস্ট আছে-থাকবে। কেন সেই পোস্ট দিয়েছি, সেটা আমি আদালতকে বলেছি এবং পোস্ট ডিলিট না করে মামলা ফেস করেছি।’

প্রবীর শিকদার বলেন, ‘গণমানুষের কথা বলতে গিয়ে আমি জেল খেটেছি। অনেকে আমাকে বলেছেন ক্ষমা চাইতে, আপোষ করতে। আমি তা করিনি। আমি বিশ্বাস করি, আমি যা বলেছি, লিখেছি, তা সত্যি। আমার কথাতে-লেখাতে রিজিট ছিলাম বলেই আজ আমি মামলা থেকে খালাস পেয়েছি। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আমি।’

তিনি বলেন, ‘কারোরই মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করা উচিত না। অনেক প্রথিতযশা সাংবাদিকরা সেসময় আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণমাধ্যমে কথা বলেছেন। তাদের কেউ কেউ এমনও বলেছেন, আমি নাকি সাংবাদিক নই। সেসব শুনে কষ্ট পেয়েছি। তবে আজ আনন্দও হচ্ছে। আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে আইনী লড়াই করে জিতেছি।’

প্রবীর শিকদার বলেন, ‘সবাইকে সম্মিলিতভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বাতিলের জন্য সোচ্চার হতে হবে। এর অপপ্রয়োগে আমার মতো নিরপরাধ কেউ যেনো শাস্তি না পায়।’

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১৬ আগস্ট এ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন জেলা পূজা উদযাপন কমিটির উপদেষ্টা স্বপন পাল। ওই রাতেই গ্রেপ্তার হন প্রবীর শিকদার। পরে তাকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। ওই বছর ১৯ আগস্ট তিনি জামিনে মুক্তি পান।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, প্রবীর শিকদার ২০১৫ সালের ১০ আগস্ট ফেসবুকে তৎকালীন এলজিআরডিমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন। ওই স্ট্যাটাসে মন্ত্রীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর