ঢাকা ০৪:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অবশেষে খুলছে স্কুল-কলেজ-মাদরাসা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৪৫:৪২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • ১৫৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনাভাইরাস মহামারির কারণে প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই দীর্ঘ সময়ে শিক্ষার্থীরা ফিরতে পারেনি ক্লাসরুমে, পরীক্ষা ছাড়াই উঠেছে পরবর্তী শ্রেণিতে, এমনকি এইচএসসি’র মতো পরীক্ষাও নিতে পারেনি সরকার। পূর্ববর্তী পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে দেয়া হয়েছে ফলাফল। আর দফায় দফায় বাড়ানো হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি। এর মধ্যে সবকিছু স্বাভাবিক হলেও শুধু বন্ধ আছে স্কুল-কলেজ-মাদরাসা-বিশ্ববিদ্যালয়। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবি জানিয়ে আসছিল শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন মহল। বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা কর্মসূচিও পালন করছেন। দেড় বছর পর অবশেষে ঘোষণা আসল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার।

আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তিনি জানান, ১২ সেপ্টম্বর থেকেই সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তথা প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে পারব। স্কুল-কলেজগুলো খোলার জন্য আমরা আগেই প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি।

দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে গত বছরের ১৭ মার্চ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর কয়েক দফা চেষ্টা করেও পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি না হওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যায়নি, বরং দফায় দফায় ছুটি বাড়ানো হয়েছে। গত বছর এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের এসএসসি ও জেএসসির ফলাফলের গড় করে মূল্যায়ন ফল প্রকাশ করা হয়। তার ভিত্তিতেই তাদের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হচ্ছে। স্কুলের শিক্ষার্থীদেরও আগের রোলে পরের ক্লাসে তুলে দেওয়া হয়। এই সময়ে ঘরে বসে থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য অনলাইনে ক্লাসের ব্যবস্থা হলেও তাতে শিক্ষা কতটা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে সংশ্লিষ্টদের। এমন পরিস্থিতিতে এ বছরের এসএসসি-দাখিল ও এইচএসসি-আলিম পরীক্ষার্থীরাও দুশ্চিন্তায় ছিল। শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, আগের ঘোষণা অনুযায়ী পরীক্ষা হবে। নভেম্বরের মাঝামাঝি এসএসসি-দাখিল এবং ডিসেম্বরে এইচএসসি-আলিম পরীক্ষা নেয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ ২৬ অগাস্ট এক ঘোষণায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সেই ছুটি আর বাড়ানো হবে না বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের জানান। দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে নানা মহলের চাপের মধ্যে গত সপ্তাহে এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি বৈঠক হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বলেন, স্কুল-কলেজ দ্রুত খুলে দিতে তিনি সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন।

ওইদিন রাতেই করোনা-সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির বৈঠকে করোনার পজিটিভ এর হার কমে আসায় এবং টিকা প্রাপ্তি অনেকাংশে নিশ্চিত হওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পক্ষ মত দেন। বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা গণমাধ্যমকে বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে আসায় এবং টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত হওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে এখন কোন বাধা নেই। তবে, পরিস্থিতি বিবেচনা করে অবশ্যই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এরপর গতকাল শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ১২ সেপ্টেম্বরকে আমরা নির্ধারণ করেছি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও অ্যাসাইনমেন্ট প্রক্রিয়া চলমান থাকবে। তিনি বলেন, এরই মধ্যে বেশিরভাগ শিক্ষক করোনাভাইরাসের টিকা নিয়েছেন। ভবিষ্যতে ১২ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনার পরিকল্পনা সরকার করছে।

যেভাবে খুলবে স্কুল-কলেজ-মাদরাসা : দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর বন্ধের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হলেও শুরুতে একসঙ্গে সব শ্রেণির ক্লাস হবে না। ধাপে ধাপে বিভিন্ন শ্রেণির ক্লাস হবে। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, প্রথমে হয়তো এ বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং আগামী বছরের পরীক্ষার্থী প্রতিদিনই ক্লাস করবে। বাকি শ্রেণির ক্লাস হয়তো গোড়াতে এক দিন করে হবে। পরে অবস্থা বুঝে ধীরে ধীরে তা বাড়ানো হবে। একই সঙ্গে অনলাইন ও টেলিভিশনের ক্লাসও চলবে।

১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রস্তুতির নির্দেশ : দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেহাল দশা। অনেক প্রতিষ্ঠানের মাঠ জঙ্গলে রূপ নিয়েছে, টেবিল-চেয়ার, বেঞ্চে জমেছে ধুলার আস্তরণ। দরজা-জানালাও এই দেড় বছরে খোলা হয়নি কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে। কমন রুম, টয়লেটসহ ভবনের ফ্লোর, দেয়ালেও রয়েছে অযতœ আর অবহেলার চিত্র। এমন চিত্রের কথা স্বীকার করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ময়লা হয়ে গেছে। ক্লাসরুমের বেঞ্চগুলো সাজানো নেই। এসব বিষয়গুলো সমাধানে আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো দ্রæত ব্যবস্থা নেবে। আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১১ তারিখ পর্যন্ত বন্ধ। এই সময়ের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সকল কাজ সম্পন্ন করতে পারবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে আইসোলেশন সেন্টার, সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ পরিষ্কারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

প্রস্তুতির বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের সকল রকম প্রস্তুতি রয়েছে। স্কুল খুলে দেয়ার পর দৈনিক বাধ্যতামূলক প্রতিবেদন প্রেরণ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যাতে খুব কঠোরভাবে আমরা মনিটরিং করতে পারি। স্কুলগুলোতে যাতে সকলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে।

বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত নিজেদের : প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে স্কুল-কলেজ-মাদরাসা খুলে দেয়ার ঘোষণা দেয়া হলেও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে আবারও বসব। রোববার আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠক আছে। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল নেয়। আমরা এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভিসিদের সাথে বসেছি। তারা চেয়েছিলেন অন্তত; বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী যাতে প্রথম ডোজ টিকা নিয়ে নিতে পারে, তাহলে ভালো হয়। এজন্য আমরা অক্টোবরের মাঝামাঝি একটা তারিখ নির্ধারণ করেছিলাম। এখন আবারও উনাদের সাথে আমরা কথা বলব। উনারা যদি তার আগেই অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাথেই খুলতে চায় তাহলে খুলতে পারেন। কিংবা যদি ভিন্ন কোনো তারিখ নির্ধারণ করেন সেটাও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বিষয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

অবশেষে খুলছে স্কুল-কলেজ-মাদরাসা

আপডেট টাইম : ০৯:৪৫:৪২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনাভাইরাস মহামারির কারণে প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই দীর্ঘ সময়ে শিক্ষার্থীরা ফিরতে পারেনি ক্লাসরুমে, পরীক্ষা ছাড়াই উঠেছে পরবর্তী শ্রেণিতে, এমনকি এইচএসসি’র মতো পরীক্ষাও নিতে পারেনি সরকার। পূর্ববর্তী পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে দেয়া হয়েছে ফলাফল। আর দফায় দফায় বাড়ানো হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি। এর মধ্যে সবকিছু স্বাভাবিক হলেও শুধু বন্ধ আছে স্কুল-কলেজ-মাদরাসা-বিশ্ববিদ্যালয়। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবি জানিয়ে আসছিল শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন মহল। বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা কর্মসূচিও পালন করছেন। দেড় বছর পর অবশেষে ঘোষণা আসল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার।

আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তিনি জানান, ১২ সেপ্টম্বর থেকেই সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তথা প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে পারব। স্কুল-কলেজগুলো খোলার জন্য আমরা আগেই প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি।

দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে গত বছরের ১৭ মার্চ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর কয়েক দফা চেষ্টা করেও পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি না হওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যায়নি, বরং দফায় দফায় ছুটি বাড়ানো হয়েছে। গত বছর এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের এসএসসি ও জেএসসির ফলাফলের গড় করে মূল্যায়ন ফল প্রকাশ করা হয়। তার ভিত্তিতেই তাদের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হচ্ছে। স্কুলের শিক্ষার্থীদেরও আগের রোলে পরের ক্লাসে তুলে দেওয়া হয়। এই সময়ে ঘরে বসে থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য অনলাইনে ক্লাসের ব্যবস্থা হলেও তাতে শিক্ষা কতটা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে সংশ্লিষ্টদের। এমন পরিস্থিতিতে এ বছরের এসএসসি-দাখিল ও এইচএসসি-আলিম পরীক্ষার্থীরাও দুশ্চিন্তায় ছিল। শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, আগের ঘোষণা অনুযায়ী পরীক্ষা হবে। নভেম্বরের মাঝামাঝি এসএসসি-দাখিল এবং ডিসেম্বরে এইচএসসি-আলিম পরীক্ষা নেয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ ২৬ অগাস্ট এক ঘোষণায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সেই ছুটি আর বাড়ানো হবে না বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের জানান। দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে নানা মহলের চাপের মধ্যে গত সপ্তাহে এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি বৈঠক হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বলেন, স্কুল-কলেজ দ্রুত খুলে দিতে তিনি সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন।

ওইদিন রাতেই করোনা-সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির বৈঠকে করোনার পজিটিভ এর হার কমে আসায় এবং টিকা প্রাপ্তি অনেকাংশে নিশ্চিত হওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পক্ষ মত দেন। বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা গণমাধ্যমকে বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে আসায় এবং টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত হওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে এখন কোন বাধা নেই। তবে, পরিস্থিতি বিবেচনা করে অবশ্যই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এরপর গতকাল শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ১২ সেপ্টেম্বরকে আমরা নির্ধারণ করেছি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও অ্যাসাইনমেন্ট প্রক্রিয়া চলমান থাকবে। তিনি বলেন, এরই মধ্যে বেশিরভাগ শিক্ষক করোনাভাইরাসের টিকা নিয়েছেন। ভবিষ্যতে ১২ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনার পরিকল্পনা সরকার করছে।

যেভাবে খুলবে স্কুল-কলেজ-মাদরাসা : দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর বন্ধের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হলেও শুরুতে একসঙ্গে সব শ্রেণির ক্লাস হবে না। ধাপে ধাপে বিভিন্ন শ্রেণির ক্লাস হবে। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, প্রথমে হয়তো এ বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং আগামী বছরের পরীক্ষার্থী প্রতিদিনই ক্লাস করবে। বাকি শ্রেণির ক্লাস হয়তো গোড়াতে এক দিন করে হবে। পরে অবস্থা বুঝে ধীরে ধীরে তা বাড়ানো হবে। একই সঙ্গে অনলাইন ও টেলিভিশনের ক্লাসও চলবে।

১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রস্তুতির নির্দেশ : দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেহাল দশা। অনেক প্রতিষ্ঠানের মাঠ জঙ্গলে রূপ নিয়েছে, টেবিল-চেয়ার, বেঞ্চে জমেছে ধুলার আস্তরণ। দরজা-জানালাও এই দেড় বছরে খোলা হয়নি কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে। কমন রুম, টয়লেটসহ ভবনের ফ্লোর, দেয়ালেও রয়েছে অযতœ আর অবহেলার চিত্র। এমন চিত্রের কথা স্বীকার করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ময়লা হয়ে গেছে। ক্লাসরুমের বেঞ্চগুলো সাজানো নেই। এসব বিষয়গুলো সমাধানে আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো দ্রæত ব্যবস্থা নেবে। আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১১ তারিখ পর্যন্ত বন্ধ। এই সময়ের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সকল কাজ সম্পন্ন করতে পারবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে আইসোলেশন সেন্টার, সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ পরিষ্কারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

প্রস্তুতির বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের সকল রকম প্রস্তুতি রয়েছে। স্কুল খুলে দেয়ার পর দৈনিক বাধ্যতামূলক প্রতিবেদন প্রেরণ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যাতে খুব কঠোরভাবে আমরা মনিটরিং করতে পারি। স্কুলগুলোতে যাতে সকলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে।

বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত নিজেদের : প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে স্কুল-কলেজ-মাদরাসা খুলে দেয়ার ঘোষণা দেয়া হলেও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে আবারও বসব। রোববার আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠক আছে। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল নেয়। আমরা এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভিসিদের সাথে বসেছি। তারা চেয়েছিলেন অন্তত; বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী যাতে প্রথম ডোজ টিকা নিয়ে নিতে পারে, তাহলে ভালো হয়। এজন্য আমরা অক্টোবরের মাঝামাঝি একটা তারিখ নির্ধারণ করেছিলাম। এখন আবারও উনাদের সাথে আমরা কথা বলব। উনারা যদি তার আগেই অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাথেই খুলতে চায় তাহলে খুলতে পারেন। কিংবা যদি ভিন্ন কোনো তারিখ নির্ধারণ করেন সেটাও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বিষয়।